নরেন্দ্র মোদী ও প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম।
শেষ আপডেট: 11 May 2025 13:16
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ভারত পাক যুদ্ধবিরতি (India Pakistan latest update) নিয়ে কড়া ভাষায় মোদী সরকারের সমালোচনা করেছেন প্রবীণ ভূ-কৌশলবিদ ব্রহ্ম চেল্লানি (Brahma Chellaney)। এও বলেছেন, ভারত যখন কৌশলগতভাবে সুবিধাজনক অবস্থানে ছিল, তখন উল্টো পথে হাঁটল। যুদ্ধবিরতির পথে হেঁটে “জয়ের মুখ থেকে হার ছিনিয়ে আনল” ভারত। কিন্তু চেল্লানি এ কথা বললেও নরেন্দ্র মোদীর প্রজ্ঞা ও বুদ্ধিমত্তার তারিফ করলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী পি চিদম্বরম। মোদী জমানায় যাঁকে প্রায় সাড়ে তিন মাস জেল হেফাজতে থাকতে হয়েছে।
চিদাম্বরমের কথায় “প্রধানমন্ত্রী একটি সম্ভাব্য বৃহত্তর যুদ্ধের ঝুঁকি আন্দাজ করতে পেরেছেন এবং সীমিত লক্ষ্য নির্ধারণ করে সংযত প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছেন – এটি ছিল বুদ্ধিদীপ্ত পদক্ষেপ।”
চিদাম্বরম আরও বলেছেন, পাকিস্তানের চারটি এবং পাকিস্তান অধিকৃত কাশ্মীরের পাঁচটি জঙ্গিঘাঁটি লক্ষ্য করে ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র ও ড্রোন হামলা ছিল সুনির্দিষ্ট ও সুপরিকল্পিত। কোনো জনবসতি বা পাকিস্তানের সামরিক ঘাঁটি আক্রমণ না করে কেবল জঙ্গি পরিকাঠামো ধ্বংস করা হয়েছে। তাঁর ভাষায়, “একটি আক্রান্ত দেশের বৈধ প্রতিক্রিয়া হিসেবেই এই অভিযানের ব্যাখ্যা দেওয়া যায়।”
পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে কিছু জঙ্গি নেতা মারা গেলেও, জঙ্গি সংগঠনগুলোর মূল নেতৃত্ব এখনও সক্রিয় বলেই মন্তব্য করেছেন চিদাম্বরম। তিনি সতর্ক করে বলেন, “পাকিস্তানে এখনও এমন বহু যুবক রয়েছেন, যারা প্রশিক্ষণ নিয়ে ভারতে সন্ত্রাস চালাতে প্রস্তুত। যতদিন পাকিস্তানের সেনা নেতৃত্ব এবং আইএসআই প্রভাবশালী থাকবে, ততদিন ভারতের নিরাপত্তার ঝুঁকি থেকে যাবে।”
চিদাম্বরম এ-ও স্বীকার করেছেন যে, কোনও সশস্ত্র সংঘাতে উভয় পক্ষেরই প্রাণহানি ও সম্পদের ক্ষয় অনিবার্য। তিনি সীমান্তে ভারতীয় নাগরিকদের মৃত্যু প্রসঙ্গে দুঃখপ্রকাশ করে বলেন, “দুর্ভাগ্যজনক হলেও, কিছু ক্ষয়ক্ষতি এড়ানো যায় না।”
প্রধানমন্ত্রীর যুদ্ধবিরতির সিদ্ধান্তের পক্ষে মত দিয়েছেন কংগ্রেস সাংসদ শশী থারুরও। তিনি বলেন, “ভারতের উদ্দেশ্য ছিল সন্ত্রাসবাদীদের শিক্ষা দেওয়া – এবং সেই লক্ষ্য পূরণ হয়েছে। এই যুদ্ধ দীর্ঘস্থায়ী করার কোনও উদ্দেশ্য ছিল না। এখন সরকারের উচিত পহেলগামে আক্রমণের সঙ্গে যুক্ত অপরাধীদের চিহ্নিত করে বিচারের আওতায় আনা।”
যুদ্ধবিরতি ঘোষণার পরও পাকিস্তান ফের গোলাবর্ষণ শুরু করে। জম্মু ও কাশ্মীরের বারামুল্লা জেলায় বিস্ফোরণ ঘটে, রাজৌরি ও আরএস পুরা সেক্টরে দেখা যায় ড্রোন ও কামান হামলার ঘটনা। চারটি ড্রোন সেনা সদর দফতরের কাছে এসে পড়েছে বলে জানা গেছে।
চিদাম্বরম প্রধানমন্ত্রী মোদির কিছু বিষয়ে সমালোচনাও করেন – বিশেষত, পহেলগাম হামলার পর কাশ্মীরে প্রধানমন্ত্রীর অনুপস্থিতি ও ২৪ এপ্রিল ও ৭ মে আয়োজিত সর্বদলীয় বৈঠকে তাঁর অনাগ্রহের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, “২০২৩ সালের মণিপুর সংঘর্ষের সময়ে তাঁর প্রতিক্রিয়ার অভাবের সঙ্গে এই নীরবতার অস্বস্তিকর মিল রয়েছে।”