শেষ আপডেট: 16th October 2024 19:54
দ্য ওয়াল ব্যুরো: শনিবার বান্দ্রায় খুন হন মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মন্ত্রী তথা এনসিপি নেতা বাবা সিদ্দিকি। রাত পোহাতেই খুনের দায় স্বীকার করে লরেন্স বিষ্ণোই গ্যাং। তারপরই ফের শিরোনামে উঠে আসে দেশের কুখ্যাত এই দুষ্কৃতীর নাম। উঠে আসে একাধিক তথ্যও। যা অনেকেরই অজানা।
পাঞ্জাব, হরিয়ানা, রাজস্থান, মহারাষ্ট্র, উত্তরপ্রদেশে জাল পাতা রয়েছে তার। নিজে জেলে থাকলেও অপরাধে খামতি নেই। নেটওয়ার্ক দিয়ে সর্বদা কাজ চালিয়ে যাচ্ছে সে।
এই কুখ্যাত দুষ্কৃতীর জীবন শুরুতে এমনটা ছিল না। তার বাবা ছিলেন পুলিশে। হরিয়ানা পুলিশের আধিকারিক ছিলেন। সচ্ছ্বল পরিবারেরই বেড়ে ওঠা লরেন্স তথা বলকরন বরারের। পরিবারের কাছে কোটি টাকার সম্পত্তিও ছিল। ফলে টাকার জন্য অপরাধ জগতে প্রবেশ, এমনটা ধরে নেওয়া যায় না।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, লরেন্সের জীবনে ঘটেছিল এক ভয়াবহ ঘটনা। আবোহারহের একটি কনভেন্ট স্কুলে পড়ার সময় তিনি একটি মেয়ের প্রেমে পড়েন। যা কলেজে উঠে সম্পর্কে পরিণত হয়। চণ্ডীগড়ের ডিএভি কলেজে পড়তেন দু'জনই।
লরেন্স সেসময় ছাত্র রাজনীতির পরিচিত মুখ। করতেন সপু পার্টি। তার বাচনভঙ্গি, ভাষণ, কথা ও শব্দচয়নের প্রেমে পড়তেন অনেকেই। তার কথা বলার দক্ষতা ও সাংগঠনিক ক্ষমতা, পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের সপু পার্টির সভাপতি নির্বাচিত করে তাকে।
২০১১ সাল, ছাত্র নির্বাচন। বিষ্ণোই গোষ্ঠীর সঙ্গে ঝামেলা লাগে বিরোধী গোষ্ঠীর। সেই শত্রুতা থেকেই জ্যান্ত জ্বালিয়ে দেওয়া হয় লরেন্সের সেই বান্ধবীকে। যা মেনে নিতে পারেনি সে। তারপরই প্রতিশোধ নেওয়া শুরু। বিরোধীদের মারধর করতে শুরু করে লরেন্স। সেই ঝামেলার সময় শূন্যে বেশ কয়েক রাউOSmন্ড গুলিও চালায়। আর এরপরই তার বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া প্রথম মামলা। জেলে যেতে হয় তাকে।
জেল থেকে বেরিয়ে বিরোধী নেতার বাড়িতে ঢুকে পার্কিংয়ে থাকা একটি মিৎসুবিসি প্যাজেরো স্পোর্টস ও একটি মারুতি ওমনিতে আগুন লাগিয়ে দেওয়ার অভিযোগ ওঠে। ফের মামলা দায়ের হয়।
প্রথমবার জেলে ঢুকেই নিজের সাম্রাজ্য বিস্তার করে লরেন্স। জেলে বন্দি বিভিন্ন অপরাধীদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করে ও তার পর তাদের সাহায্যের আশ্বাস দিয়ে বিভিন্ন অপরাধমূলক কাজে লিপ্ত করায়। সোশ্যাল মিডিয়া ব্যবহার করেই এত বড় নেটওয়ার্ক সে তৈরি করেছে বলে জানা যায়।
২০১৭ সাল পর্যন্ত লরেন্সের বিরুদ্ধে যে সব অভিযোগ আসতে শুরু করে তা যে কোনও রাজ্যের প্রশাসনের ঘুম কেড়ে নেওয়ার জন্য যথেষ্ট। মাত্র সাত বছরে ১৬টি গুলি চালানোর ঘটনায় নাম জড়ায় লরেন্সের। এই সময়ে পাঞ্জাব, চণ্ডীগড়, রাজস্থান এবং হরিয়ানা—চার রাজ্যে মোট ৩৩টি মামলায় নাম জড়ায় পাঞ্জাব বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র নেতার।
তার মাঝেই লরেন্সের নাম ফের শিরোনামে উঠে আসে সলমন খানকে খুনের হুমকি দেওয়ায়। একবার নয়, একাধিকবার বলিউডের এই সুপারহিরোকে খুনের হুমকি দেয় সে।
তারপরই ২০২২ সাল। পাঞ্জাব থেকে আপ ২২৪ জন ভিআইপির নিরাপত্তা তুলে নেওয়ার পরের দিন গুলিতে ঝাঁঝরা করে দেওয়া হয় বিখ্যাত গায়ক তথা রাজনীতিক সিধু মুসেওয়ালাকে। খুনের দায় স্বীকার করে বিষ্ণোই গ্যাং।
এবার বাবা সিদ্দিকি। শনিবার তাকে গুলি করে খুন করে তিন দুষ্কৃতী। খুনের সুপারি বিষ্ণোই গ্যাংয়ের থেকেই তারা পেয়েছিল বলে জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়।