শেষ আপডেট: 1st November 2024 10:46
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মহারাষ্ট্রে বিধানসভার ভোটে রাজ্যের ২৮৮ আসনের এক চতুর্থাংশেই বিজেপি ও কংগ্রেসের মধ্যে সরাসরি লড়াই হচ্ছে। রাজ্যে শাসক ও বিরোধী জোটের মধ্যে আসন ভাগাভাগি চূড়ান্ত হয়ে গিয়েছে। ফলে বিধানসভার ভোটের ফলাফলে ওই চার ভাগের এক ভাগ আসনের ফলাফলের উপর নির্ভর করবে আগামী পাঁচ বছর কারা রাজ্য শাসন করবে।
বিজেপির লক্ষ্য এবারও শতাধিক আসনে জিতে একক বৃহত্তম দল হওয়া। কিন্তু বর্তমান ফরমুলা মেনে জোটের মুখ শিবসেনার নেতা একনাথ শিন্ডেকেই ফের মুখ্যমন্ত্রী করা হবে কি না সেই বিষয়টি অস্পষ্ট রাখা হয়েছে। অন্যদিকে, উদ্ধব ঠাকরে নিজেকে বিরোধী জোটের মুখ্যমন্ত্রী প্রার্থী হিসাবে তুলে ধরতে চাইলেও সঙ্গী কংগ্রেস ও শরদ পাওয়ারের এনসিপি তাতে সায় দেয়নি। বিরোধী জোট ক্ষমতায় এলে প্রাপ্ত আসনের ভিত্তিতে ঠিক হবে মুখ্যমন্ত্রী মুখ। একেবারে সাদা চোখে বোঝা যাচ্ছে, লড়াইয়ে বিজেপি ও কংগ্রেস সবচেয়ে কঠিন অবস্থায় আছে।
যে এক চতুর্থাশ বা ৭২টি আসনে পদ্ম ও হাত শিবিরের লড়াই হচ্ছে সেগুলির প্রার্থী তালিকায় আছেন বিজেপির উপমুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়ণবিশ, ওই দলের রাজ্য সভাপতি চন্দ্রকান্ত বাওনকুলে, বিজেপির প্রভাবশালী নেতা সুধীর মুঙ্গান্তিওয়ার, বিরোধী দলনেতা বিজয় ওয়াদ্দেতিওয়ার, প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি নানা পাটলে এবং কংগ্রেসের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী, বর্তমানে বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ অশোক চহ্বন। ফলে বোঝাই যাচ্ছে, এই নেতারা বিধানসভায় ফিরতে পারেন, নাও পারেন।
বিজেপির প্রার্থী তালিকায় অশোক চহ্বনের নাম নিয়ে রাজনৈতিক জল্পনা চলছে, শাসক জোট ক্ষমতায় আসলে বিজেপি তাঁকে মুখ্যমন্ত্রী করতে পারে। সাধারণ অঙ্কে বিজেপিরই বেশি আসনে জেতার কথা। চৌহানকে পদ্ম শিবির মুখ্যমন্ত্রী করার ইচ্ছা বাস্তবায়িত করতে পারলে রাজ্য বিজেপির মুখ দেবেন্দ্র ফড়ণবিশকে বিজেপির সর্ব ভারতীয় সভাপতি করার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া হচ্ছে না। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁকে ওই পদে চাইছেন বলে খবর। ফড়ণবিশ এবারও তাঁর নাগপুর (দক্ষিণ-পশ্চিম) আসনে প্রার্থী হয়েছেন। কংগ্রেস তাঁর বিদর্ভের প্রভাবশালী মুখ প্রফুল্ল গুদ্ধাধে পাতিলকে প্রার্থী করায় কড়া টক্করের সম্ভাবনা প্রবল।
নাগপুরেরই কামপ্তি বিধানসভা কেন্দ্রে প্রার্থী বিজেপির বায়ানকুলে। তাঁর বিরুদ্ধে নাগপুর জেলা পঞ্চায়েতের সভাধিপতি সুরেশ ভোয়ারকে প্রার্থী করেছে কংগ্রেস। দু’জনেই ওবিসি সম্প্রদায়ের মানুষ এবং এলাকায় সমান প্রভাব আছে ওই সম্প্রদায়ের উপর। প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি নানা পাটলে বিজেপির প্রাক্তন সাংসদ এবং কৃষক আন্দোলনের সময় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করে প্রথম শিবির বদল করেন। ভান্ডারা জেলার সাকোলি বিধানসভা আসনে পাটোলেকে হারাতে বদ্ধপরিকর বিজেপি স্থানীয় প্রভাবশালী নেতা অবিনাশ ভ্রামানকারকে প্রার্থী করেছে।
কংগ্রেসের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বর্তমানে বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ অশোক চহ্বান বহুদিন পর বিধানসভা ভোটে প্রার্থী হয়েছেন। মনমোহন সিং সরকারের মন্ত্রিসভায় তিনি প্রধানমন্ত্রীর দফতর বিষয়ক মন্ত্রী ছিলেন। বরাবর প্রভাবশালী এই নেতার কংগ্রেস ছাড়ার পিছনে ইডি-সিবিআইয়ের হাত ছিল বলে অভিযোগ। তাঁর পুরনো করদ সাউথ আসনে বিজেপি টিকিট দিয়েছে এই প্রাক্তন কংগ্রেসিকে। বিজেপির প্রচারে চহ্বান কতটা গুরুত্ব পান তা থেকে বোঝা যাবে তাঁর ভবিষ্যৎ কোনওদিকে মোড় নেবে। তবে বিজেপির অন্দরে চর্চা দল মুখ্যমন্ত্রীর পদ আদায় করতে পারলে চৌহ্বানের সামনে সুযোগ আসতে পারে ফের রাজ্যের কর্ণধার হওয়ার।