শেষ আপডেট: 26th October 2024 15:20
দ্য ওয়াল ব্যুরো: দিল্লির বার্গার কিং-এ এক যুবককে গুলি করে খুনের ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার 'মহিলা ডন' অনু ধনখড়। নেপালে পালিয়ে যাওয়ার আগে শুক্রবার উত্তরপ্রদেশ থেকে তাকে গ্রেফতার করে দিল্লি পুলিশের বিশেষ বিভাগ।
কয়েক মাস আগে দিল্লির রাজৌরি গার্ডেনের বার্গার কিং-এর আউটলেটে গুলি করে খুন করা হয় আমান জুন (২৬) নামের এক যুবককে। সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা যায়, তিনি বার্গার কিংয়ে ঢুকে একটি নির্দিষ্ট টেবিলে এক অপেক্ষারত মহিলার সামনে গিয়ে বসেন। তারপরই বার্গার কিং-এ ঢুকে পেপার স্প্রে ছড়িয়ে তাঁকে গুলি করে খুন করে এক ব্যক্তি। সেসময় আমান জুনের মানি ব্যাগ ও মোবাইল ফোন নিয়ে এলাকা থেকে পালিয়ে যায় ওই মহিলা।
খুনের দায় শিকার করে গ্যাংস্টার হিমাংশু ভাউ। এই মুহূর্তে সে পোর্তুগালে রয়েছে বলে জানা যায়। এই খুন প্রতিহিংসার বশেই, প্রাথমিক তদন্তে জানায় পুলিশ।
তদন্তে নেমে পুলিশ আরও জানতে পারে, ওই মহিলার সঙ্গে আগে থেকেই যোগাযোগ ছিল আমানের। তাই বার্গার কিং-এ ঢুকে ওই মহিলার টেবিলে গিয়েই বসে সে। এই মহিলাই 'ডন' অনু ধনখড়।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, ২০২০ সালে হরিয়ানায় শক্তি দাদা নামের একজন খুন হয়। যে খুনের সঙ্গে আমান জড়িত ছিলেন বলে অভিযোগ ওঠে। সেই খুনের প্রতিশোধ নিতেই আমানকে হত্যা করা হয় প্রায় চার বছর পর। খুনের দায় শিকার করে হিমাংশু ভাউয়ের টিম এও জানিয়ে দেয়, শক্তি দাদা খুনের ঘটনায় যারা জড়িত ছিল তারা প্রত্যেকে টার্গেটে রয়েছে এবং সকলের সময় আসবে।
হিমাংশু ভাউয়ের হয়ে এই খুনে কাজ করে অনু ধনকড়। জিজ্ঞাসাবাদের পর পুলিশ জানতে পারে, হিমাংশু অনুকে আমেরিকায় সুখের জীবন উপহার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। তাই এই খুনে সে সাহায্য করে।
খুনের পর গত কয়েক মাস ধরে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ঘুরে বেরিয়েছে সে। খুনের ঠিক পরেই প্রথমে মুখার্জি নগরে নিজের ভাড়া বাড়িতে আসে। জিনিসপত্র নিয়ে চণ্ডীগড়ে যায়। সেখান থেকে অমৃতসর-কাটরার বাস ধরে কাটরা পৌঁছয়। কাটরায় একটি গেস্ট হাইসে থাকে। হিমাংশু ভাউ তারপর তাকে জলন্ধর আসতে বলে, ট্রেন ধরে সে তাই করে। তারপর ফের চণ্ডীগড় আসে। সেখান থেকে হরিদ্বার পৌঁছয়। হরিদ্বারে ৩-৪ দিন থেকে রাজস্থানের কোটায় পৌঁছায়। কোটায় প্রায় চার মাস কাটিয়ে ফেলার পর সে সেখান থেকে দেশের বাইরে পালানোর প্ল্যান করে।
এই এতগুলো দিন এভাবে থাকার পুরো খরচ বহন করে হিমাংশু ভাউ। ২২ অক্টোবর, হিমাংশু অনুকে জানায়, ঘটনা ধামাচাপা পড়ে গেছে, পরিস্থিতি এখন শান্ত। অনুকে এরপর আমেরিকা যাওয়ার পরামর্শ দেয় সে। সেই মতোই অনু ধনকড় নেপাল, দুবাই হয়ে আমেরিকা পালানোর ছক কষে ও যাত্রাও শুরু করে। কিন্তু লখিমপুর খেড়ির কাছে নেপালে ঢোকার আগে তাকে ধরে ফেলে দিল্লি পুলিশ।
জানা গেছে, শুধু আমান জুন খুনের ঘটনায় অনুকে গ্রেফতার করা হয়েছে এমন না। তার বিরুদ্ধে আরও একাধিক অপরাধমূলক ঘটনায় যুক্ত থাকার অভিযোগ রয়েছে। জানুয়ারিতে মাটুরাম হালওয়াইতে যে গুলি চলেছিল, তার পিছনেও অনুরই হাত ছিল। ফলে সবমিলিয়ে এই লেডি ডনকে গ্রেফতার করতে পারা, পুলিশের কাছে একটা বড় পাওনা বলে মনে করা হচ্ছে।