শেষ আপডেট: 3rd February 2025 16:52
দ্য ওয়াল ব্যুরো: দেখতে ভাল নয়, চাকরিও জুটছে না। অমানবিক শারীরিক ও মানসিক অত্যাচারের বলি কেরালার তরুণী। এমন অভিযোগ করল পরিবার। গত সপ্তাহে কেরালার মালাপ্পুরম থেকে দেহ উদ্ধার হয়। আত্মহত্যায় প্ররোচনা দেওয়া ও অত্যাচার করা হয়েছে বলে তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের হল।
মৃতের নাম বিষ্ণুজা (২৫)। প্রভিন নামের কেরালার এক তরুণের সঙ্গে ২০২৩-এ তাঁর বিয়ে হয়। দেখাশোনা করেই বিয়ে হয়েছিল। বিষ্ণুজার পরিবারের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই নানা বিষয়ে ঝামেলা শুরু করেন প্রভিন। পদে পদে অপমান করতেন।
প্রভিনের মতে বিষ্ণুজাকে দেখতে ভাল ছিল না। চাকরিও করতেন না। ফলে সেই নিয়ে দিনরাত কথা শোনাতেন। এই বিষয়টিই প্রভাব ফেলেছিল বিষ্ণুজার মনে।
এবিষয়ে তরুণীর বাবা বাসুদেবন বলেন, 'আমার মেয়েকে প্রভিন বলত, ভীষণ রোগা, বাইকে তুলবে না, দেখতে ভাল না। কোনওরকম আকর্ষণ নেই। বিয়ের পর থেকেই এসব বলা শুরু করেছিল। চাকরি নিয়েও কথা শোনাত। বলত, ওর টাকায় বাঁচতে হয়। নিজের চাকরি করলে আর টাকা দিতে হত না ওকে। আমার মেয়ে পরীক্ষা দিয়েছিল কয়েকটা। কিন্তু চাকরি পায়নি। খুব চেষ্টা করেছে কিন্তু পায়নি। আমাদের কোনওদিন এসব বিষয়ে কিছু জানায়নি ও। ওর মৃত্যুর পর এসব বন্ধুদের থেকে জানতে পারছি।'
বাসুদেবন আরও বলেন, 'আমরা যখন সমস্যায় পড়েছিলাম, আমাদের সাহায্য করেছে কিন্তু ওর ব্যক্তিগত জীবনে কোনওদিন ঢুকতে দেয়নি। ও কীসের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে, সেটা কোনওদিন বুঝতে দেয়নি। আমরা যখন ওকে সাহায্য করতে যেতাম ও বলত থাক, ও পাল্টে নেবে। আমার সন্তানের সঙ্গে এমন হয়েছে, ও মার খেয়েছে, সেটা আমি সবে জানতে পেরেছি। ওই ছেলের আরও মহিলাদের সঙ্গে সম্পর্ক ছিল।'
পরিবারের দাবি, বিষ্ণুজাকে খুন করা হয়েছে। বাসুদেবন বলেন, 'আমার মনে হয় প্রভিন ওকে মেরে ঝুলিয়ে দিয়েছে।'
বিষ্ণুজার মৃত্যুর পর তাঁর বন্ধুরা এগিয়ে আসে। তাঁর সঙ্গে যা যা ঘটেছে, কতোটা নৃশংস অত্যাচার তাঁদের ওপর করা হয়েছে, তা সামনে আনে। একজন জানান, অত্যাচারের সীমা ছাড়িয়ে গিয়েছিল একটা সময়। তখন ও বন্ধুদের সঙ্গে সবটা শেয়ার করতে শুরু করে। আমি ওকে বলেছিলাম বাড়ি ফিরে যেতে। তাঁরা আরও জানান, প্রভিন এতোটাই বিষাক্ত ছিল যে বিষ্ণুজার হোয়াটসঅ্যাপ চ্যাট নিজের নম্বরের সঙ্গে লিঙ্ক করে রেখেছিল। যাতে যা ঘটছে তা যেন পরিবার বা বাইরের কারও সঙ্গে শেয়ার করতে না পারে।
গোটা ঘটনার তদন্ত করছে পুলিশ। পরিবারের বক্তব্য শোনা হয়েছে। অভিযোগের ভিত্তিতে প্রভিন ও তার পরিবারের সঙ্গেও কথা বলা হতে পারে।