শেষ আপডেট: 31st December 2024 19:24
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ২০২৪ সালে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ভারত একাধিক মাইলফলক গড়েছে। চিনের সঙ্গে সীমান্ত সংঘর্ষে সাফল্য পাওয়া হোক কিংবা তেজস এমকে১এ-এর সফল পরীক্ষা, সবই দেখেছে এই বছর। স্থল, জল, আকাশ... সব ক্ষেত্রেই বড় বড় ঘটনা ঘটেছে বিদায়ী বছরে।
এক নজরে দেখে নেওয়া যাক চলতি বছর প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে কী কী বড় ঘটনা ঘটল দেশে।
সীমান্ত থেকে সেনা প্রত্যাহার চিনের
পূর্ব লাদাখের ডেপসাং এবং দেমচোক থেকে শিবির সরিয়ে নিয়েছে চিন। লাদাখের বেশ কয়েকটি জায়গাতেও শিবির গড়েছিল তারা। সেটাও সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। গালওয়ানে দুই দেশের সেনার সংঘর্ষের পর থেকে সীমান্তে যে সমস্যা বেড়েছিল তার জেরেই ভারত-চিন সম্পর্কে ফাটল ধরে। তবে এলএসি-তে সেনা প্রত্যাহার হওয়ার ঘটনা দুই দেশের জন্যই স্বস্তির খবর।
'প্রজেক্ট জোরাবর'
ডিআরডিও বা ডিফেন্স রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন দু-বছরের মধ্যে একটি ট্যাঙ্ক তৈরি করে লার্সান অ্যান্ড টৌব্রোর সঙ্গে গাঁটছড়া বেঁধে। চিনের জেডকিউ-১৫ ট্যাঙ্কের পাল্টা এই ট্যাঙ্ক বানানো হয়েছে। এরই নাম দেওয়া হয়েছে 'জোরাবর'। এর ওজন ২৫ টন, ট্যাঙ্ক হিসেবে যা অত্যন্ত হালকা। এই ধরনের আরও ৫৯টি ট্যাঙ্ক তৈরি করে ভারতীয় সেনাকে দেওয়া হবে।
তেজস এমকে১এ
গত মার্চ মাসে গ্রুপ ক্যাপ্টেন কেকে ভেনুগোপাল (অবসরপ্রাপ্ত) হ্যাল-এর একজন চিফ টেস্ট পাইলট প্রথমবারের জন্য তেজস এমকে১এ ফাইটার জেট আকাশে ওড়ান। প্রায় ১৮ মিনিট ধরে এটি উড়েছিল। ভারতের প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে এটি বিরাট বড় একটি ঘটনা কারণ মিগ সহ একাধিক পুরনো মডেলের যুদ্ধবিমানের জায়গায় এই বিমান ব্যবহার করার ভাবনা রয়েছে।
ভারতীয় বায়ুসেনা ইতিমধ্যে হ্যালের সঙ্গে ৩৬ হাজার ৪৬৮ কোটি টাকার চুক্তি করে ৮৩টি তেজস এমকে১এ বিমান অর্ডার করেছে।
নিউক্লিয়ার মিসাইলের পরীক্ষা
সাড়ে ৩ হাজার রেঞ্জের নিউক্লিয়ার সাবমেরিন ব্যালেস্টিক মিসাইলের পরীক্ষা করা হয়েছে চলতি বছর। গত নভেম্বর মাসেই কে-৪ নামের এই মিসাইলের পরীক্ষা করা হয়েছে। রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতে এই প্রথম কোনও সাবমেরিন থেকে মিসাইল ছুড়ে তা পরীক্ষা করা হয়েছে।
হাইপারসোনিক মিসাইল টেস্ট
নভেম্বর মাসেই ওড়িশার এপিজে আব্দুল কালাম দ্বীপ থেকে এই হাইপারসোনিক মিসাইল পরীক্ষা করা হয়। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং বলেছিলেন, এই মিসাইলের পরীক্ষা দেশের জন্য ঐতিহাসিক এক মুহূর্ত।
'রুদ্রম ২'-এর সফল পরীক্ষা
চলতি বছরই ডিআরডিও-র 'রুদ্রম ২' মিসাইলের পরীক্ষা সফল হয়েছে। অ্যান্টি র্যাডিয়েশন সুপারসনিক এই মিসাইল সুখোই ৩০এমকেআই যুদ্ধবিমান থেকে নিক্ষেপ করা হয়েছিল। তাতেই সাফল্য পেয়েছে ভারত। চিন বা পাকিস্তানের যে কোনও র্যাডার এক পলকে গুঁড়িয়ে দিতে পারে এই মিসাইল।
এমআইআরভি ব্যালেস্টিক মিসাইলের পরীক্ষা
'অগ্নি ফাইভ' যাতে আরও বেশি শক্তিশালী করা যায়, তার জন্য অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষাই চলছিল। চলতি বছরই অগ্নি ফাইভ মিসাইল হয়েছে ‘এমআইআরভি’ যুক্ত ব্যালেস্টিক মিসাইল। এমআইআরভি অর্থাত্ মাল্টি ইন্ডিপেনডেন্টলি টার্গেটেবল রি-এন্ট্রি ভেহিকেলস। গত মার্চ এমআইআরভি এনাবেল অগ্নি ফাইভের সফল পরীক্ষা করেছিল সেনা ও ডিআরডিও।
এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম মিসাইলের সফল পরীক্ষা
ভেরি শর্ট-রেঞ্জ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম বা ভিএসএইচওআরএডিএস মিসাইলের পরীক্ষা করেছে ডিআরডিও। এটি একটি ম্যান-পোর্টেবল এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম। এর ডিজাইন এবং নির্মাণ সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে হয়েছে। এই মিসাইলগুলিতে রিঅ্যাকশন কন্ট্রোল সিস্টেম এবং ইন্ট্রিগ্রেটেড এভিওনিক্স সহ একাধিক অভিনব প্রযুক্তিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।