শেষ আপডেট: 30th January 2025 14:47
দ্য ওয়াল ব্যুরো: লিভ-ইন সম্পর্ককে সামাজিক ও পারিবারিক রক্ষাকবচ দিতে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারকে সর্বাত্মক আইন প্রণয়নের সুপারিশ করল রাজস্থান হাইকোর্ট। বুধবার রাজস্থান হাইকোর্টের জয়পুর বেঞ্চ এক তাৎপর্যমূলক রায়ে লিভ-ইন সম্পর্ককে আইনি তকমা দেওয়ার ব্যাপারে ভাবনাচিন্তার উপর গুরুত্ব আরোপ করেছে। আদালত বলেছে, ভারতের মতো দেশেও ধীরে ধীরে পশ্চিমী ধ্যানধারণার দরজা খুলে যাচ্ছে।
একটি মামলার শুনানিতে আদালত বলে, হিন্দু বিবাহ আইন এবং ইসলামে স্বীকৃত না হলেও লিভ-ইন সম্পর্কের গ্রহণযোগ্যতা বাড়ছে। ভারতীয় আইনে লিভ-ইন সম্পর্কের ব্যাপারে স্পষ্টভাবে কিছু না বলা থাকলেও সুপ্রিম কোর্ট কিছু মামলার রায়ে জানিয়েছে যে, সংবিধানের ২১ নম্বর ধারা অনুযায়ী স্বাধীন জীবনাচরণের অধিকার এবং ব্যক্তিগত স্বাধীনতার অধিকারে এ ধরনের সম্পর্ক অপরাধ নয়। হাইকোর্ট আরও বলেছে, যতক্ষণ না এ ধরনের সম্পর্ক নিয়ে যথাযথ আইন না আসছে, ততক্ষণ সরকার স্থাপিত কোনও কর্তৃপক্ষ বা ট্রাইব্যুনাল কর্তৃক লিভ-ইন সম্পর্কের নথিভুক্তিকরণ জরুরি।
বিচারপতি অনুপকুমার ঢান্ড তাঁর আদেশে বলেন, রাজস্থানের প্রতিটি জেলায় এই নথিভুক্তির জন্য একটি বিভাগ গঠন করতে হবে। এই কর্তৃপক্ষ বা ট্রাইব্যুনাল লিভ-ইন সম্পর্কঘটিত কোনও সমস্যা বা অভিযোগ মীমাংসায় দায়বদ্ধ থাকবে। বিশেষত লিভ-ইন সম্পর্কের ফলে সন্তানের জন্ম হয়, তাহলে সেই সন্তানের সামাজিক পরিচিতি ও মঙ্গলের জন্য পদক্ষেপ করতে দায়বদ্ধ থাকবে সেই বিভাগ।
এর জন্য আদালত একটি ওয়েবসাইট অথবা ওয়েব পোর্টাল খোলার প্রস্তাব দিয়েছে রাজ্য সরকারকে। যেখানে লিভ-ইন সংক্রান্ত যে কোনও ধরনের অভিযোগ পাঠানো যাবে। যার নিরিখে তাঁদের আইনি সহায়তা দেওয়া যাবে। আদালতের নির্দেশে এও রয়েছে যে, একটি সরকারি রেজিস্ট্রেশন ফরম্যাট তৈরি করতে হবে। যাতে যাঁরা লিভ-ইনে ইচ্ছুক তাঁরা সেই রেজিস্ট্রেশন করে রাখতে পারেন। নথিভুক্তির জন্য কিছু নির্দিষ্ট বিষয় পূরণ করতে হবে লিভ-ইনে যেতে চাওয়া যুগলকে।
যেমন- শিশুর দায়িত্ব পালনে অঙ্গীকার। অর্থাৎ যদি সম্পর্কের জেরে সন্তানের জন্ম হয়, তাহলে তার শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং সাধারণভাবে বড় করে তোলার নিজ নিজ দায়িত্ব ও কর্তব্য পালন করতে হবে। রক্ষণাবেক্ষণ- পুরুষ সঙ্গীকে অর্থ রোজগার না করা সঙ্গিনীকে আর্থিক সহায়তা দিয়ে যেতে হবে। যদি এরকম যুগলের সন্তান হয়, তাহলে তার দায়িত্বও নিতে হবে পুরুষ সঙ্গীকে। আদালতের এই নির্দেশের কপি রাজস্থানের মুখ্যসচিব ও আইন-বিচার বিভাগের প্রিন্সিপাল সেক্রেটারির কাছে পাঠানো হয়েছে। সরকার এ ব্যাপারে কী পদক্ষেপ করছে, তা ১ মার্চের মধ্যে জানাতে বলেছে আদালত।