শেষ আপডেট: 12th November 2024 08:59
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বিগত দশ বছরে দেশে পথ দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন ১৫ লাখ তিন হাজার নাগরিক, যা কেন্দ্র শাসিত চণ্ডীগড় এবং ওডিশার রাজধানী ভুবনেশ্বরের জনসংখ্যার সমান। আগের দশ বছরের তুলনায় মৃতের সংখ্যা তিন লাখ বেশি। ২০০৪ থেকে ২০১৪-র মধ্যে মৃতের সংখ্যা ছিল ১২ লাখ এক হাজার।
কেন্দ্রীয় সরকারের সড়ক পরিবহণ মন্ত্রক স্বীকার করেছে, কমার পরিবর্তে নিহতের সংখ্যা বেড়ে যাওয়াটা দুর্ভাগ্যজনক। নানাভাবে চেষ্টা করে পথ দুর্ঘটনায় লাগাম দেওয়া যাচ্ছে না। যদিও গত এক দশক ধরেই দেশে ‘সেফ ড্রাইভ সেভ লাইফ’ জাতীয় প্রচার চালানো হচ্ছে সব রাজ্য ও কেন্দ্র শাসিত রাজ্যে।
কেন্দ্রীয় মন্ত্রক জানিয়েছে, পরিসংখ্যান অনুযায়ী ভারতে প্রতি ১০ হাজার কিলোমিটারে আড়াইশো জনের পথ দুর্ঘটনায় প্রাণ গিয়েছে। এই সংখ্যা অস্ট্রেলিয়ায় ১১জন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চিনে যথাক্রমে ৫৭ ও ১১৯জন।
নীতিন গডকড়ির সড়ক পরিবহণ মন্ত্রক প্রকাশিত তথ্য অনুযায়ী দশ বছর আগে দেশে রেজিস্টার্ড গাড়ির সংখ্যা ছিল ১৫ কোটি। এখন তা বেড়ে হয়েছে ২৪ কোটি। গাড়ির পাশাপাশি রাস্তাও বেড়েছে। তবে গাড়ির তুলনায় বেশ কম। দশ বছর আগে দেশে রাস্তা ছিল ৪৮ লাখ কিলোমিটার। ২০১৯-এ তা বেড়ে হয়েছিল ৬৩ লাখ কিলোমিটার। মন্ত্রক রাস্তা নিয়ে সর্বশেষ পরিসংখ্যান দিতে পারেনি। তবে অফিসারেরা স্বীকার করেছেন দ্বিগুণ রাস্তা করার পরিকল্পনা থাকলেও তা বাস্তবায়িত হয়নি।
পথে বেরিয়ে কেন এত মানুষের প্রাণ অকালে ঝরে যাচ্ছে? বিশেষজ্ঞরা মনে করেন, এর একাধিক কারণ আছে। সবগুলি বিষয়ের নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত দুর্ঘটনা ও মৃত্যু হার কমানো কঠিন। বেপরোয়া গাড়ি চালানো বন্ধ করা যাচ্ছে না কোনওভাবেই। গাড়ির সংখ্যার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে রাস্তা বাড়ছে না। তবে দুর্ঘটনায় প্রাণ যাওয়ার কারণ হিসাবে চিকিৎসা ব্যবস্থার দিতে আঙুল তুলেছেন বিশেষজ্ঞরা। তাঁরা বলছেন, দেশে হাইওয়ে, এক্সেপ্রেসওয়ে বেড়েছে। সেগুলিতে দুর্ঘটনার হারও বেশি। অনেকেই গতিতে সীমা লঙ্ঘন করছেন।
কিন্তু মৃত্যুর কারণ, আহতদের সঙ্গে সঙ্গে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া যাচ্ছে না। কাছাকাছি হাসপাতাল না থাকায় রক্তপাতে অনেকেই মারা যাচ্ছে। তাছাড়া মাথায় আঘাত লাগলে সমস্যা বেশি হচ্ছে। রাস্তার ধারের অনেক হাসপাতালেই সিটি স্ক্যান মেশিন-সহ আধুনিক যন্ত্রপাতির অভাব থাকায় চিকিৎসা শুরু করতেই অনেক সময় চলে যাচ্ছে। উন্নত দুনিয়ার দেশগুলিতে পথ দুর্ঘটনায় মৃত্যু কম হওয়ার অন্যতম কারণ দ্রুত চিকিৎসার সুবিধা পাচ্ছে আহত মানুষ।