শেষ আপডেট: 30th October 2024 10:16
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ভারতীয় সেনাবাহিনীর পরিচালন ব্যবস্থায় আমূল পরিবর্তন আনতে চলেছে নরেন্দ্র মোদী সরকার। চলতি বছরের শেষেই চালু করা হতে পারে সেনার তিন বাহিনীকে নিয়ে যৌথ থিয়েটার কমান্ড। মোদ্দা কথা, সেনা পরিচালনায় আর্মি, এয়ার ফোর্স ও নেভি পৃথক কমান্ডের একপ্রকার অবসান ঘটিয়ে দেশে তিনটি যৌথ থিয়েটার কমান্ড থাকবে।
এখন দেশে দুটি যৌথ কমান্ড রয়েছে। একটি আন্দামান ও নিকোবরে। ভারত মহাসাগরে শক্রু মোকাবিলায় সেখানে পদাধিক, নৌ ও বায়ুসেনার যৌথ কমান্ড আছে। দ্বিতীয়টি হল স্ট্র্যাটেজিক ফোর্সেস কমান্ড। এই কমান্ড পারমানবিক যুদ্ধাস্ত্রের বিষয়টি দেখভাল করে। এই কমান্ড সম্পূর্ণ স্বাধীন। সেনাবাহিনীর পদাতিক-নৌ-বায়ুসেনা—এই তিন কমান্ডের সঙ্গে স্ট্রাটেজিক ডিফেন্স কমান্ডের সম্পর্ক নেই।
প্রয়াত সেনাধ্যক্ষ বা চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়াত সেনাবাহিনীকে পরিচালনায় এই ব্যবস্থা চালুর পক্ষে ছিলেন। দু-বছর আগে কর্তব্যরত অবস্থায় বিমান দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার আগেই তাঁর প্রস্তাবে সায় দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার। চিন ও পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভবিষ্যতে যুদ্ধ হলে ভারত যাতে শক্তহাতে জবাব দিতে পারে সে জন্য রাওয়াত তিন বাহিনীর পৃথক অস্তিত্বের অবসানের পক্ষে ছিলেন।
বর্তমান সেনাধ্যক্ষ বা চিফ অফ ডিফেন্ট স্টাফ অনিল চৌহান পূর্বসূরির প্রস্তাব বাস্তবায়নে তিন তারা পদমর্যাদার ছয় জেনারেলকে দায়িত্ব দিয়েছিলেন থিয়েটার কমান্ড চালুর বিষয়টি চূড়ান্ত করতে। সূত্রের খবর, সেনা সদর থিয়েটার কমান্ড চালুর বিষয়ে প্রস্তাব চূড়ান্ত করেছ। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক হয়ে তা প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন নিরাপত্তা বিষয়ক মন্ত্রি পরিষদের বৈঠকে পেশ করা হবে। তারপর সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করবে মন্ত্রিসভা। জানা গিয়েছে, ছয় জেনারেলের কমিটি দেশে তিনটি যৌথ কমান্ড বা থিয়েটার কমান্ড তৈরির প্রস্তাব করেছে।
এক. ওয়েস্টার্ন থিয়েটার কমান্ডের সদর হবে রাজস্থানের জয়পুরে।
দুই. নরর্দান থিয়েটার কমান্ড বা এনটিসি-র সদর হবে কলকাতা অথবা লখনউতে।
তিন. মেরিটাইম থিয়েটার কমান্ড তৈরি হবে কর্নাটকের কারওয়ারে। তবে মেরিটাইম কমান্ডও যৌথ বাহিনী হিসাবেই কাজ করবে। সেখানেও সেনার তিন বাহিনীকে নিয়ে তৈরি হবে যৌথ থিয়েটার কমান্ড।
এরমধ্যে নরর্দান থিয়েটার কমান্ডকে বিশেষ ভাবে গড়ে তোলা হবে চিন ও পাকিস্তানের মোকাবিলায়। তাৎপর্যপূর্ণ বিষয় হল তিন যৌথ থিয়েটাক কমান্ডের মাথায় থাকবেন আর্মির জেনারেল বা পদাতিক সেনার শীর্ষ অফিসারেরা। প্রস্তাবে বলা হয়েছে, তাতে বিমান ও নৌ বাহিনীর প্রধান বা শীর্ষ অফিসারদের মর্যাদাহানীর প্রশ্ন নেই। কারণ কমান্ডগুলি তিন বাহিনীর প্রধান এবং সবশেষে সেনাধ্যক্ষের কাছে জবাবদিহি করতে বাধ্য থাকবে।
যৌথ থিয়েটার কমান্ডের ভাবনার পিছনে রয়েছে, তিন বাহিনীকেই যুদ্ধের সব ধরনের অস্ত্র ব্যবহার এবং পরিস্থিতি মৌকাবিলার জন্য তৈরি করা। এছাড়া তিন বাহিনী যাতে পরস্পরের যুদ্ধ কৌশল, কাজের ধরনের সঙ্গে পরিচিত হতে পারে, সেটাও লক্ষ্য যৌথ থিয়েটার কমান্ড তৈরির। বিশেষজ্ঞদের মতে, নয়া ব্যবস্থা চালু করতে বছর দুই সময় দরকার হবে। সে জন্য গোড়ায় প্রতিরক্ষায় বরাদ্দ বাড়ানোর প্রয়োজন হবে। পরে প্রতিরক্ষা খাতে খরচ কমে আসবে।