শেষ আপডেট: 1st January 2025 17:48
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বর্ষবরণের রাতে সপরিবারে আগ্রা থেকে লখনউ গিয়েছিলেন। সেখানেই হোটেলে মা ও চার বোনকে খুন করেন যুবক। সেই হাড়হিম করা ঘটনায় উঠে এল চাঞ্চল্যকর তথ্য। গোটা ঘটনার বিস্তারিত বিবরণ দিয়ে একটি ভিডিও রেকর্ড করেন যুবক। যা হাতে পেয়েছে পুলিশ। সেখান থেকেই জানা গেল খুনের কারণও।
উত্তরপ্রদেশের বুঁদাও এলাকায় থাকত আরশাদের পরিবার। শেষ কিছুদিন ধরে ওই বাড়ি দখলের চেষ্টা করছে প্রতিবেশীরা, ভিডিওতে তিনি এমনই অভিযোগ করেন। তাঁদের বাড়িও নাকি 'দখল' করে নেন আশপাশের লোকজন। পরিবারকে নিয়ে রাস্তায়, ফুটপাতে শুতে হয় আরশাদকে। বোনেদের বেচে দিতে পারে সেখানকার দুষ্কৃতীরা। সেই ভয়তেই বোনদের নিজে হাতে খুন করেন ২৪ বছর বয়সী ওই যুবক।
ভিডিওতে অভিযুক্ত বলেন, 'আমার পরিবার এমন সিদ্ধান্তে এসেছে, এই পরিস্থিতির মুখে দাঁড়িয়ে, এর জন্য পুরোপুরি দায়ী প্রতিবেশীরা। পুলিশের কাছে যখন এই ভিডিও পৌঁছবে তখন তারা জানতে পারবেন, ঠিক কী কী হয়েছে আমাদের সঙ্গে। শেষ ১৫ দিন ধরে আমরা রাস্তায় ঘুমাচ্ছিলাম। এই ঠান্ডায়। আমরা চাইছিলাম না বাড়ির বাচ্চারাও এই জঘন্য পরিস্থিতি সহ্য করুক। এই ঠান্ডায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াক। আমাদের বাড়ি দখল হয়েছে। সমস্ত তথ্য আমার কাছে রয়েছে।'
তিনি ভিডিওতে আরও জানান, যারা তাঁর বাড়ি দখলের চেষ্টা করছিল। তাঁরা মানব পাচারের সঙ্গেও যুক্ত। ফলে বোনদের পাচার করে দিতে পারত যখন তখন। সেসব থেকে বোনদের বাঁচাতে ও মাকে বাঁচাতে এই সিদ্ধান্ত নেন তিনি ও তাঁর বাবা। এই খুনে তাঁর বাবাও তাঁকে সাহায্য করেছেন বলে জানান ভিডিওতে।
বাড়ি দখল ও অত্যাচার নিয়ে প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন তাঁরা। কিন্তু কোনও ফল পাননি। কেউ সাহায্য করেনি, এমন অভিযোগও ভিডিওতে তোলেন আরশাদ। জানান, 'আমরা বহু লোকের কাছে গেছি বিষয়টা নিয়ে কিন্তু কোনও সুরাহা হয়নি। তারপরই আমি ও বাবা খুন করে ওদের সম্মান বাঁচাই। কী করতাম, ওদের হায়দরাবাদে বিক্রি হয়ে যেতে দেখতাম? আজ ওরা মরছে, কাল আমিও মরে যাব আমি হাত জোড় করে প্রার্থনা করছি বিচার এনে দিন।'
প্রধানমন্ত্রী ও উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের কাছে বিচারের আবেদন জানান তিনি।
পুলিশ আরশাদকে গ্রেফতার করেছে। হোটেল থেকে দেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠিয়েছে। হাতের ধমনী কেটে খুন করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে ভিডিও থেকেই। আরশাদকে জিজ্ঞাসাবাদ করছেন তদন্তকারী আধিকারিকরা।
এই ভিডিও সামনে আসার পর গোটা ঘটনার মোড় ঘুরে গিয়েছে বলে মনে করছে পুলিশ।