এস জয়শঙ্কর।
শেষ আপডেট: 7th February 2025 13:27
দ্য ওয়াল ব্যুরো: গত ১৫ বছরে আমেরিকা থেকে মোট ১৫ হাজার ৭৫৬ জন অবৈধ ভারতীয়কে ফেরত পাঠানো হয়েছে! শুক্রবার সংসদে এমনটাই জানালেন ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। রাজ্যসভায় এই তথ্য তুলে ধরে তিনি বলেন, 'আমেরিকার এই বহিষ্কারের প্রক্রিয়া নতুন কিছু নয়, এটি বহু বছর ধরেই চলে আসছে। পাশাপাশি, অবৈধ ভারতীয়দের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়াই আমাদের মূল লক্ষ্য হওয়া উচিত।'
জয়শঙ্করের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, ২০১৯ সালে সর্বাধিক ভারতীয়কে আমেরিকা থেকে বহিষ্কার করা হয়, সংখ্যাটা ২০৪২। ২০২০ সালে ফেরত পাঠানো হয় ১৮৮৯ জন ভারতীয়কে। ২০২৪ সালে ১৩৬৮ জনকে এবং ২০২৫ সালে ১০৪ জনকে (এ পর্যন্ত) ফেরত পাঠানো হয়েছে।
১৫ বছর ধরে যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত পাঠানো ভারতীয়দের সংখ্যার হিসেব দিয়েছেন জয়শঙ্কর। তা রইল নীচে।
বুধবারই ১০৪ জন অবৈধ ভারতীয়কে নিয়ে একটি মার্কিন সামরিক বিমান অমৃতসরে নামে। তাঁদের মধ্যে রয়েছেন, ৩৩ জন হরিয়ানার, ৩৩ জন গুজরাতের, ৩০ জন পাঞ্জাবের, ৩ জন মহারাষ্ট্রের, ৩ জন উত্তরপ্রদেশের এবং ২ জন চণ্ডীগড়ের বাসিন্দা।
এঁদের মধ্যে অনেকেই আমেরিকায় যাওয়ার জন্য বিপুল অর্থ বিনিয়োগ করেছিলেন, অনেক ঋণও করেছিলেন সে টাকা জোগাড় করতে। কিন্তু শেষমেশ চরম দুর্ভোগের শিকার হতে হল তাঁদের। রীতিমতো পায়ে শিকল বেঁধে, হাতকড়া পরিয়ে, ফেরানো হল দেশে।
এই পরিস্থিতিতে বিরোধীরা সরকারের বিরুদ্ধে গলা তুলেছে। তাদের দাবি, 'ভারত কেন নিজের নাগরিকদের ফেরানোর জন্য বিমান পাঠায়নি?' তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ সাকেত গোখলে বলেন, 'কলম্বিয়া পর্যন্ত তাদের নাগরিকদের জন্য বিমান পাঠিয়েছে আমেরিকায়। তাহলে ভারত কেন পারেনি, অর্থনৈতিক ভাবে এগিয়ে থেকেও? আমাদের কি বিমানের অভাব আছে?'
সংসদে এই প্রসঙ্গে বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর বলেন, 'আমেরিকার অভিবাসন ও কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (ICE) কর্তৃপক্ষই এই বহিষ্কার কার্যক্রম পরিচালনা করে। এই সংস্থাটি ২০১২ সাল থেকেই বিশেষ নিয়ম মেনে বিমান ব্যবহার করে অবৈধ নাগরিকদের ফেরত পাঠিয়ে আসছে। তারা মহিলা ও শিশুদের চেন দিয়ে বাঁধে না। যাত্রাপথে খাবার, চিকিৎসা ও অন্যান্য জরুরি প্রয়োজনীয়তা নিশ্চিত করা হয়। টয়লেট ব্যবহারের সময় আটক ব্যক্তিদের সাময়িকভাবে হাতকড়া খুলে দেওয়া হয়।'
তবে বিদেশমন্ত্রীর এইসব তথ্যে মোটেও মুখ বন্ধ হয়নি বিরোধীদের। তিনি যতই দাবি করুন, এটি আন্তর্জাতিক নিয়ম অনুযায়ী পরিচালিত প্রক্রিয়া, বিরোধীরা তার পরেও সরকারের দায়িত্ববোধ নিয়ে প্রশ্ন তুলছে। তবে, ভবিষ্যতে ভারত সরকারের কূটনৈতিক পদক্ষেপ এই পরিস্থিতিকে কীভাবে সামাল দেবে, সেটাই দেখার বিষয়।