শেষ আপডেট: 3rd December 2024 12:43
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বাড়ির অমতে বিয়ে করায় পরিবারের সম্মানরক্ষায় মহিলা কনস্টেবল বোনকে কুপিয়ে ভাইয়ের খুন করার ঘটনায় ভেঙে পড়েছেন যুবতীর স্বামী। তেলঙ্গানার এই শ্বাসরোধ করা খুনের ঘটনায় রীতিমতো সাড়া পড়ে গিয়েছে এলাকায়। যুবতীর স্বামী জানান, তাঁদের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক ছিল। সেই স্কুল জীবন থেকে তাঁরা একে অপরকে ভালবাসতেন। কিন্তু, তাঁর স্ত্রীর পরিবারের তরফ থেকে প্রথম থেকেই তাঁদের সম্পর্ক মেনে নিতে চায়নি। তারা অনবরত বাধা দিয়েছিল।
প্রসঙ্গত, গত সোমবার পরিবারের অমতে বিয়ে করায় এক মহিলা কনস্টেবলকে তার ভাই ঠান্ডা মাথায় খুন করে রঙ্গা রেড্ডি জেলার ইব্রাহিমপত্তনমে। ঘটনাটি ঘটে রায়াপোলে ও এন্ডলাগুড়া হাইওয়ের মাঝে। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, নাগামণি নামে যুবতী ওই কনস্টেবল সম্প্রতি ভিনজাতের এক যুবককে বিয়ে করেছেন। যে বিয়েতে বাড়ির লোকের সায় ছিল না। নাগামণির এই সিদ্ধান্তে কুলসম্মান বজায় রাখতে তাঁর ভাই তাঁকে কুপিয়ে খুন করে।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, নাগামণি যখন বাইকে চেপে কাজের জায়গায় যাচ্ছিলেন, তখন তাঁর ভাই তাঁকে ধাওয়া করে ফেলে। সেখানে রাস্তার উপরেই কুড়ুল দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয়। নাগামণি রায়াপোলে থাকতেন। সেখান থেকে হায়াত নগর থানায় কাজে যাচ্ছিলেন। সকালে তিনি যখন থানার উদ্দেশে যাচ্ছিলেন, তখন তাঁর ভাই গাড়ি নিয়ে পিছু ধাওয়া করে। বেশ কিছুটা যাওয়ার পর গাড়ি দিয়ে বোনের দুচাকায় ধাক্কা দেয় সে। নাগামণি রাস্তায় ছিটকে পড়ে গেলে গাড়ি থেকে নামিয়ে কুড়ুল দিয়ে একাধিকবার কোপায় সে। ঘটনাস্থলেই তাঁর মৃত্যু হয়। স্থানীয় সূত্র জানিয়েছে, মাসখানেক আগে পরিবারের অমতে ভিন জাত-গোত্রে বিয়ে করেছিলেন ওই মহিলা পুলিশ কনস্টেবল।
পুলিশ জানিয়েছে, নাগামণির ভাই পরমেশ যখন তাঁকে তাড়া করছিলেন, তখন তাঁকে ফোন করেছিলেন স্বামী শ্রীকান্ত। ফোনেই নাগামণি স্বামীকে হামলার কথা জানিয়েছিলেন। তেলঙ্গানা কৃষি দফতরের কর্মী শ্রীকান্ত বলেন, আমি ভিনজাতের বলে ওর পরিবার আমাদের সম্পর্কের বিরুদ্ধে ছিল। এর জন্য ১০ বছর আগে ওর পরিবার জোরজার করে ওর বিয়ে দিয়ে দিয়েছিল। ওকে বিয়ে দিয়ে দূরে পাঠিয়ে দিয়েছিল ওর পরিবার। দুবছর আগে ওর ডিভোর্স হয় এবং ও একটি হস্টেলে থাকতে শুরু করে। তখনই ফের আমার সঙ্গে যোগাযোগ হয় এবং সম্পর্ক শুরু করি।
দলিত সম্প্রদায়ের শ্রীকান্ত আরও জানান, নাগামণিকে তিনি বিয়ে করার পরই তিনি পুলিশে অভিযোগে জানান। স্ত্রীর ভাই শ্যালক পরমেশ তাঁদের ক্ষতি করতে পারে, প্রাণে মেরে দিতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছিলেন অভিযোগে। ওর ভাই আমাদের উপর খেপে ছিল কারণ ও পরিবারের সম্পত্তির ভাগ চেয়েছিল। গ্রামের লোকের কাছে আমার শ্যালক বলে বেরিয়েছিল যে, ও নাগামণিকে খুন করে দেবে।
শ্রীকান্ত পুলিশকে জানিয়েছিলেন, নভেম্বরে তাঁরা বিয়ে করেন। তাতে স্ত্রীর পরিবার রাজি ছিল না। রবিবার ছুটির পরদিন সকাল সাড়ে ৮টা নাগাদ আমি কাজে বেরিয়ে পড়ি। তখন রাস্তায় যেতে যেতে স্ত্রীকে ফোন করি। ও বলে ভাই পরমেশ ওর স্কুটারের পিছু ধাওয়া করেছে, ও তাকে ধাক্কা মারতে চায়। এইটুকু বলার পরেই ফোনের লাইন কেটে যায়। আমি আমার ভাইকে জানাই। ও গিয়ে দেখতে পায় নাগামণি রাস্তায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। বিয়ের পর থেকে পরমেশ দিদিকে খুনের হুমকি দিয়ে যাচ্ছিল।