শেষ আপডেট: 5th March 2025 21:10
দ্য ওয়াল ব্যুরো: কেদারনাথ যেতে আর ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হবে না। সোনপ্রয়াগ থেকে মাত্র ৩৬ মিনিটেই পৌঁছনো যাবে এই জায়গায়। কীভাবে? রোপওয়েতে। বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদন দেওয়া হল এই প্রকল্পের।
মন্ত্রিসভার অর্থনৈতিক বিষয়ক কমিটি (CCEA) জানিয়েছে, ১২.৯ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রোপওয়ে প্রকল্পটি বাস্তবায়িত করতে আনুমানিক ৪,০৮১.২৮ কোটি টাকা খরচ হবে। সর্বাধুনিক ট্রাই-কেবল ডিটাচেবল গন্ডোলা (3S) প্রযুক্তিতে তৈরি করা হবে এবং প্রতি ঘণ্টায় এক দিক থেকে ১,৮০০ জন কেদারনাথ যেতে পারবেন। এভাবে দিনে মোট ১৮ হাজার যাত্রী রোপওয়ে সার্ভিসের সুবিধা পেতে পারেন।
সরকারের দাবি, প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে কেদারনাথে আরও মানুষ যেতে পারবেন। যাঁরা প্রতিকূলতার জন্য যেতে পারেন না, তাঁদেরও সমস্যা হবে না। এই একটা প্রকল্পের ফলে বিপুল কর্মসংস্থান তৈরি হবে ওই এলাকায়। পর্যটন, হোটেল, খাদ্য-সহ অন্যান্য ক্ষেত্রেও প্রভাব ফেলবে। পাহাড়কে অর্থনৈতিকভাবে উন্নত করবে।
কেদারনাথ মন্দিরে যেতে বর্তমানে গৌরীকুণ্ড থেকে ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ কঠিন পাহাড়ি পথ পেরোতে হয়। মূলত পায়ে হেঁটে, খচ্চরে চেপেই যায় মানুষজন। নতুন রোপওয়ে চালু হলে সোনপ্রয়াগ থেকে কেদারনাথ সরাসরি সংযুক্ত হবে এবং যাত্রীরা সারা বছর কোনও ঝামেলা-চিন্তা ছাড়াই মন্দিরে যেতে পারবেন।
কেদারনাথ ভারতের ১২টি জ্যোতির্লিঙ্গের অন্যতম, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩,৫৮৩ মিটার উচ্চতায় রয়েছে। প্রতিবছর এপ্রিল-মে এবং অক্টোবর-নভেম্বর পর্যন্ত প্রায় ২০ লক্ষ তীর্থযাত্রী পৌঁছন।
কেদারনাথ ছাড়াও কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা উত্তরাখণ্ডের গোবিন্দঘাট থেকে হেমকুণ্ড সাহিব পর্যন্ত ১২.৪ কিলোমিটার দীর্ঘ রোপওয়ে তৈরির অনুমোদন দিয়েছে। এই প্রকল্পে খরচা হবে ২,৭৩০.১৩ কোটি টাকা। বর্তমানে গোবিন্দঘাট থেকে হেমকুণ্ড সাহিব, ২১ কিলোমিটার দীর্ঘ উঁচু পাহাড়ি পথ পায়ে হেঁটে, খচ্চর বা ডান্ডির সাহায্যে পার করতে হয়। এই রোপওয়েও মনোকেবল ডিটাচেবল গন্ডোলা (MDG) প্রযুক্তির মাধ্যমে তৈরি করা হবে। গোবিন্দঘাট থেকে ঘাঙ্গারিয়া (১০.৫৫ কিমি) এবং ট্রাইকেবল ডিটাচেবল গন্ডোলা (3S) প্রযুক্তির মাধ্যমে ঘাঙ্গারিয়া থেকে হেমকুণ্ড সাহিব (১.৮৫ কিমি) পর্যন্ত নির্মিত হবে। এটি প্রতি ঘণ্টায় এক দিক থেকে ১,১০০ জন যাত্রী বহন করতে পারবে এবং প্রতিদিন প্রায় ১১ হাজার জন যাতায়াত করতে পারবেন।
হেমকুণ্ড সাহিব গুরুদ্বারাটি সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ১৫ হাজার ফুট উচ্চতায় রয়েছে। প্রতিবছর মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত প্রায় ১.৫-২ লক্ষ তীর্থযাত্রী পৌঁছন। ভ্যালি অফ ফ্লাওয়ার্স এখানকার আকর্ষণ। রোপওয়ের ফলে আগামীদিনে এই জায়গায় আরও অনেক মানুষ যেতে পারবেন বলে আশাবাদী সরকার।