দ্য ওয়াল ব্যুরো: নিয়ন্ত্রণরেখার ঠিক ওপারে পাক অধিকৃত কাশ্মীরে একের পর এক জঙ্গি তালিম শিবির চালাচ্ছে পাকিস্তান। যে তালিম শিবিরগুলির নেতৃত্ব দিচ্ছে পাক সেনাবাহিনীর শীর্ষ অফিসার ও আইএসআইয়ের গোপন কর্তারা। জঙ্গিদের হাতে কোনও পাকিস্তানি অস্ত্র সরাসরি পৌঁছাচ্ছে না। জঙ্গিদের দেওয়া হচ্ছে প্রধানত চিন ও আমেরিকায় তৈরি একেবারে অত্যাধুনিক স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্র।

এই কাজে আফগানিস্তানে ফেলে যাওয়া মার্কিন সেনাবাহিনীর অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র ভায়া পাকিস্তান জম্মু-কাশ্মীরের জঙ্গিদের হাতে তুলে দেওয়া হয়েছে। এমনই উদ্বেগজনক রিপোর্ট বেশ কিছুদিন আগেই এসেছিল ভারতীয় গোয়েন্দা বাহিনীর কাছে। ২০২১ সালে তালিবানের হাতে দায়িত্ব তুলে দিয়ে সেনা প্রত্যাহার করে আমেরিকা। কিন্তু, তখন বেশ কিছু অত্যাধুনিক অস্ত্র আর দেশে ফিরিয়ে নিয়ে যায়নি তারা। আর সেটাই জম্মু-কাশ্মীরে ঢুকছে বলে রিপোর্ট। একাজে সহায়তা করছে পাক চর সংস্থা আইএসআই।

পাক অধিকৃত কাশ্মীরে জঙ্গি তালিম দিচ্ছে পাকিস্তানি বাহিনী। রাষ্ট্রসঙ্ঘ সহ আন্তর্জাতিক দরবারে কয়েকশো বার এই দাবি করেছে ভারত। এরকম প্রামাণ্য ছবিও গোয়েন্দাদের হাতে এসেছে। এইসব ছবিতে দেখা গিয়েছে, ভারতে জঙ্গি ঢোকাতে  পাক অধিকৃত কাশ্মীরের সাধারণ মানুষকেও সামরিক প্রশিক্ষণ দিয়েছে পাক বাহিনী। সূত্রে জানা গিয়েছে, পাক অধিকৃত কাশ্মীরের কোটলি এলাকায় এরকম একটি জঙ্গি তালিম শিবির চালাচ্ছে পাকিস্তান সেনাবাহিনী। সেখানে স্থানীয় বাসিন্দাদের অস্ত্র প্রশিক্ষণের প্রমাণস্বরূপ ছবি এসেছে ভারতের হাতে।

জম্মুতে প্রচুর নদনদী আছে। এছাড়াও পাকিস্তান সীমান্তে ছোটখাট অসংখ্য নালা রয়েছে। বর্ষার সময় যেগুলিতে দুকূল পেরিয়ে জলের তোড় বয়ে চলে। সেই সুযোগই নিয়ে থাকে অনুপ্রবেশকারীরা। এছাড়াও পাহাড়ি তরাই অঞ্চল ও জঙ্গলে ঘেরা পরিবেশ জঙ্গিদের গা ঢাকা দেওয়ার আদর্শস্থল। ফলে জঙ্গিদের হদিশ পাওয়া দুষ্কর। সূত্রে জানা গিয়েছে, পাকিস্তান তালিমপ্রাপ্ত জঙ্গিদের জম্মু-কাশ্মীরে পাঠাচ্ছে যাদের মধ্যে স্পেশাল সার্ভিস গ্রুপের প্রাক্তন কমান্ডোরাও আছে। প্রতিটি গ্রুপকে অঢেল অস্ত্র ও টাকাপয়সা দিয়ে পাঠানো হচ্ছে। জঙ্গিদের এম ফোর রাইফেলের মতো মার্কিন অত্যাধুনিক স্বয়ংক্রিয় বন্দুক এবং চিনা বুলেট হাতে তুলে দিচ্ছে। অনুপ্রবেশে যারা পথ চিনিয়ে দিচ্ছে তাদের ১০ থেকে ৫০ হাজার টাকা দিচ্ছে পাকিস্তান।

সরকারি রিপোর্টেই জানা যায়, জঙ্গিরা আমেরিকায় তৈরি এম ফোর রাইফেল ব্যবহার করছে। কাঠুয়ায় এই বন্দুক দিয়েই হামলা চালানো হয়। ডোডা, পুঞ্চ ও রাজৌরি সেক্টরেও জঙ্গিরা এম ফোর ব্যবহার করেছিল। এমনকী পুলওয়ামাতেও জঙ্গিরা এম ফোর কার্বাইন ব্যবহার করেছিল। এগুলি থেকেই সংশয় করা হচ্ছে যে, আফগানিস্তানে আমেরিকার ফেলে যাওয়া অস্ত্র পাকিস্তান হয়ে জম্মু-কাশ্মীরে ঢুকছে। চিন ছাড়াও আমেরিকায় তৈরি বুলেটও উদ্ধার করেছে ভারতীয় বাহিনী। এছাড়া একে ৪৭ তো আছেই।

আফগানিস্তান ছেড়ে যাওয়ার সময় মার্কিন বাহিনী ছোট পিস্তল, স্বয়ংক্রিয় রিভলভার, গুলি, সাঁজোয়া গাড়ি এবং অত্যাধুনিক নজরদারি প্রযুক্তি ফেলে গিয়েছিল। এর অনেক কিছু নষ্ট করা সত্ত্বেও বহু মালপত্র তালিবান দখল করেছিল। সম্প্রতি আড়ি পেতে গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন সীমান্ত পেরিয়ে এইসব যুদ্ধাস্ত্র পাকিস্তানের রাস্তা ধরে কাশ্মীরে ঢুকেছে।