শেষ আপডেট: 7th January 2025 19:19
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বারোটায় অফিস ঢোকা, দুপুর দু’টোয় ঘড়ি মেপে টিফিন বা তিনটে বাজলেই চেয়ার ছেড়ে বাড়ি যাওয়ার তোরজোড় শুরু- এসব কথা উঠলে প্রথমেই সরকারি চাকুরেদের মুখ চোখের সামনে ভেসে ওঠে। শিল্পী নচিকেতা চক্রবর্তীর ‘সরকারি কর্মচারী’ গানে সেই প্রসঙ্গ আগেই উঠে এসেছে।
বাস্তবেও যে সরকারি কর্মচারীদের কাজের ধরন নিয়ে সাধারণ মানুষের কোনও অভিযোগ নেই সে কথা বলা মুশকিল। কিন্তু এমন অনেক কর্মী আছেন, যারা মনে করেন আগে কাজ, পরে অন্য সবকিছু। কাজকেই ধ্যানজ্ঞান মনে করেন। চাকরি জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত সব দায়িত্ব নিষ্ঠাভরে পালন করে খবরের শিরোনামে উঠে এলেন এক সরকারি চাকুরে।
মধ্যপ্রদেশের ঝাঁসির সিনিয়র ডিভিশনাল অপারেশন ম্যানেজার, নাম রামেশ্বরম। বয়স ষাট পেরিয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই কর্মজীবনকে গুডবাই জানাতেই হত। কিন্তু যতদিন কাজ করছেন, কাজের সঙ্গে আপোষের কথা কখনও ভাবেননি। সংস্থার জন্য অবসরের দিনেও সমান দায়িত্বের সঙ্গে কাজ করেছেন। যা সহকর্মীদের রীতিমতো অনুপ্রেরণা জোগায়।
অবসরগ্রহণের দিনও নিজের দায়িত্ব ভোলেননি রামেশ্বরম। সোশ্যাল মিডিয়ায় সে সংক্রান্ত একটি পোস্ট করে রীতিমতো তাক লাগিয়েছেন, ওই ডিভিশনের রেলওয়ে আইআরটিএস অফিসার সঞ্জয় কুমার। তিনি এক্স হ্যান্ডেলে লেখেন, এমন একজন মানুষের সঙ্গে আলাপ না হলে বুঝতেই পারতাম না একজন মানুষ কাজের জন্য ঠিক কতখানি নিজেকে উৎসর্গ করতে পারেন।
তিনি তাঁর পোস্টে পরিষ্কার জানিয়েছেন, ‘উনি এমনই একজন মানুষ, যিনি তাঁর কর্মজীবনে কারও থেকে এক কাপ চা গ্রহণ করেননি। অবাক করা বিষয় হল, অবসরগ্রহণের আগের দিন কনকনে ঠাণ্ডাকে ভুলে সবার অজান্তে অফিসেই রাত কাটিয়েছেন তিনি। ঘড়ির কাঁটা মেপে পরদিন ভোর সকালে উঠে পুরো অফিস ঝাড়ু মেরে পরিষ্কার করেছেন।’
It was his last day,slept in office in chilly winter without anyone's knowledge. Got up at 5 since wanted to clean the office before his farewell.Not even accepted tea from anyone during his entire service.Yes he is a govt employee & we are indebted to him. pic.twitter.com/0g57FXVGGo
— J.Sanjay Kumar,IRTS (@Sanjay_IRTS) January 4, 2025
সঞ্জয় কুমার লেখেন, ‘হ্যাঁ, তিনি একজন সরকারি কর্মচারী। আমরা তাঁর অবদানের জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই।’ পোস্টটি ভাইরাল হতে বেশি সময় লাগেনি। বিষয়টি নজরে আসতেই নেট দুনিয়ায় কমেন্টের বন্যা বইতে শুরু করে। একজন লেখেন, ‘আজকাল এমন ব্যক্তি খুঁজে পাওয়া বিরল। তাঁর জন্য অনেক শুভকামনা রইল।’ আরেকজন লেকেহেন, ‘কাজের প্রতি নিষ্ঠা থাকলে সবকিছুই সম্ভব উনি তার প্রমাণ দিলেন।’
তবে একজন অফিসার হয়ে সাফাইকর্মীর এমন প্রচেষ্টাকে সবার সামনে তুলে ধরার জন্য কম প্রশংসা পাননি আইটিএস অফিসার সঞ্জয়। একজন লেখেন, এমন একজন সৎ কর্মীকে দেখতে পাওয়া যেমন খুব বিরল তেমনই আপনার মতো ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা সাধারণ একজন কর্মীর হয়ে এতটা প্রশংসা করছেন তেমনটাও আজকাল দেখতে পাওয়া যায় না।