শেষ আপডেট: 12th March 2025 11:07
দ্য ওয়াল ব্যুরো: শুক্রবার জুম্মার নামাজ (Jumma prayer in masjid) পাঠে অংশ নিয়ে থাকেন বেশিরভাগ ধর্মপ্রাণ মুসলিম (Muslim)। এবার ওই দিনেই হিন্দুদের (Hindu) জাতীয় উৎসব হোলি বা দোলযাত্রা ( Dol yatra)। দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে যাতে বিবাদ না হয় সে জন্য হিন্দুত্ববাদী ( Hindutva) শিবিরের একাংশের তরফ থেকে মুসলিমদের প্রতি পরামর্শের মোড়কে নানা ফতোয়া জারি হচ্ছে। বিগত কয়েক বছরের মতোই এ ব্যাপারে এগিয়ে উত্তর প্রদেশ। বিতর্কে নাম জড়িয়েছে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথেরও (Yogi Adityanath)।
আলিগড়ে যোগী সরকারের শ্রম মন্ত্রী রঘুরাজ সিং মুসলিমদের পরামর্শ দিয়েছেন, হোলির দিন মুসলিমদের উচিত হবে জুম্মার নমাজের জন্য বাড়ি থেকে না বের হওয়া। বাড়িতেই নমাজ পাঠ করে নিন। আর একান্তই বের হলে গায়ে প্লাস্টিক জড়িয়ে বের হন। তাঁর, কথায় রং খেলা শুরু হলে বাছবিচার করা কঠিন। রং খেলা অপছন্দ হলে এ ছাড়া উপায় নেই।
মুসলিম ধর্মগুরুদের অনেকের বক্তব্য, তাঁরা অনেক আগেই ঘোষণা করে দিয়েছেন, হোলির দিন মসজিদে নমাজ পাঠ শুরু হবে বেলা দুটোর সময়। এক ঘণ্টা সময় পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। তা নিয়ে মুসলিম সমাজ আপত্তি তোলেনি। তরপরও পরামর্শের নামে সংখ্যালঘুদের বিদ্রুপ করা হচ্ছে।
বিগত কয়েক মাস ধরে পশ্চিম উত্তর প্রদেশের (Utrar Pradesh) সম্বলের জুমা মসজিদ নিয়ে বিবাদ চলছে। হিন্দু ও মুসলমানদের দাবি, পাল্টা দাবি নিয়ে বিতর্ক আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। বিবাদকে কেন্দ্র করে দু পক্ষের মধ্যে চাপা উত্তেজনা বিরাজ করছে।
সেই সম্বলে ( Samval district) পুলিশের সার্কেল ইন্সপেক্টর অনুজ চৌধুরী নিদান দেন হোলির শুক্রবার মুসলিমরা বাড়িতে থাকুন। জুম্মার নমাজ বছরে ৫২ দিন পাঠ করা যায়। হোলি বছরে একদিন। দিনটা হিন্দুদের ছেড়ে দিন।
একজন সার্কেল ইন্সপেক্টর এমন কথা বলতে পারেন কিনা তা নিয়ে যোগী সরকারের অন্দরেই বিতর্ক শুরু হয়েছে। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী যোগী প্রকাশ্যেই ওই সার্কেল ইন্সপেক্টরের নাম করে প্রশংসা করে বলেন, উনি জাতীয় পুরস্কার পাওয়া কুস্তিগির। তাই পালোয়ানের মতো সাহস করে ওই কথা বলতে পেরেছেন।
উত্তর প্রদেশের নেতাদের সঙ্গে গলা মিলিয়েছেন বিহারের (Bihar) বিজেপি বিধায়ক হরিভূষণ ঠাকুর। তাঁর বক্তব্য, মুসলিমদের উচিত হবে হোলির দিন বাড়িতে থাকা।
পূর্ব উত্তর প্রদেশের বালিয়ার বিজেপি বিধায়ক কেতকী কয়েক কদম এগিয়ে মুসলিম নিয়ে বিচিত্র দাবি পেশ করেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, হাসপাতালে মুসলিমদের জন্য আলাদা ওয়ার্ড চালু করা হোক। যারা আমাদের সঙ্গে হোলির রং মাখতে অনাগ্রহী তাদের হয়তো একই ওয়ার্ডে হিন্দুদের সঙ্গে চিকিৎসা নিতে আপত্তি থাকতে পারে।
কী বলছেন মুসলিম ধর্মগুরুরা? লখনউয়ে শিয়া সম্প্রদায়ের নেতা মৌলানা সইফ আব্বাস নকভির বক্তব্য, দুই পক্ষের বিবাদের কোনও সম্ভাবনা নেই। কারণ, জুম্মার নমাজ বেলা ২ টোয় শুরু হবে। সময় এক ঘণ্টা পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। তিনি জানান, তাঁরা ইরাকের ধর্মগুরু আয়াতুল্লাহ সৈয়দ সিসতানির পরামর্শ নিয়েছেন।