Advertisement
ভাইরাল ভিডিওর ছবি (ডানদিকে) সাক্ষাৎকারে সাজাদ
Advertisement
শেষ আপডেট: 24 April 2025 18:23
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ২২ এপ্রিল, বৈসরন উপত্যকার শান্ত আবহে হঠাৎই ছন্দপতন- জঙ্গিদের গুলির শব্দে কেঁপে ওঠে পহেলগামের ‘মিনি সুইৎজারল্যান্ড’। আতঙ্কের ঠিক সেই মুহূর্তে, জীবনের এক সুন্দর মুহূর্তের ছবি ধরা পড়ে কোনও পর্যটকের ক্যামেরায়- এক স্থানীয় হকার নিজের পিঠে করে আহত এক পর্যটককে নিয়ে যাচ্ছেন। ভিডিওটি মুহূর্তে ভাইরাল হয়ে যায়। সেই সাহসী যুবক হলেন সাজাদ আহমদ ভাট, পেশায় শাল বিক্রেতা।
‘ধর্ম নয়, মানবতা আগে’, সর্বভারতীয় এক সংবাদসংস্থাকে সাক্ষাৎকারে দেওয়ার সময় গলা ভারী হয়ে আসে সাজাদের। জানালেন, পহেলগাম পোনি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতির কাছ থেকে একটি হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে মেসেজ আসে, সেখান থেকেই তাঁরা সবাই জানতে পারেন যে উপত্যকায় হামলা হয়েছে। সঙ্গে সঙ্গেই অন্যান্য স্থানীয়দের সঙ্গে তিনিও ছুটে যান ঘটনাস্থলে।
#WATCH | Pahalgam, J&K | In a viral video on social media, Sajad Ahmad Bhat, a shawl hawker from Pahalgam, can be seen carrying a tourist injured in the #PahalgamTerroristAttack to safety on his back.
— ANI (@ANI) April 24, 2025
He says, "... The Pahalgam Poney Association president, Abdul Waheed Wan,… pic.twitter.com/cBNTFu3LDA
‘আমরা বিকেল তিনটে নাগাদ সেখানে পৌঁছই। আহতদের জল দিই, যাঁরা হাঁটতে পারছিলেন না, তাঁদের কাঁধে তুলে হাসপাতালে নিয়ে যাই। পর্যটকদের কান্না দেখে আমার চোখেও জল এসে গিয়েছিল। ওঁরা এখানে আসলে তবেই তো আমাদের ঘরে আলো জ্বলে ওঠে- ওঁরা ছাড়া আমাদের জীবন অসম্পূর্ণ।’
পহেলগাম পোনি অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবদুল ওয়াহিদ ওয়ানের কথায়, ‘ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখি একেবারে হাহাকার পড়ে গেছে চারদিকে। কখনও ভাবিনি এমন কিছু দেখতে হবে কোনওদিন, বিশ্বাস করতে পারছিলাম না চোখের সামনে কী দেখছি। আমরা আহতদের পিঠে করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। কী করব বুঝে উঠতে পারছিলাম না, মাথা কাজ করছিল না। চারদিকে মহিলাদের কান্নার আওয়াজ, তাঁদের শান্ত করার চেষ্টা করছিলাম।’
ওয়াহিদ জানান, এই ঘটনায় স্থানীয়দের কেউ জড়িত নন। এই হামলা মানসিকভাবে ভেঙে দিয়েছে গোটা কাশ্মীরের মানুষকে। তিনি বলেন, ‘আমাদের রুজিরুটি শেষ। আমাদেরও ইচ্ছে হয় যে আমাদের সন্তানরা ভাল শিক্ষা পাক, শান্তিতে বাঁচুক। যারা এই জঘন্য কাজ করেছে, তাদের কঠোরতম শাস্তি হওয়া উচিত। এই ঘটনায় আমরা একেবারে ভেঙে পড়েছি।’
সাজাদ ও ওয়াহিদ, দু’জনেই জানালেন, সেই সময় তাঁদের একমাত্র চিন্তা ছিল আহতদের কীভাবে সাহায্য করা যেতে পারে। সাজাদের মতোই ওয়াহিদেরও এক কথা, ‘মানবতা আগে। আমরা ঝুঁকি নিয়ে এগিয়ে গিয়েছিলাম, কারণ মানুষ হিসেবে সেটাই ছিল আমাদের প্রথম কাজ। সেটাই আমাদের পরিচয়।’
Advertisement
Advertisement