দ্য ওয়াল ব্যুরো: লোকসভা ভোটের আগে গত ২০ ডিসেম্বর দিল্লিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বাংলার বকেয়া পাওনার ব্যাপারে নিষ্পত্তির জন্য ওই বৈঠকে একটি প্রস্তাব দিয়েছিলেন মোদী। অথচ গত ৬ মাসে কাজের কাজ কিছু হয়নি। এ বার দিল্লি সফরে গিয়ে ফের সেই ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে পারেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।

সূত্রের খবর, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সময় চেয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ের তরফে চিঠি পাঠানো হয়েছে সাউথ ব্লকে। প্রধানমন্ত্রীর সচিবালয় অবশ্য এখনও সময় জানায়নি। তবে মনে করা হচ্ছে, মুখ্যমন্ত্রীর দিল্লি সফরকালে সেই সময় দেবে সাউথ ব্লক। 

নীতি আয়োগের গভর্নিং কাউন্সিলের নবম বৈঠক হবে ২৭ জুলাই। দিল্লিতে ওই বৈঠকের পৌরহিত্য করবেন প্রধানমন্ত্রী। সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকে বৈঠকে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও এবার সেই বৈঠকে যোগ দিতে পারেন। এ জন্য ২৫ জুলাই দিল্লি সফরে যাওয়ার কথা মুখ্যমন্ত্রীর। কলকাতায় ফেরার কথা ২৮ জুলাই। সূত্রের খবর, নীতি আয়োগের বৈঠকের আগে বা পরে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাতের সময় চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। 

আরও একবার দেশের প্রধানমন্ত্রী পদে নির্বাচিত হয়েছেন নরেন্দ্র মোদী। তাঁর সঙ্গে রাজনৈতিক মতাদর্শের যাই ফারাক থাকুক, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোর ধারা হল হল নতুন সরকার গঠনের পর প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করা। রাজ্যের দরকারের বিষয়আশয় তাঁকে জানানো। 

বাংলার ক্ষেত্রে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বড় চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে বকেয়া পাওনার বিষয়টি। সেই অঙ্কের বহর খুব কম নয়। রাজ্যের হিসাবে তা ১ লক্ষ কোটি টাকার বেশি। শুধু একশ দিনের কাজ আর আবাস যোজনা মিলিয়ে বকেয়া পাওনার অঙ্ক প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকা। শুধু তা নয়, বাংলায় একশ দিনের কাজ কর্মসূচি বন্ধ হয়ে পড়ে আছে। রাজ্য সরকার নিজের সাধ্যমতো যতটা পারছে কাজ দিচ্ছে। কিন্তু কেন্দ্র এই খাতে আর ১ টাকাও বরাদ্দ করছে না। পর্যবেক্ষকদের অনেকের মতে, এটা মোটেই সুস্থ ব্যবস্থা নয়। একশ দিনের কাজ প্রকল্পে এর আগে দুর্নীতির অভিযোগ থাকলেও, নতুন কাজে টাকা না দেওয়াটা একেবারেই কোনও কেন্দ্রীয় সরকারের অবস্থান হতে পারে না। এই অবস্থান ষোল আনা জনবিরোধী। 

তাৎপর্যপূর্ণ হল, এরই মধ্যে আবার গত ১২ জুলাই দিল্লিতে গিয়ে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামনের সঙ্গে দেখা করেছেন রাজ্যের বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। বাজেটের আগে নির্মলা যেভাবে শুভেন্দুকে সময় দিয়েছেন তা অনেকে তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন। অনেকের ধারণা, বাংলার প্রতি কেন্দ্রের আর্থিক অনুদান ও বরাদ্দ আটকাতে এখনও মরিয়া রাজ্য বিজেপি। কারণ, তাঁরা মনে করছে, প্রশাসনিক ভাবে তৃণমূল সরকার ব্যর্থ হলে তাঁদের রাজনৈতিক সুবিধা হতে পারে। সার্বিক এই পরিস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার সময় চেয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী।