শেষ আপডেট: 15th April 2025 10:38
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ব্যাঙ্ক প্রতারণার (Bank Fraud) মামলায় ধৃত হিরে ব্যবসায়ী (diamond trader) মেহুল চোকসীকে (Mehul Choksi) দেশে ফেরাতে জোর তৎপরতা শুরু করেছে ভারত। ইতিমধ্যে বেলজিয়াম সরকারকে (Belgium government) চিঠি দিয়েছে নয়াদিল্লির পররাষ্ট্র মন্ত্রক (ministry of external affairs, government of India) ।
অন্যদিকে, মেহুলের আইনজীবী বেলজিয়ামের আদালতে আর্জি জানিয়েছেন, তাঁর আইনজীবী গুরুতর অসুস্থ। ক্যানসারে আক্রান্ত (cancer patient) তিনি। হাসপাতাল থেকেই তাঁকে গ্রেফতার করা হয়। এই অবস্থায় তাঁকে যেন ভারত সরকারের হাতে তুলে না দেওয়া হয়।
একাধিক গোয়েন্দা এজেন্সি সুত্রের খবর, গ্রেফতারের সম্ভাবনা আঁচ করে মেহুল সুৎজারল্যান্ডে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেছিল। সেই তথ্য বেলজিয়াম কর্তৃপক্ষকে আগাম জানিয়েছিল ভারতীয় গোয়েন্দারাই। সিবিআইয়ের গ্লোবাল অপারেশন ইউনিট তাঁর পরিকল্পনার কথা জানায় বেলজিয়াম কর্তৃপক্ষকে।
বেলজিয়ামের আইনি প্রক্রিয়া এবং সরকারি নিয়মকানুন মেনে কবে মেহুকে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ হাতে পেতে পারে এখনই স্পষ্ট নয়। পাঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাঙ্কের ১৩ হাজার কোটি টাকা তছরুপের অভিযোগে ধৃত এই গুজরাতি ব্যবসায়ীকে হাতে পেতে ভারত সরকার ১২৫ বছরের পুরনো একটি চুক্তি কাজে লাগিয়েছে।
১২৫ বছর আগে, ১৯০১ এক সালে তৎকালীন ব্রিটিশ সরকারের সঙ্গে চুক্তি হয়েছিল বেলজিয়ামের। ভারত তখন ছিল ব্রিটেনের অধীনে। স্বাধীনতা প্রাপ্তির পর ভারত ও বেলজিয়াম পরস্পরের মধ্যে চিঠি আদানপ্রদান করে চুক্তিটি বহাল রাখে।
ওই প্রত্যর্পণ চুক্তির বৈশিষ্ট্য হল: দ্বৈত অপরাধমূলকতা (Dual Criminality) প্রত্যর্পণের একটি প্রধান শর্ত। এর অর্থ, যেই অপরাধের জন্য অভিযুক্ত ব্যক্তিকে প্রত্যর্পণ করা হচ্ছে, সেটি উভয় দেশেই শাস্তিযোগ্য অপরাধ হতে হবে।
যে দেশ প্রত্যর্পণ চাইছে, তাদেরকে অপরাধীর বিরুদ্ধে যথেষ্ট ও শক্ত প্রমাণ পেশ করতে হবে—হয় পূর্বে দণ্ডিত হওয়ার, অথবা বিচার হওয়ার মতো পর্যাপ্ত তথ্য। আবার কোনও দেশই তাদের নিজস্ব নাগরিককে প্রত্যার্পণ করতে বাধ্য নয়। যদি কোনো প্রত্যর্পণ অনুরোধ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বা রাজনৈতিক অপরাধের জন্য হয়ে থাকে, তবে তা প্রত্যাখ্যান করা যেতে পারে।
চুক্তি অনুযায়ী, প্রত্যর্পণ প্রক্রিয়ার জন্য নির্দিষ্ট সময়সীমা নির্ধারিত আছে। অভিযুক্ত ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার করার ১৪ দিনের মধ্যে যদি আনুষ্ঠানিক অনুরোধ না করা হয়, তবে তাকে মুক্তি দেওয়া যেতে পারে। একইভাবে, গ্রেফতারের দুই মাসের মধ্যে যদি যথেষ্ট প্রমাণ না দেওয়া হয়, তবে তাকেও মুক্তি দেওয়া হতে পারে।
প্রত্যার্পিত ব্যক্তিকে প্রত্যার্পণের পরে নতুন কোনও অপরাধের জন্য বিচার করা যাবে না। তাছাড়া, তাকে তৃতীয় কোনও দেশে পাঠানো যাবে না, যদি না তার নিজ দেশের অনুমতি পাওয়া যায়।
মেহুল চোকসির ক্ষেত্রে ভারত ২০২৪ সালের আগস্টে বেলজিয়াম থেকে তাঁকে প্রত্যার্পণের অনুরোধ জানিয়ে রেখেছে। যখন সিবিআইয়ের গ্লোবাল অপারেশন সেন্টার তাকে অ্যান্টওয়ার্পে শনাক্ত করে। এখন তিনি গ্রেপ্তার হওয়ায় ভারতীয় সংস্থাগুলি আনুষ্ঠানিকভাবে বেলজিয়ামকে প্রত্যার্পণের অনুরোধ জানিয়েছে। ওই হিরে ভারতীয় দণ্ডবিধির একাধিক ধারায় অভিযুক্ত করে। চোকসির বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ১২০ (বি): অপরাধমূলক ষড়যন্ত্র, ২০১: প্রমাণ লোপাট। ৪০৯: বিশ্বাসভঙ্গ ৪২০: প্রতারণা, ৪৭৭এ: হিসাব জালিয়াতি, এছাড়াও দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ধারা ৭ ও ১৩ (ঘুষ নেওয়া ও দুর্নীতিমূলক কার্যকলাপ)-এর ধারায় মামলা হয়েছো।