বিক্রমের মৃত্যুর পর ফের সামনে এল বেআইনি সুদে ঋণ দেওয়ার ভয়াবহ দিক। তামিলনাড়ু ও পুদুচেরিতে দীর্ঘদিন ধরেই অবৈধ মহাজনী প্রথার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে।
বিক্রম
শেষ আপডেট: 4 July 2025 07:45
দ্য ওয়াল ব্যুরো: অসম্ভব সুদের চাপ, মহাজনদের নোংরা প্রস্তাব সহ্য করতে না পেরে আত্মঘাতী হলেন এক ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী। পুদুচেরির ঘটনা। ৩৩ বছরের বিক্রম আত্মহত্যার আগে সুইসাইড নোটে সমস্ত সমস্যার বর্ণনা করেছেন। একাধিক মহাজনের নাম উল্লেখ করেছেন সেখানে। অভিযোগ, এক মহাজন তো তাঁকে না কি বলেই বসেছিলেন, দেনা না মেটাতে পারলে স্ত্রী ও মেয়েকে তাঁর বাড়ি পাঠাতে।
বিক্রম এক জন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ছিলেন। পাশাপাশি একটি চিকেন শপে কাজ করতেন সংসার চালানোর জন্য। কিছুদিন আগে দুর্ঘটনায় মারাত্মকভাবে জখম হন। এরপর থেকেই কার্যত শয্যাশায়ী ছিলেন। আয় নেই, উল্টে খরচা। কিস্তি ও সুদের বোঝা পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে। ঋণ মেটাতে না পারায় প্রায় দিনই মহাজনদের চাপ, হুমকি ও অপমান সহ্য করতে হচ্ছিল।
বিক্রমের সুইসাইড নোট থেকে জানা যাচ্ছে, ৩.৮ লক্ষ টাকার ঋণের জন্য তাঁকে প্রতি মাসে ৩৮ হাজার টাকা সুদ দিতে হত, যা প্রায় ১০ শতাংশ মাসিক সুদের হার। আর এক মহাজন ৩০ হাজার টাকার ঋণের জন্য প্রতি মাসে ৬ হাজার টাকা দাবি করতেন।
দুর্ঘটনার পর তাঁর চলাফেরা একেবারে বন্ধ হয়ে যায়। ওই অবস্থাতেই পরিস্থিতি খারাপ হতে শুরু করে। তাঁর পরিবার ভয়ঙ্কর আর্থিক সঙ্কটে পড়ে। এমন পরিস্থিতিতে একজন না কি প্রস্তাব দিয়ে বসেন, বাড়িতে স্ত্রী ও মেয়েকে পাঠাতে। যা শুনে একেবারেই ভেঙে পড়েন বিক্রম। ঘটনার পর পুদুচেরি পুলিশ বিক্রমের চিঠিতে উল্লেখ করা মহাজনদের শনাক্ত করার চেষ্টা শুরু করেছে। এখনও পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হয়নি।
জানা যাচ্ছে, রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তিনি। করতেন অভিনেতা বিজয়ের নতুন রাজনৈতিক দল ‘তামিলগা ভেট্ট্রি কাজাগাম।’ সুইসাইড নোটে বিজয়ের উদ্দেশে একটি আবেগঘন অনুরোধ রেখে গিয়েছেন বিক্রম। স্ত্রী ও মেয়ের দায়িত্ব নেওয়ার আবেদন করেছেন।
বিক্রমের মৃত্যুর পর ফের সামনে এল বেআইনি সুদে ঋণ দেওয়ার ভয়াবহ দিক। তামিলনাড়ু ও পুদুচেরিতে দীর্ঘদিন ধরেই অবৈধ মহাজনী প্রথার বিরুদ্ধে অভিযোগ উঠছে। কিন্তু প্রশাসন সেভাবে কোনও পদক্ষেপই করেনি। যার ফলে এমন ঘটনা ঘরে ঘরে হতে পারে বলে আশঙ্কা করেন অনেকে।