শেষ আপডেট: 8 May 2025 17:27
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বুধবার ভোর রাতে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের (POK) ৯টি জায়গায় জঙ্গি ঘাঁটি উড়িয়ে দেওয়ার পর নয়াদিল্লি জানিয়েছিল, ভারত উত্তেজনা আর বাড়াতে চায় না। পাকিস্তানের কোনও সামরিক ঘাঁটিতে তাই হানা দেওয়া হয়নি। কিন্তু ইসলামাবাদ যে এই বেইজ্জতি চুপচাপ মেনে নেবে না, তার দেওয়াল লিখন স্পষ্টই ছিল। হলও তাই বৃহস্পতিবার ভোর থেকে ভারতের ১৫টি শহরকে নিশানা করল পাকিস্তান। পাকিস্তান থেকে চালানো ড্রোন ও ক্ষেপণাস্ত্র (Pakistan Drone Attack) হামলার জবাব দিলও ভারতও(India)। দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা জোরদার রেখে পাকিস্তানের একাধিক সামরিক ঘাঁটিতে পাল্টা আঘাত হানে ভারতের সশস্ত্র বাহিনী।
ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানায়, পাকিস্তানের লক্ষ্য ছিল উত্তর ও পশ্চিম ভারতের অন্তত ১৫টি সামরিক ঘাঁটি (15 Cities in India)। তবে ভারতের ‘ইন্টিগ্রেটেড কাউন্টার ইউএএস গ্রিড’ ও এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম সেই সব আক্রমণ রুখে দেয়। পাল্টা হামলায় লাহোরে একটি বিমান প্রতিরক্ষা রাডার (Lahore air defence radar) ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়েছে।
সাউথ ব্লক জানিয়েছে, হামলার লক্ষ্যে ছিল জম্মু-কাশ্মীরের অবন্তিপুরা, শ্রীনগর, জম্মু ছাড়াও পাঞ্জাব ও রাজস্থানের একাধিক গুরুত্বপূর্ণ সামরিক এলাকা। পঠানকোট, অমৃতসর, কপুরথলা, জলন্ধর, লুধিয়ানা, আদমপুর, ভাটিন্ডা, চণ্ডীগড়, নাল, ফলোদি, উত্তরলাই এবং গুজরাতের ভুজ—সব কটি এলাকাতেই পাকিস্তান হামলার চেষ্টা চালালেও তাতে সফল হয়নি।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়েছে, হামলার সূত্র নির্ধারণে উদ্ধার হওয়া ধ্বংসাবশেষ বিশ্লেষণ করে নিশ্চিত হওয়া গেছে যে এই আক্রমণের উৎস পাকিস্তান। তারই জবাবে বৃহস্পতিবার সকালেই ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী পাকিস্তানের একাধিক প্রতিরক্ষা কাঠামোয় হামলা চালায়। এর মধ্যে লাহোরের একটি গুরুত্বপূর্ণ এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম পুরোপুরি নিষ্ক্রিয় করে দেওয়া হয়েছে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের বিবৃতিতে বলা হয়, “আজ সকালেই ভারতীয় বাহিনী পাকিস্তানের একাধিক জায়গায় এয়ার ডিফেন্স রাডার ও সিস্টেম টার্গেট করেছে। পাকিস্তান যেভাবে হামলা চালিয়েছিল, ভারতও সেই মাত্রায় ও সমতুল জবাব দিয়েছে।”
এই ঘটনার পাশাপাশি, জম্মু-কাশ্মীরের কুপওয়ারা, বারামুলা, উরি, পুঞ্চ, মেন্ধার এবং রাজৌরি সেক্টরে পাকিস্তানের তরফে বিনা উসকানিতে মর্টার ও গোলাবর্ষণ চালানো হয়। এতে এখনও পর্যন্ত ১৬ জন সাধারণ নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে, যাদের মধ্যে তিনজন মহিলা ও পাঁচজন শিশু রয়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ভারত বাধ্য হয়ে প্রত্যাঘাত করতে বাধ্য হয়।
এই সামরিক উত্তেজনার সূত্রপাত হয় ২২ এপ্রিল পহেলগাম জঙ্গি হামলার পর থেকেই। সেই হামলায় প্রাণ হারান ২৬ জন নিরীহ মানুষ। তার জবাবে ভারত চালায় ‘অপারেশন সিঁদুর’। বুধবার রাত ১টা ৪ মিনিট থেকে ১টা ৩০ মিনিট পর্যন্ত এই অভিযানে পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরের নয়টি স্থানে জঙ্গি ঘাঁটিতে নিশানা করে এয়ার স্ট্রাইক চালানো হয়।
‘মার্কাজ সুবহান আল্লাহ’ (বাহাওয়ালপুর) ও মুরিদকে-র মতো জায়গাগুলিতে ধ্বংসের ছবি ধরা পড়েছে স্যাটেলাইট ইমেজে। মার্কিন সংস্থা ম্যাক্সার টেকনোলজির প্রকাশিত স্যাটেলাইট ছবিতে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে, নির্দিষ্ট গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতেই অত্যন্ত নিখুঁত ভাবে এই স্ট্রাইকগুলি চালানো হয়েছে।
তবে এখন যে পরিস্থিতি বিষয়টি পৌঁছেছে তাতে স্পষ্ট যে এই উত্তেজনা এখনই থামার নয়। ইসলামাবাদ ফের হামলার চেষ্টা করতে পারে। তার জবাব দিতে তৈরি রয়েছে নয়াদিল্লিও।