শেষ আপডেট: 25th September 2024 12:47
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মা-কে ধর্ষণ করায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হল এক ব্যক্তির। জরিমানা ৫১ হাজার টাকা। ঘটনাটি উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহরের। ব্যক্তি চক্রান্তের অভিযোগ তুললেও কোনও প্রমাণ পা মেলায় তা খারিজ হয় ও আদালত এই রায় দেয়।
গত বছর জানুয়ারি মাসের ১৬ তারিখ। জোর করে মাঠে নিয়ে গিয়ে এক প্রৌঢ়াকে ধর্ষণ করা হয়। অভিযুক্ত তাঁর নিজের ছেলে। প্রৌঢ়া বিষয়টি নিয়ে লজ্জায় কাউকে কিছু না বললেও পরে নিজের আরেক ছেলে ও ভাইঝিকে বলেন। তারপরই অভিযুক্তর ভাই পুলিশে বিষয়টি জানান ও মামলা দায়ের করেন।
আদালতে এই মামলার শুনানি চলাকালীন কান্নায়, লজ্জায় ভেঙে পড়েন প্রৌঢ়া। আদালতে জানান, একদিন হঠাৎ তাঁকে জোর করে মাঠে নিয়ে যায় অভিযুক্ত। সেখানে বিভিন্ন রকম ভাবে মা-কে সঙ্গমের জন্য জোর দিতে থাকে। প্রৌঢ়া বাধা দেওয়ায় তাঁকে ধর্ষণ করা হয়। তাঁর বয়স হয়েছে, তাই সেকথা জানিয়ে ছেলের হাতে পারে ধরলেও নিস্তার মেলেনি।
প্রৌঢ়া আদালতে আরও জানান, এখানেই শেষ নয়। তাঁর ছেলে তাঁকে রোজ রাতে সঙ্গমের জন্য জোর করতে থাকে। স্বামী হারা এই প্রৌঢ় বিষয়টি সহ্য করতে না পেরে আরেক ছেলে ও ভাইঝিকে জানান।
তারপরই পুলিশে খবর দেন অভিযুক্তর ভাই। পুলিশকে কাঁদতে কাঁদতে প্রৌঢ় বার বার বলেছিলেন, 'আমার ছেলে আমাকে ধর্ষণ করেছে।'
ঘটনা সামনে আসতেই নিন্দার ঝড় উঠেছে বিভিন্ন মহলে। অভিযুক্তের বিকৃত মানসিকতা নিয়ে বিরক্তি প্রকাশ করেছেন অনেকেই। সরকার পক্ষের আইনজীবী বিজয় কুমার শর্মা এই ঘটনা শোনার পর স্তম্ভিত। তিনিই খোলসা করেন প্রৌঢ়ের বর্তমান মানসিক অবস্থার কথা। বলেন, 'পুলিশকে কাঁদতে কাঁদতে প্রৌঢ় বার বার বলেছিলেন, আমার ছেলে আমাকে ধর্ষণ করেছে।' তারপরই তিনি বলে ফেলেন, এমন ঘৃণ্য অপরাধ নিজের কর্মজীবনে আগে দেখেননি।
চিকিৎসকরা প্রৌঢ়ার শারীরিক পরীক্ষা করে কোনওরকম আঘাতের চিহ্ন পায়নি। তাই তাঁকে যে শারীরিক ভাবে নির্যাতন করা হয়েছে, তার কোনও প্রমাণ মেলেনি। কিন্তু আদালত জানিয়ে দেয়, কোনও প্রমাণ না মিললেও এটা ধরে নেওয়া যাবে না, যে একজন ৬০ বছরের মহিলার উপর এমন অমানবিক অত্যাচার হয়নি বা তিনি স্রেফ বানিয়ে বলছেন।
সুপ্রিম কোর্টের একটি রায়কে উদ্ধৃত করে আদালত জানায়, যদি কোনও নির্যাতিতা বলেন, তাঁকে জোর করে সঙ্গমে বাধ্য করা হয়েছে তাহলে তাঁর অভিযোগ গ্রহণ করা হবে। এরপরই অভিযুক্তের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের কথা ঘোষণা করে আদালত। খারিজ হয়ে যায় অভিযুক্তর আত্মপক্ষ সমর্থনের যাবতীয় যুক্তি।
ধর্ষণ ছাড়াও অপরাধমূলক কাজে যুক্ত থাকার জন্য অভিযুক্তকে ১ বছরের অতিরিক্ত জেল ও এক হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে।