শেষ আপডেট: 8th January 2025 12:15
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সাইবার প্রতারণার ঘটনার অন্ত নেই দেশে। প্রতিদিনই কোনও না কোনও রাজ্য থেকে এমন খবর আসছে। সম্প্রতি আবার বেড়েছে ডিজিটাল অ্যারেস্টের মতো ঘটনা। সবমিলিয়ে এমনিতেই আতঙ্কিত সাধারণ মানুষ। সেই আতঙ্ক অবশ্য কমছে না, বরং আরও বহুগুণ বাড়ছে। কারণ এখন নতুন ধরনের এক প্রতারণার খপ্পরে পড়ছেন অনেকেই। 'জাম্পড ডিপোজিট স্ক্যাম (Jumped Deposit Scam)'-এর ফাঁদে পড়ছেন মানুষ।
বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে অনলাইন পেমেন্টের বিষয়টি রোজকারের বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। আলপিন থেকে শুরু করে আলমারি... সব কিনতে গেলেই মানুষ অনলাইন পেমেন্ট করছেন। তার জন্য রোজ ব্যবহৃত হচ্ছে ইউপিআই অ্যাপ, অনলাইন ব্যাঙ্কিং অ্যাপ। আর তাতেই প্রতারকদের পোয়াবারো। ইউপিআই ব্যবহারকারীদেরই ফাঁদে ফেলেছেন তারা। ফাঁদে ফেলতে গ্রাহকদের অ্যাকউন্টে পাঠানো হচ্ছে টাকাও।
কীভাবে প্রতারণা হচ্ছে
প্রথমেই গ্রাহককে ইউপিআই-এর মাধ্যমে অল্প টাকা পাঠাচ্ছে প্রতারকরা। গ্রাহক কৌতূহলী হয়ে টাকার উৎস জানতে নিজের ব্যাঙ্কিং অ্যাপ বা অনলাইন পেমেন্ট অ্যাপ খুলছে। তার জন্য তাঁকে দিতে হচ্ছে পিন। এই গোটা প্রক্রিয়ার সময়ই প্রতারকরা গ্রাহকের ইউপিআই অ্যাকাউন্টের ওপর নজর রাখছে। কারণ টাকা পাঠানোর পরই সেই অ্যাকাউন্ট কার্যত হ্যাক করে ফেলছে তারা।
পিন দেওয়ার পর অ্যাপে ঢোকার সঙ্গে সঙ্গেই প্রতারকরা গ্রাহককে ভুয়ো ইউপিআই আইডি ব্যবহার করে আরও টাকা পাঠানোর মেসেজ পাঠাচ্ছে এবং অনুরোধ করা হচ্ছে সেই টাকা ফেরত দিতে কারণ সেটা নাকি ভুল করে পাঠানো হয়েছে। কোনও গ্রাহক যদি এতক্ষণেও বিষয়টি বুঝতে না পারেন তাহলে তিনি অনুরোধ মতোই নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে পাঠিয়ে দিচ্ছেন টাকা। তাতেই তাঁরা প্রতারণার শিকার হচ্ছেন।
মনে করুন প্রথমে আপনাকে প্রতারকরা ৫০ টাকা পাঠিয়েছে। তারপর যখনই আপনি সেই টাকার উৎস জানতে ইউপিআই অ্যাপ খুললেন তখন আপনাকে ৫০০ টাকা দেওয়ার ভুয়ো মেসেজ পাঠানো হল। তারপর আপনি অনুরোধ শুনে সেই ৫০০ টাকাই ফেরত দিলেন যে টাকা আপনার অ্যাকাউন্টে আসেইনি! এইভাবে প্রতারকরা ৫০ টাকা ব্যবহার করে ৪৫০ টাকা কামিয়ে নিচ্ছে।
এই ধরনের প্রতারণার বিষয়টি সর্বপ্রথম নজরে এসেছে তামিলনাড়ু সাইবার ক্রাইম পুলিশের। বিগত কয়েক মাসে এমন একাধিক অভিযোগও দায়ের হয়েছে তাঁদের কাছে। তাই বিষয়টি নিয়ে সতর্কতা জারি করেছে তাঁরা।
কীভাবে সুরক্ষিত থাকবেন
ইউপিআই প্রতারণা থেকে বাঁচতে সহজ কিছু সতর্কতা অবলম্বন করুন।
১. ব্যালেন্স চেক করার আগে সময় নিন - হঠাৎ যদি আপনার কাছে অপরিচিত কোনও নম্বর থেকে পেমেন্ট আসে বা টাকা পাঠানো রিক্যুয়েস্ট আসে তাহলে অন্তত ২৫-৩০ মিনিট সময় নিন অ্যাপে ঢোকার আগে। এই সময়টায় রিক্যুয়েস্ট অ্যাপ্রুভাল পিরিয়ড শেষ হয়ে যায়।
২. ভুল পিন ব্যবহার করুন - যদি সত্যিই দ্রুত পেমেন্ট চেক করতে চান তাহলে প্রথমবার ভুল পিন ব্যবহার করুন। এতে আনঅথোরাইজড ট্রানজকশন বন্ধ হয়ে যায়।
৩. কাউকে ইউপিআই পিন শেয়ার করবেন না - বন্ধু হোক বা আত্মীয়, কাউকে নিজের ইউপিআই পিন শেয়ার করবেন না। অপরিচিত কোনও ব্যক্তিকে তো নয়ই।
কোনও সময়ই যদি এমন প্রতারণার শিকার হন তাহলে যত দ্রুত সম্ভব সাইবার থানায় অভিযোগ দায়ের করুন এবং নিজের ব্যাঙ্ককে বিষয়টি সম্পর্কে অবগত করুন।