মোদী, হাসিনা এবং ইউনুস
শেষ আপডেট: 10th December 2024 10:05
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্কের উত্তেজনা কমাতে সোমবার ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্ত্রির ঢাকা সফর সফল হয়েছে বলে দু-দেশের সরকারই মনে করছে। ফরেন অফিস কনসালটেশনের বাৎসরিক রুটিন বৈঠক হলেও ঢাকায় দুই দেশই নিজের নিজের অবস্থান থেকে সম্পর্ক এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেছে। ভারতের বিদেশ সচিব বিক্রম মিস্রি যেমন বাংলাদেশে সংখ্যালঘুদের উপর নিপীড়ন, নির্যাতন বন্ধে সে দেশের সরকারকে দৃশ্যমান পদক্ষেপ করতে বলেছেন, তেমনই ঢাকার তরফে দিল্লিতে অবস্থানরত তাদের দেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার রাজনৈতিক বক্তব্য বন্ধে ব্যবস্থা নিতে ভারত সরকারকে অনুরোধ জানানো হয়েছে।
তাৎপর্যপূর্ণ হল, শেখ হাসিনাকে গ্রেফতার করে বাংলাদেশ পুলিশ তাদের হাতে তুলে দিতে ইন্টারপোল বা আন্তর্জাতিক পুলিশকে চিঠি দিলেও দু-দেশের মধ্যে বন্দি প্রত্যর্পণ চুক্তি থাকা সত্তেও সাবেক প্রধানমন্ত্রীকে ফেরানো নিয়ে বৈঠকে কোনও আলোচনা হয়নি।
কিন্তু বাংলাদেশ সরকার হাসিনাকে ফেরাতে চাইলে কী জবাব দিত ভারত? প্রসঙ্গ উত্থাপন না করেও সোমবার ঢাকায় দাঁড়িয়ে ভারতের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়ে এসেছেন বিদেশ সচিব মিস্রি। তিনি বলেছেন, ৫ অগাস্ট বাংলাদেশে রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পর ক্ষমতায় আসা অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে ভারতের কাজ করতে কোনও অসুবিধা নেই। বাণিজ্য, পরিকাঠামো উন্নয়ন, সাংস্কৃতিক বিনিময়-সহ সব বিষয়েই ভারত সম্পর্ক আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে আগ্রহী। সেই সঙ্গে তিনি বলেছেন, ভারত মনে করে না এমন কিছু ঘটেছে যা দু-দেশের সম্পর্কের মধ্যে এখনই ছাপ পড়তে পারে।
ভারতের কূটনৈতিক মহল মনে করছে, বিদেশ সচিব এই বক্তব্যের মধ্য দিয়ে বোঝাতে চেয়েছেন, ভারত সরকার যেমন বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নিপীড়নের ঘটনাগুলি নিয়ে আপত্তি, প্রতিবাদ চালিয়ে যাবে, পাশাপাশি স্বাভাবিক কূটনৈতিক সম্পর্ক রক্ষাতেও কোনও খামতি রাখবে না। একইভাবে শেখ হাসিনার দিল্লিতে আশ্রয় দেওয়ার সিদ্ধান্তে বাংলাদেশ প্রয়োজনের অতিরিক্ত আপত্তি জানাক, এটাও দিল্লির কাছে কাম্য নয়। বিক্রম মিস্রি এটাও বোঝাতে চেয়েছেন হাসিনাকে রেখেই বাংলাদেশের বর্তমান সরকারের সঙ্গে সম্পর্ক স্বাভাবিক করার রাস্তায় হাঁটবে নয়াদিল্লি।
তাৎপর্যপূর্ণ হল, বিক্রম মিস্রির সফরের আগে বাংলাদেশের সরকারি কর্তারাও সুর নরম করেন। ঢাকায় ভারতের হাই কমিশনার প্রণয় ভার্মার একটি মন্তব্যকে ইতিবাচক প্রতিক্রিয়া হিসাবে তুলে ধরে বাংলাদেশ সরকার রবিবারই ঘোষণা করে বিক্রম মিস্ত্রির সফরকে তারা ইতিবাচক আলোকে দেখছে। সোম ও মঙ্গলবার ঢাকার অধিকাংশ দৈনিকের রিপোর্টেও ইউনুস সরকারের মনোভাবের প্রতিফলন মিলিছে। সম্পর্কের বরফ গলাতে মিস্রির সফরকে কয়েক ধাপ অগ্রগতি বলে বর্ণনা করেছে তারা।