উপগ্রহগুলির তোলা ছবি থেকেই নির্দিষ্ট করা হয়েছিল পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে থাকা জয়েশ-ই-মহম্মদ, লস্কর-ই-তোইবা ও হিজবুল মুজাহিদিনের জঙ্গি ঘাঁটিগুলিকে।
গোটা প্রকল্পটি শেষ করে ফেলা হবে ২০২৯ সালের আগে।
শেষ আপডেট: 30 June 2025 10:16
দ্য ওয়াল ব্যুরো: অপারেশন সিঁদুরের সময় গোটা দুনিয়া দেখেছে, কাকে বলে বৈদ্যুতিন যুদ্ধকৌশল। সিগন্যাল জ্যাম করা, রাডারের চোখে ধুলো দেওয়ার কৌশল। ভারত প্রায় ২২ মিনিট যাবৎ পাকিস্তানের প্রতিরক্ষা বিভাগের সমস্ত সিগন্যাল নিজের কবজায় নিয়ে নিয়েছিল। আর এই ২২ মিনিটেরই খেলায় পাকিস্তানের মুখ ভোঁতা করে দিয়েছে ভারতের বিমানবাহিনী। এই অসম্ভব কাজকে সম্ভব করে তুলেছে দেশের বৈদ্যুতিন যুদ্ধ। যার মূল হাতিয়ারগুলি ঘুরছে মহাকাশে। দেশের চর উপগ্রহগুলির কেরামতিতেই এটা সম্ভবপর হয়েছিল।
এই উপগ্রহগুলির তোলা ছবি থেকেই নির্দিষ্ট করা হয়েছিল পাকিস্তান ও পাক অধিকৃত কাশ্মীরে থাকা জয়েশ-ই-মহম্মদ, লস্কর-ই-তোইবা ও হিজবুল মুজাহিদিনের জঙ্গি ঘাঁটিগুলিকে। তাদের একেবারে সঠিক আস্তানার সুলুক সন্ধান। উপগ্রহের ছবি ও গোয়েন্দাদের তথ্য মিলিয়ে খোঁজ মিলেছিল বাহাওয়ালপুর, মুজফফরাবাদ, কোটলি ও সিয়ালকোটের ঘাঁটি। পহলগাম কাণ্ড ও অপারেশন সিঁদুর থেকে শিক্ষা নিয়ে এবার ভারত আধুনিকোত্তর যুগের যুদ্ধ কৌশলকে আরও শক্তিশালী করার দিকে এগতে চাইছে।
প্রতিরক্ষা ও বিভিন্ন সূত্র মারফত জানা গিয়েছে, চিন ও পাকিস্তানকে নজরবন্দি করতে ভারত ৫২টি গুপ্তচর উপগ্রহ পাঠানোর কাজ খুব দ্রুতগতিতে শুরু করেছে। এগুলির কাজ হবে দুনিয়ার বিভিন্ন দেশ ছাড়াও বিশেষ করে দক্ষিণ এশিয়ার প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত খবরাখবর তুলে দেওয়া। এমনকী এগুলিকে এমনভাবে তৈরি করা হচ্ছে যে, প্রয়োজন পড়লে উপগ্রহকে সামরিক উদ্দেশ্যেও ব্যবহার করা যেতে পারে।
মহাকাশ নজরদারিতে জোর দিতে গতবছর অক্টোবরে ভারত সরকার ২৬,৯৬৮ কোটি টাকার বিশাল বাজেট পাশ করেছিল। সেই প্রকল্পেরই অন্তর্গত এই উপগ্রহগুলি। এই প্রকল্পে ইসরো (ISRO) পাঠাবে ২১টি উপগ্রহ। এছাড়া তিনটি বেসরকারি সংস্থা বাকি ৩১টি উপগ্রহ তৈরি ও উৎক্ষেপণের দায়িত্বে থাকবে। এর প্রথম দফায় উপগ্রহ ছাড়া শুরু হবে আগামী বছরের এপ্রিল মাস থেকে। এবং গোটা প্রকল্পটি শেষ করে ফেলা হবে ২০২৯ সালের আগে।
প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের অন্তর্গত ইন্টিগ্রেটেড ডিফেন্স স্টাফ (IDS) এই প্রকল্পের তদারকিতে থাকছে। এই উপগ্রহগুলির কাজই থাকবে চিন, পাকিস্তান ও ভারত মহাসাগরীয় এলাকায় চিল-নজর রাখা। উপগ্রহ চিত্রের ছবি দেখেই দেশের প্রতিরক্ষা বিভাগের কাজকর্মের সুবিধা হবে। আরও অনেক বেশি তথ্য হাতে আসবে সীমান্ত এলাকা সম্পর্কে।