অরবিন্দ কেজরিওয়াল
শেষ আপডেট: 30 July 2024 02:49
দ্য ওয়াল ব্যুরো: দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়ালের মুক্তির দাবিতে মঙ্গলবার ধরনা, বিক্ষোভে শামিল হচ্ছে ইন্ডিয়া জোটের সঠিক দলগুলি। আম আদমি পার্টির অনুরোধ মেনে কংগ্রেস, তৃণমূল, সিপিএম, ডিএমকে, সমাজবাদী পার্টি এবং ছোট-বড় আরও অনেক দল মঙ্গলবার দফায় দফায় যন্তর মন্তরে বিক্ষোভ সমাবেশে শামিল হবে।
আপ নেতৃত্ব আশা করছে, বিরোধী দলনেতা রাহুল গান্ধী তাদের পাশে থাকবেন। যদিও কংগ্রেস সূত্র এখনও রাহুলের উপস্থিতি নিয়ে কোন কথা বলেনি।
কেজরিওয়াল এখনও দিল্লির তিহাড় জেলে বন্দি। সোমবারও তাঁর জামিনের আবেদন নিয়ে দিল্লি হাই কোর্টে দীর্ঘ শুনানি হয়। ইডির মামলায় তিনি জামিন পেয়েছেন। কিন্তু সিবিআই তাঁকে গ্রেফতার করার পর নতুন করে আরও একটি জামিনের আবেদন তাঁকে করতে হয়েছে। সেই মামলায় সোমবার সিবিআই আদালতে জানায় কেজরিওয়ালকে মুক্তি দিলে মদ কেলেঙ্কারি তদন্ত বিঘ্নিত হবে। কারণ এজেন্সির দাবি গোটা দুর্নীতির পেছনে মাস্টারমাইন্ড হলেন দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী। তিনি একদিকে মুখ্যমন্ত্রী, অন্যদিকে আপের প্রধান হিসেবে প্রভাব খাটিয়েছেন এবং সরাসরি দুর্নীতির টাকা আপের ভোট-তহবিলে জমা হয়েছে।
সিবিআইয়ের দাবি, এই ধরনের দুর্নীতি ভারতে নজিরবিহীন। এর আগে আদালতে একই দাবি করেছিল ইডি৷ তারাও বলে কেজরিওয়ালকে জেলে আটকে রেখেই তদন্ত সম্পূর্ণ করতে চায় তারা। কিন্তু সুপ্রিম কোর্ট ইডির দাবি খারিজ করে দিয়ে কেজরিওয়ালকে জামিন দিয়ে দেয়। এখন সিবিআইয়ের জামিন মামলার শুনানি চলছে হাই কোর্টে। উচ্চ আদালত যদি জামিন না দেয় তাহলে দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীকে শীর্ষ আদালতে যেতে হবে। সেখানে তাঁর জামিন পাওয়ার সম্ভাবনাই বেশি বলে মনে করছে আপ নেতৃত্ব। তবে সেটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া
এদিকে কেজরিওয়ালের শারীরিক অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে। এই পরিস্থিতিতে সংসদ চলাকালীন আপ নেতারা দিল্লিতে ধরনা-বিক্ষোভের আয়োজন করেছে। আপের শীর্ষ নেতা সঞ্জয় সিংয়ের আশা, তাঁদের নেতার জামিনের দাবিতে জমায়েত ঘিরে মঙ্গলবার ইন্ডিয়া জোটের ঐক্য তুলে ধরা সম্ভব হবে।
গত সপ্তাহেই তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দিল্লিতে কেজরিওয়ালের বাড়ি গিয়ে তাঁর স্ত্রী ও মায়ের সঙ্গে দেখা করে পাশে থাকার বার্তা দিয়ে এসেছেন। আপ নেতাদের আশা রাহুল গান্ধীর উপস্থিতি অত্যন্ত জরুরি।।সোমবার বিরোধী দলনেতা হিসেবে তাঁর বাজেট ভাষণে রাহুল ইডি-সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে অতি সক্রিয়তার অভিযোগ করলেও কেজরিওয়াল প্রসঙ্গ এড়িয়ে যাওয়ায় বম আদমি পার্টির নেতারা খানিক অসন্তুষ্ট। তবে এটা রাহুলের ইচ্ছাকৃত সিদ্ধান্ত কিনা সে ব্যাপারে আপ নিশ্চিত নয়। তাই প্রকাশ্যে তারা কোন বিবৃতি দিচ্ছে না।
কেজরিওয়াল জেলে থাকায় মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে দিল্লির কাজকর্ম ক্রমশ বিঘ্নিত হচ্ছে। আপের আশঙ্কা মুখ্যমন্ত্রীর অনুপস্থিতিতে রাজধানীর প্রশাসন ভেঙে পড়েছে এমন অভিযোগ তুলে কেন্দ্রীয় সরকার দিল্লিতে রাষ্ট্রপতি শাসন জারি করে দিতে পারে। আপের এক শীর্ষ নেতার কথায়, আসলে বিজেপি কেজরিওয়ালকে জেলে আটকে রেখে বাধ্য করতে চাইছে তিনি যাতে মুখ্যমন্ত্রীর পদ থেকে ইস্তফা দেন। অন্যদিকে কেজুয়াল পদত্যাগ না করে জেলে চলে গিয়ে দেখাতে চাইছেন তাঁকে বিনা অপরাধে আটকে রাখা হয়েছে। তাঁর আইনজীবীরাও নিশ্চিত হেমন্ত সরেনের মতো দিল্লির মুখ্যমন্ত্রীও জামিন পাবেন। কিন্তু আইনি এবং রাজনৈতিক লড়াই কতদিন চলবে তা নিয়ে কেউ নিশ্চিত হতে পারছেন না।