HMPV এবং করোনাভাইরাসের মিল-অমিল কী কী?
শেষ আপডেট: 7th January 2025 13:00
দ্য ওয়াল ব্যুরো: চিনের হাসপাতালে আর লোক ধরছে না। সারি সারি রোগী মুখে মাস্ক বেঁধে বসে আছেন। শ্মশানগুলিতে এত মৃতদেহ এসে পৌঁছচ্ছে, যে লাইন পড়ে যাচ্ছে সেখানেও। প্রায় করোনা-কালীন মহামারী পরিস্থিতি নাকি আবার ফিরে এসেছে সেখানে। এই মর্মেই গুচ্ছগুচ্ছ ছবি, ভিডিও, খবর গত এক সপ্তাহ ধরে ছড়িয়ে পড়ছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। সৌজন্যে, নতুন ভাইরাস—হিউম্যান মেটানিউমোভাইরাস বা HMPV।
এই ভাইরাসের ভয়াবহতা নিয়ে কথা বলার সময়ে চিনের সংবাদমাধ্যমগুলিকে উদ্ধৃতও করা হচ্ছে বেশ কিছু ক্ষেত্রে। কিন্তু এই গোটা বিষয়টির সত্যতা কোথাওই সেভাবে যাচাই হয়নি। কোন সূত্রের কোন দাবি যে কতটা সঠিক, আর কতটা অনুমানের ভিত্তিতে লিখিত, তার কোনও হিসেব কোথাও নেই। নেই বেজিংয়ের তরফে এই নিয়ে কোনও স্পষ্ট বার্তা। কেবল আছে জনমানসে আতঙ্ক। আছে, ৫ বছর আগের কোভিডের স্মৃতি ফিরে আসা (HMPV Vs Corona)।
ভারতে ইতিমধ্যেই একাধিক রাজ্যে একাধিক শিশুর শরীরে এই ভাইরাসের খোঁজ মেলার পরে সেই আতঙ্ক যেন দ্বিগুণ হয়ে গেছে সোমবার থেকে।
যদিও স্বাস্থ্য মন্ত্রক পরিষ্কার বার্তা দিয়ে বলেছে, আতঙ্কের কোনও কারণ নেই। ভারতের এই ভাইরাসের সঙ্গে কোনও চিন-যোগও নেই। কারণ আক্রান্ত শিশু ও তাদের পরিবারের সাম্প্রতিক কোনও ভ্রমণের ইতিহাস নেই।
চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, মানব মেটানিউমোভাইরাস (HMPV) একটি সাধারণ শ্বাসযন্ত্রের ভাইরাস, যা সাধারণ ঠান্ডার মতো উপসর্গ সৃষ্টি করে। ২০০১ সাল থেকেই এই ভাইরাসের খোঁজ মিলেছে। নতুন কিছুই নয়। এই ভাইরাসের মারাত্মক সংক্রমণ ও মৃত্যুর কোনও গবেষণালব্ধ প্রমাণও নেই।
তারপরেও এই ‘এইচএমপিভি’ নামটা নিয়ে ভয় ক্রমেই বাড়ছে। নতুন একটি স্বাস্থ্য সংকটের আশঙ্কা সৃষ্টি হয়েছে গোটা বিশ্বে। ২০১৯ সালে চিনের ফ্লু-সদৃশ উপসর্গ নিয়ে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার পরে এই HMPV-র প্রাদুর্ভাব হওয়ায়, তুলনা করা হচ্ছে কোভিড-১৯ মহামারীর সঙ্গে।
তবে HMPV এবং কোভিডের মধ্যে মিলও রয়েছে:
HMPV ভাইরাসের প্রকোপ কীভাবে আটকানো যাবে
গবেষকরা বলছেন, করোনার সময়ে যেভাবে মানুষ সতর্ক হয়েছিলেন, এবারও একই পথ অবলম্বন করতে হবে। সময় মতো অন্তত ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধোয়া, বাইরে বেরলে নোংরা হাত মুখে না দেওয়া, রোগীর থেকে দূরত্ব বজায় রাখার মতো কাজ করতে হবে। তবে এসবের কোনওটা নিয়েই এখনই কোনও বিভ্রান্তির কারণ নেই।
চিকিৎসা কী
এখনও পর্যন্ত HMPV ভাইরাস প্রতিরোধে কোনও চিকিৎসা নেই। ওষুধ বা ভ্যাকসিন কিছুই বের হয়নি। রোগীদের যে সকল উপসর্গ ধরা পড়বে, সেই অনুযায়ী চিকিৎসা হবে। ঠিক যেমন করোনার সময়ে হয়েছিল।
এইচএমপিভি নির্ণয়ের জন্য আরটিপিসিআর (RT-PCR) পরীক্ষা সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি। এই পরীক্ষা ভাইরাসের আরএনএ শনাক্ত করতে সাহায্য করে। এই ভাইরাসের কোনও নির্দিষ্ট ওষুধ বা টিকা নেই। হালকা সংক্রমণে বিশ্রাম, পর্যাপ্ত জল খাওয়া এবং সাধারণ ওষুধ যথেষ্ট। তবে গুরুতর সংক্রমণে হাসপাতালে ভর্তি ও অক্সিজেন থেরাপি প্রয়োজন হতে পারে।