শেষ আপডেট: 30th October 2024 08:59
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মণ্ডল মুর্মু নামে এক ব্যক্তিকে ঝাড়খণ্ড পুলিশের আটক করার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ভোটমুখী রাজ্যটিতে তুমুল রাজনৈতিক বিবাদ শুরু হয়েছে। বিতর্ক গড়িয়েছে নির্বাচন কমিশন পর্যন্ত। স্বয়ং মুখ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব কুমার ভার্চুয়াল বৈঠকে ঝাড়খণ্ডের মুখ্যসচিব ও পুলিশের ডিজিকে এই ঘটনায় কাঠগড়ায় তোলেন। মুখ্য নির্বাচন কমিশনারের বক্তব্য, গাড়ি আটকে তল্লাশি অভিযানে ঝাড়খণ্ড প্রশাসন কমিশনের বিধি মানেনি। গাড়িতে তল্লাশি, চেক পোস্টে নজরদারির ভিডিওগ্রাফি করা হয়নি। মণ্ডল মুর্মুকে পুলিশ হেনস্থা করেছে।
অন্যদিকে, ঝাড়খণ্ডের প্রধান শাসক দল জেএমএমের শীর্ষ নেতা সুপ্রিয় ভট্টাচার্যের বক্তব্য, ভোট প্রচার শুরুর মধ্যেও বিজেপি দল ভাঙানোর নোংরা খেলা চালিয়ে যাচ্ছে। সেই খেলায় রাজ্য প্রশাসন আটকে দেওয়ায় অনেকেই অসন্তুষ্ট। বিবাদে জড়িয়েছেন গোড্ডার বিজেপি সাংসদ নিশিকান্ত দুবে। তিনি মণ্ডলের সঙ্গে তাঁর একটি ছবি সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করে বলেন, মুখ্যমন্ত্রীর প্রস্তাবকের সঙ্গে আমার বৈঠক হয়েছে। উনি বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নামতে চান। সে জন্য বিজেপি নেতাদের সাহায্য চাইতে এসেছিলেন।
কে এই মণ্ডল মুর্মু? তিনি ঝাড়খণ্ড মুক্তিমোর্চার একজন সাধারণ নেতা। কিন্তু গত ১৪ অক্টোবর থেকে তাঁর গুরুত্ব বেড়ে গিয়েছে। ঝাড়খণ্ডে এখন বিধানসভা ভোটের প্রচার তুঙ্গে। সব দলের নেতারাই আসরে নেমে পড়েছেন। রাজ্যের বাহারাইত কেন্দ্রে ১৪ অক্টোবর মনোনয়ন পেশ করেন হেমন্ত। মুখ্যমন্ত্রীর মনোননয়পত্রে সই আছে মণ্ডল মুর্মুর।
কিন্তু ঝাড়খণ্ড পুলিশের গোয়েন্দাদের সম্প্রতি মণ্ডল মুর্মুর গতিবিধি সন্দেহজনক ঠেক ছিল। তাঁর সঙ্গে বিজেপি নেতাদের একাধিক বৈঠকের বিষয়টি জানাজানি হতে জেএমএম নেতৃত্বে মণ্ডলের গোড্ডার বাড়িতে নজরদারি শুরু করে। গত শনিবার রাতে মণ্ডল আচমকাই রাঁচি চলে আসেন। পরদিন রবিরার সকালে গোড্ডা রওনা হন। পুলিশ ও জেএমএম নেতৃত্ব জানতে পারে শনিবার রাতে মণ্ডল মুর্মুর সঙ্গে রাঁচির হোটেলে বিজেপির কিছু নেতার বৈঠক হয়।
গোড্ডা পুলিশ মণ্ডলের গাড়ি থামিয়ে তল্লাশি চালায়। গাড়িতে বিজেপির যুব মোর্চার কয়েকজন নেতা ছিলেন। পুলিশ প্রাথমিক তল্লাশির পরই মণ্ডলকে ছেড়ে দেয়। আটক করে পদ্ম শিবিরের যুব নেতাদের। এই ঘটনার জের গড়িয়েছে দিল্লির নির্বাচন কমিশন পর্যন্ত। পুলিশ আটক করার পরই মণ্ডলের গাড়ির চালক রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী অফিসার এবং পুলিশের ডিজিকে ফোনে গোটা ঘটনার কথা জানান। মুখ্য নির্বাচনী অফিসার রাজ্য প্রশাসসনের কাছে জানতে চান কেন ওই তল্লাশির ভিডিও করা হয়নি এবং কতিপয় লোককে কোন কারণে আটক করা হয়েছে।
জেএমএমের অভিযোগ, বিজেপি মণ্ডল মুর্মুকে ভাঙানোর চেষ্টা করছিল। এমনকী তাঁকে মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধেই প্রার্থী করতে তৎপর ছিল। সেই কারণেই মুখ্যমন্ত্রীর বিরুদ্ধে প্রার্থীর নাম একেবারে শেষ মুহূর্তে ঘোষণা করে তারা। মণ্ডল মুর্মুকে ভাঙানোর আরও একটি কারণ তিনি সাঁওতাল বিদ্রোহের নায়ক সিধো-কানহুর বংশধর। সরেনের পার্টির বক্তব্য, মুখ্যমন্ত্রীর নাম প্রস্তাবক এবং সিধো-কানহুর বংশধর বলেই মণ্ডলকে দলে টানতে চাইছিল বিজেপি। মণ্ডল তাঁর বিজেপির সঙ্গে যোগাযোগ অস্বীকার করেননি। তাঁর বক্তব্য, ‘আমি মুখ্যমন্ত্রীর মনোনয়নপত্রে সই করেছি বলে কি ব্যক্তিগত প্রয়োজনে কারও সঙ্গে কথা বলতে পারব না!’