শেষ আপডেট: 4th March 2025 20:12
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বিবাহিত মহিলার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়েছিলেন। কিন্তু তার পরিণতি যে এত ভয়ঙ্কর হবে, তা কে জানত? প্রেমিকার (Girlfriend) লাগাতার হুমকিতে শেষমেশ আত্মহত্যার পথ বেছে নিলেন উত্তরপ্রদেশের (Uttar Pradesh) উন্নাওয়ের বাসিন্দা এক যুবক।
পুলিশ সূত্রে খবর, যুবক যোগীরাজ্যের উন্নাওয়ের বাসিন্দা হলেও কর্মসূত্রে মহারাষ্ট্রের ঠানেতে ছিলেন। সেখানেই আত্মহত্যা করেন তিনি। তবে মৃত্যুর আগে আলতাফ নিজের ফোনে একটি ভিডিও রেকর্ড করে গিয়েছেন। তা দেখেই চোখ কপালে উঠেছে তদন্তকারীদের। ভিডিওতে আলতাফকে বিষপান করতে এবং নিজের হাতের কব্জি কেটে দড়িতে ঝুলতে দেখা গিয়েছে।
আলতাফ তাঁর শেষ মুহূর্তগুলি ভিডিও করেছেন, যেখানে তাঁকে কব্জি কেটে, ফাঁসিতে ঝুলতে এবং বিষ পান করতে দেখা যাচ্ছে। তবে মৃত যুবকের পরিবারের অভিযোগ, তাঁদের কোনও কথাই শোনা হচ্ছে না। মামলা কার দখলে যাবে তা নিয়ে একে অপরের কোর্টে বল ঠেলছে উন্নাও ও ঠানে পুলিশ। ছেলের মৃত্যুর সঠিক বিচারের দাবিতে সরব হয়েছেন তাঁরা।
পরিবার সূত্রে খবর, যুবক থানেতে দর্জির কাজ করতেন এবং গত বছর মায়ের মৃত্যুর পর বাড়ি ফিরে আসেন। এরপর তাঁকে সবাই বাড়ির কাছেই উন্নাওতে থেকে কাজ করতে বলে। কিন্তু কিছুদিনের মধ্যেই পাড়ার এক বিবাহিত মহিলার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন যুবক। বিষয়টি পরিবারের লোকরা জানতে পারলে আলতাফকে ধ্মক দিয়ে ফের ঠানেতে পাঠিয়ে দেওয়া হয় বলে খবর।
তবে উন্নাও ছাড়লেও আলতাফের পিছু ছাড়েননি ওই মহিলা। দিনের বেশিরভাগ সময় তাঁকে ফোন করে হুমকি দিত বলে অভিযোগ। আলতাফের বোন জানান, মহিলা গর্ভবতী হয়ে পড়েছে বলে দাদার কাছে ১ লাখ টাকা চেয়েছিল। তা না দিলে মিথ্যা মামলায় তাঁকে জেলে পাঠানোর ধমকিও দেওয়া হয়। যার জেরে আলতাফ এমন কাণ্ড ঘটিয়ে বসেন।
তিনি আরও জানিয়েছেন, মৃত্যুর আগে আলতাফ ওই মহিলাকে ভিডিও কল করে বলেছিলেন যে তাঁর কারণে তিনি কষ্ট পাচ্ছেন। উল্টে মহিলা তাঁকে পরিষ্কার জানিয়ে দেয়, সে মরে গেলে তার কিছু এসে যায় না। কারণ তাঁর স্বামী আছেন এবং তিনি মারা গেলে কিছুই হারাবেন না।
রেশমা বলেন, আলতাফের মৃত্যুর চার দিন পর, মহারাষ্ট্র পুলিশ তাঁদের পরিবারকে খবর দেয়। এরপরই পরিবারের লোকরা ঠানে গিয়ে তাঁকে কবর দেন। এদিকে মহারাষ্ট্র পুলিশের কাছে অভিযোগ জানাতে গেলে জানিয়ে দেওয়া হয় মামলাটি উন্নাও পুলিশের আওতাধীন। তাঁদের ফিরে যেতে বলা হয়।
এরপর এলাকায় ফিরে এসে স্থানীয় থানায় অভিযোগ দায়ের করতে গেলে উন্নাও পুলিশ জানায় এই কেসে তাঁরা কোনও সাহায্য করতে পারবেন না। ফলে তাঁদের মহারাষ্ট্র পুলিশের কাছেই অভিযোগ জানাতে হবে। এমনকি অভিযুক্ত মহিলাকে ধরে নিয়ে থানায় গেলেও পুলিশ কোনও কথা শুনতেই চায়নি বলে অভিযোগ।
মৃত্যুর আগে রেকর্ড করা ভিডিওতে আলতাফকে বলতে শোনা গিয়েছে, "এভাবে আমি নিজেকে শেষ করে দেব। আমি অনেক দিন বেঁচে আছি। জীবনে আর নেই।" ভিডিওতে ছুরি দিয়ে তাঁর হাত কাটার বিষয়টিও নজরে আসে। যুবককে বলতে শোনা যায়, "আমি ইঁদুর মারার বিষ খাচ্ছি। আমার কষ্ট হচ্ছে। আমার পরিবারকে জানাও।" ভিডিওতে দেখা যায়, বিষ খাওয়ার পরপরই তার মুখ থেকে ফেনা বেরোতে শুরু করে।
ভিডিওতে আলতাফকে বলতে শোনা যায় "আমি নাটক করছি না। আমি কষ্ট পাচ্ছি। তুমি এটা কেন বুঝতে পারছো না। আমি আমার রক্ত নিয়ে খেলছি। এটা নাটক নয়। যদিও পাল্টা ওই মহিলা আলতাফকে উত্তর দেন, এখানে তার কিছুই করার নেই।