পহলগাম জঙ্গি হানার ঠিক আগেই পাক জেনারেল আসিম মুনিরের ভাষণের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে এই ঘটনার জন্য তাঁকেই দায়ী করেন জাভেদ।
কপিল সিবালের মুখোমুখি জাভেদ আখতার।
শেষ আপডেট: 14 May 2025 16:22
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বিশ্বখ্যাত কবি-গীতিকার-চিত্রনাট্যকার জাভেদ আখতারের তীব্র বিষোদ্গারের মুখে পড়ল পাকিস্তানি সেনাবাহিনী ও তার সর্বাধিনায়ক আসিম মুনির। কপিল সিবালের সঙ্গে মুখোমুখি এক সাক্ষাৎকারে অপারেশন সিঁদুর, ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক, বিশেষত পাকিস্তানের মৌলবাদী ভারত বিরোধিতা ও সেদেশের সেনাবাহিনীকে ধুনে দেন জাভেদ আখতার।
পহলগাম জঙ্গি হানার ঠিক আগেই পাক জেনারেল আসিম মুনিরের ভাষণের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে এই ঘটনার জন্য তাঁকেই দায়ী করেন জাভেদ। রাজনীতিক-আইনজীবী কপিল সিবালের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে জাভেদ জোরাল ভাষায় বলেন, আমরা (ভারত) তো কোনওদিন সাধারণ পাকিস্তানি নাগরিকদের অপমান করিনি, কটু কথা বলিনি। কিন্তু, সেনাপ্রধান যা বলেছেন, তা শুধু ভারতীয় হিন্দুদের বিরুদ্ধে নয়। উনি তো তাঁর দেশেও বাস করা তা সে ২ শতাংশ হোক বা আড়াই শতাংশ হোক, সেখানকার হিন্দুদেরও অপমান করেছেন।
জাভেদের দাবি, সেনাপ্রধানের মন্তব্য অত্যন্ত উসকানিমূলক ছিল। এমন কোনও দেশ নেই, যে দেশের সব মানুষ সমান হবে। কিন্তু, যদি কোনও দেশের সরকার খারাপ হয় তাহলে তার প্রথম প্রভাব পড়ে দেশের নাগরিকদের উপর। আমাদের সমস্যা পাকিস্তানের সরকার, সেনাবাহিনী ও জঙ্গিদের নিয়ে। অন্যদিকে, সাধারণ পাকিস্তানিদের প্রতি আমাদের পূর্ণ সহানুভূতি আছে যাঁরা এইসব খারাপ ব্যবস্থার শিকার হচ্ছেন।
জাভেদ আরও বলেন, পাকিস্তানেও আমার অনেক বন্ধু আছে। যাঁরা অত্যন্ত ভাল, কিন্তু চুপ করে রয়েছেন। কারণ কথা বলার সাহস নেই। সাধারণ পাকিস্তানিদের দুর্দশার শেষ নেই। আসিম মুনিরকে শূলে চাপিয়ে বলেন, কী দায়িত্বজ্ঞানহীন মানুষ! আমরা যদি খারাপ হই, তাহলে আমাদের গালাগাল করুন। ভারতকে গালি দিন। কিন্তু আপনি হিন্দুদের অপমান করলেন! উনি কি জানেন না, পাকিস্তানেও কম সংখ্যায় হলেও হিন্দুরা থাকে। আপনার কি দেশের মানুষের প্রতিও শ্রদ্ধা নেই, প্রশ্ন তোলেন জাভেদ।
কপিল সিবালের প্রশ্নের জবাবে জাভেদ বলতেই থাকেন, আপনাদের একটা ক্ষেপণাস্ত্রের নাম আবদালি। আবদালি মুসলিমদের উপর আক্রমণ করে! উনি আপনাদের দেশের হিরো? আপনাদের মাটিতে যাদের জন্ম তাদের জন্য কী করছেন? আপনাদের ইতিহাস নিয়ে সামান্য জ্ঞান আছে? ওদের সমস্যা হচ্ছে, ওরা না জানে ইতিহাস, না জানে ভূগোল। কত আরব দেশ আছে, যারা পাকিস্তানিদের ভিসা দেয় না। কেন? ওরাও তো মুসলিম দেশ! এ তো এমন ব্যাপার দিল্লির রাস্তায় দাঁড়িয়ে একটা ছেলে বলছে, সে শাহরুখকে খানকে চেনে। কিন্তু, শাহরুখ খান জানেন না তুমি কে? ইয়ে ইনকা হাল হ্যায়।
পাকিস্তানি সেনা শুধু ভারত বিরোধীই নয়, তারা তাদের জওয়ানদেরও সম্মান করে না। আমাদের যখন একজনও সেনা শহিদ হন, তাঁকে আমরা বরণ করে জাতীয় পতাকায় মুড়িয়ে নিয়ে আসি। আর কারগিলের সময় পাকিস্তান নিজেই নিজেদের সেনার দেহ নিতে অস্বীকার করে। ভারতের তরফেই তাঁদের সেনা মর্যাদায় শেষকৃত্য করা হয়েছিল। পাকিস্তানি শহিদ জওয়ানদের দেহের অ্যালবাম নিতেও সেনাস্তরীয় বৈঠকে অস্বীকার করে ওরা। সরকারিভাবে প্রত্যাখ্যান করলেও বৈঠকের বাইরে এসে অ্যালবামটি নিয়ে জানায় বাড়ির লোককে খবর দিয়ে দেব।
উল্লেখ্য, এই জাভেদ আখতারকেই ২০২৩ সালে লাহোরে নায়কোচিত স্বাগত জানানো হয়েছিল। কিন্তু, সেখানেও তিনি সন্ত্রাসবাদে মদত দেওয়ার জন্য ইসলামাবাদের মুখে কালি ছুড়ে মারেন। এক সাংবাদিকের প্রশ্নের জবাবে আখতার বলেছিলেন, তিনি যে শহরে থাকেন, সেই মুম্বইয়ে ২৬/১১ হামলা নিজের চোখে দেখেছিলেন। তাই তিনি পাকিস্তানি জঙ্গি মদতকে ঘৃণা করেন।