শেষ আপডেট: 3rd January 2025 18:00
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বাংলাদেশে ইসকনের সাধু চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের জামিন নামঞ্জুর হওয়ার তীব্র প্রতিক্রিয়া জানাল ভারত। শুক্রবার বিদেশমন্ত্রক এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, বাংলাদেশে ইসকনের সাধু চিন্ময়কৃষ্ণ দাস সহ সমস্ত গ্রেফতার হওয়া হিন্দু যেন স্বচ্ছ বিচার পান। এ ব্যাপারে নিশ্চিত করতে হবে সেদেশের তদারকি সরকারকে।
বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র রণধীর জয়সওয়াল এদিন এক সাংবাদিক সম্মেলনে বলেন, বাংলাদেশে চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের মুক্তির বিষয়ে আমাদের আশা যে, যারাই গ্রেফতার হয়েছেন, তাঁরা যেন স্বচ্ছ বিচার পান। আমাদের মূল ও একমাত্র আশা সেটাই। প্রসঙ্গত, ২০২৪ সালের ২৫ নভেম্বর থেকে চিন্ময়কৃষ্ণ গ্রেফতারির পরে জেলে রয়েছেন। এমনকী তাঁর সঙ্গে দেখা করতে গিয়ে গত ২৯ নভেম্বর ইসকনের আরও দুই সাধু গ্রেফতার হয়ে জেল রয়েছেন।
উল্লেখ্য, গত ২ জানুয়ারি চট্টগ্রামের আদালত চিন্ময়কৃষ্ণ দাসের জামিনের আর্জি ফের খারিজ করে দেয়। চিন্ময়কৃষ্ণকে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় গ্রেফতার করেছিল মহম্মদ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ অন্তর্বর্তী সরকারের পুলিশ। তারপর থেকে তিনি জেলেই রয়েছেন। এর আগে একাধিকবার তাঁর জামিনের আবেদন খারিজ হয়েছে। বৃহস্পতিবার এই মামলার শুনানিতে আশা করা হয়েছিল যে, তিনি ছাড়া পেতে পারেন। কিন্তু, চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা বিচারক মহম্মদ সইফুল ইসলামের আদালত দুই পক্ষের আইনজীবীর বক্তব্য শোনার পর জামিনের আবেদন খারিজ করে দেন।
বুধবার রাতে ঢাকা থেকে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের বারোজন আইনজীবী চট্টগ্রাম যান। বৃহস্পতিবার তাঁরা চিন্ময়ের হয়ে সওয়াল করেন। তাঁরা বলেন, চিন্ময়কৃষ্ণ একজন সাধু। তিনি দাগি আসামি নন। তাছাড়া কারাগারে তিনি একাধিকবার অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। তাঁর চিকিৎসা দরকার। সরকার পক্ষের আইনজীবীরা পাল্টা বলেন, চিন্ময়কৃষ্ণের নাম দেশদ্রোহিতা ছাড়াও আরও কয়েকটি মামলা রয়েছে। পুলিশের তদন্ত এখনও শেষ হয়নি। এই অবস্থায় তাঁকে জামিন দেওয়া হলে তদন্ত বিঘ্নিত হবে।
চিন্ময়ের নাম ইতিমধ্যে একটি হত্যা মামলায় জড়ানো হয়েছে। গত ২৭ নভেম্বর চট্টগ্রাম আদালত চত্ত্বরে খুন হন তরুণ আইনজীবী শাইফুল ইসলাম। তাঁকে চিন্ময়ের অনুগামীরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ করা হয়েছে এফআইআরে। সেই মামলায় পরে সম্মিলিত হিন্দু জাগরণ ঐক্য মঞ্চের আহ্বায়ক চিন্ময়ের নাম যুক্ত করা হয়। বৃহস্পতিবার চিন্ময়ের জামিন মামলার শুনানির কারণে চট্টগ্রাম আদালতে ছিল নজিরবিহীন নিরাপত্তা। পুলিশ ছাড়াও মোতায়েন করা হয় সেনা এবং বিজিবির জওয়ানদের। আদালতে প্রবেশের সময় প্রত্যেকের পরিচয়পত্র যাচাই করা হয়। চিন্ময় অনুগামীদের আদালত এলাকায় ঘেঁষতে দেওয়া হয়নি।