ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার নেতা হেমন্ত চতুর্থবারের জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হলেন।
শেষ আপডেট: 28 November 2024 11:02
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পদে শপথ নিলেন হেমন্ত সোরেন। ঝাড়খণ্ড মুক্তি মোর্চার নেতা হেমন্ত চতুর্থবারের জন্য রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হলেন। তাঁর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিল ইন্ডিয়া জোটের প্রায় অধিকাংশ শরিক দলই। হাজির ছিলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়, কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে, কংগ্রেস সাংসদ রাহুল গান্ধী, এনসিপি প্রধান শারদ পাওয়ার, মেঘালয়ের মুখ্যমন্ত্রী কনরাড সাংমা, পাঞ্জাবের আপ মুখ্যমন্ত্রী ভগবন্ত মান, হিমাচল প্রদেশের কংগ্রেস মুখ্যমন্ত্রী সুখবিন্দর সিং সুখু, সোরেনের শরিক দল সিপিআইএমএল নেতা দীপঙ্কর ভট্টাচার্য, আম আদমি পার্টির আহ্বায়ক অরবিন্দ কেজরিওয়াল, শিবসেনা ঠাকরে গোষ্ঠীর নেতা উদ্ধব ঠাকরে, সমাজবাদী পার্টির প্রধান অখিলেশ যাদব ও মহাগাঁটবন্ধনের শরিক দল আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব, পিডিপি নেত্রী মেহবুবা মুফতি, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী পুত্র উদয়নিধি স্ট্যালিন ও কর্নাটকের কংগ্রেসের উপমুখ্যমন্ত্রী ডিকে শিবকুমার।
ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পদে বৃহস্পতিবার হেমন্ত সোরেনের শপথ অনুষ্ঠানে ফের একবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী বিরোধী ইন্ডিয়া জোটের চাঁদের হাট বসল রাঁচির মোরাবাদী মাঠে। লোকসভা ও চার রাজ্যের বিধানসভা ভোটে সেয়ানে সেয়ানে টক্কর হয়েছে ইন্ডিয়া বনাম এনডিএ জোটের। সেই ভোটগুলির পর তথাকথিত কংগ্রেসের একতরফা দাদাগিরি অনেকটাই খণ্ডিত হয়েছে। চাপের মুখে রয়েছে অন্য ছোট দলগুলিও। কেবলমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের উত্তরোত্তর শ্রীবৃদ্ধি ঘটায় কার্যত জোটের চালকের ভূমিকায় পৌঁছে গিয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস। কারণ, অখিলেশের সমাজবাদী পার্টি সংখ্যায় এগিয়ে থাকলেও রাজনৈতিক অভিজ্ঞতায় তৃণমূল নেত্রী কয়েক কদম এগিয়ে রয়েছেন। বস্তুত ইন্ডিয়া জোটের কর্তৃত্ব এখন আর রাহুল গান্ধীর হাতে নেই।
জম্মু-কাশ্মীর ও ঝাড়খণ্ডে ইন্ডিয়া জোট জিতেছে। অন্যদিকে, হরিয়ানা ও মহারাষ্ট্র দখল করেছে মোদী নেতৃত্বাধীন এনডিএ। এই ২-২ গোলের ফলাফলে দেশের প্রাচীনতম দল কংগ্রেসের হাল আরও শোচনীয় হয়েছে। লোকসভা ভোটে ৯৯ আসনে জিতে কংগ্রেস যে ইন্ডিয়া জোটের স্টিয়ারিং ধরেছিল, এখন নিজের গাড়িই বিভিন্ন নির্বাচনে মুখ থুবড়ে পড়ায় রাহুল গান্ধীর নেতৃত্বও বড়সড় প্রশ্নের মুখে পড়তে চলেছে।
যার প্রথম ও প্রধান দৃষ্টান্ত শীত অধিবেশনে কংগ্রেসের এক এবং একমাত্র ইস্যু আদানি নিয়ে সংসদ অচল করার পক্ষপাতী নয় তৃণমূল কংগ্রেস, সেটা তারা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছে। ফলে কংগ্রেসের শীর্ষ নেতৃত্ব তথা ঝাড়খণ্ডের মহাগাঁটবন্ধনের অন্যতম শরিক দল এদিনে শপথানুষ্ঠানে হাজির থাকবে। কিন্তু, জম্মু-কাশ্মীর, হরিয়ানা ও মহারাষ্ট্রে কংগ্রেসের জয়ের চাকা মাটিতে গেড়ে বসে যাওয়ায় যথেষ্ট চাপের মুখে রয়েছে রাহুল ব্রিগেড।
এদিন বিকেলে রাঁচির মোরাবাদী মাঠে হেমন্ত সোরেনকে শপথবাক্য পাঠ করান রাজ্যপাল সন্তোষকুমার গঙ্গোয়ার। এদিন হেমন্ত সোরেন একাই শপথ নেন। বিধানসভায় শক্তি প্রদর্শনের পর মন্ত্রিসভা গঠিত হবে।
গত লোকসভা ভোটে শাসক দলের চালিকাশক্তি বিজেপিকে যথেষ্ট বেগ দিয়েছে ইন্ডিয়া জোট। সব থেকে বড় কথা একক সংখ্যাগরিষ্ঠ জায়গায় পৌঁছতে পারেনি বিজেপি। তাই অন্ধ্রপ্রদেশের তেলুগু দেশম ও বিহারের জেডিইউয়ের কাঁধে ভর রেখে সরকার গড়তে হয়েছে। সেই হিসাবে বিরোধী ইন্ডিয়া জোটের আজকের চাঁদের হাট ছিল যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। কারণ লোকসভা ও বিধানসভা ভোটের পর এই প্রথম বিরোধীদের তাবড় নেতৃত্বকে এক অনুষ্ঠানে দেখা গেল।