শেষ আপডেট: 28 March 2024 04:13
দ্য ওয়াল ব্যুরো: বিগত কয়েক দশকে তাপপ্রবাহের কারণে কয়েক হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। সদ্য প্রকাশিত রিপোর্টে এ কথা জানিয়ে বলা হয়েছে, আগামী কয়েক দশকে ভারতের একাধিক জায়গায় তাপপ্রবাহ এত তীব্র হয়ে উঠবে যে নাজেহাল হতে হবে মানুষজনকে। ভারতের মৌসম ভবন জানিয়েছে, মার্চের শেষ থেকেই জ্বালাপোড়া গরম পড়বে দেশজুড়েই। তাপমাত্রা সহনশীলতার সীমা ছাড়িয়ে যাবে। ভয়ঙ্কর তাপপ্রবাহের কবলে পড়বে রাজস্থান, গুজরাত, কর্নাটক। তাপমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
মৌসম ভবন জানাচ্ছে, ভারতের কিছু এলাকায় তাপমাত্রা এমন এক পর্যায়ে পৌঁছতে পারে যেখানে কোনও ভাবেই আর মানিয়ে নিতে পারবে না মানুষ। পাশাপাশি, তীব্র খরা পরিস্থিতি সৃষ্টির আশঙ্কাও রয়েছে পুরো মাত্রায়। মাস দুয়েক আগে রাষ্ট্রপুঞ্জ এবং আন্তর্জাতিক রেড ক্রস সোসাইটির যৌথ রিপোর্টেও উষ্ণায়নের কারণে দক্ষিণ এশিয়া-সহ বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে তাপপ্রবাহের আশঙ্কার কথা জানানো হয়েছিল। তাতে বলা হয়েছিল, হর্ন অব আফ্রিকা তথা আফ্রিকার মূল মহাদেশীয় ভূখণ্ডের পূর্বতম অঞ্চল, সাহিল অঞ্চল (উত্তর আফ্রিকা এবং পশ্চিম এশিয়াকে নিয়ে গঠিত অঞ্চল) এবং দক্ষিণ ও পশ্চিম এশিয়ায় তাপপ্রবাহের প্রভাব পড়বে সবচেয়ে বেশি। এ বার দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম দেশ ভারতকে নিয়ে একই আশঙ্কার কথা জানানো হয়েছে।
বুধবারই ভূজের তাপমাত্রা ছিল ৪১.৬ ডিগ্রি, রাজকোটে পারদ চড়েছিল ৪১.৫ ডিগ্রিতে। উপকূলবর্তী অঞ্চলগুলির তাপমাত্রা ৩৭ ডিগ্রি ছাড়িয়ে গেছে এখনই। এমনকী পার্বত্য এলাকাগুলোতে স্বস্তি নেই। সেখানে তাপমাত্রা ৩০ ডিগ্রির বেশি। মৌসম ভবন পূর্বাভাস দিয়েছে, আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে লু বইবে রাজস্থান, কর্নাটক ও গুজরাতে। ওই সময় মানুষজনকে বাড়ির বাইরে না বেরনোরই পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।
তাপপ্রবাহের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি উত্তর কর্নাটক, গুজরাতের সৌরাষ্ট্র ও কচ্ছ এহং দক্ষিণ-পশ্চিম রাজস্থানে। আজ থেকেই তাপপ্রবাহের পরিস্থিতি তৈরি হবে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস। আগামী ৪৮ ঘণ্টায় পরিস্থিতি আরও ভয়ানক হতে পারে।
আবহাওয়াবিজ্ঞানীরা বলছেন, বিশ্ব উষ্ণায়ণের জেরে জলবায়ু বদলই এর কারণ। এমন দাবদাহের জন্য দায়ী যথেচ্ছ দূষণ, গাছ কেটে নগরোন্নায়ন ও অত্যধিক তেজস্ক্রিয় বিকিরণ। ছ'টা ঋতুই যেন উধাও হয়ে গেছে ঋতুচক্র থেকে। গত বছর থেকেই দাপট দেখিয়েছে প্রশান্ত মহাসাগরীয় উষ্ণ জলস্রোত এল নিনো। এ বছর এল নিনোর ফিরে যাওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। কিন্তু তা সত্ত্বেও তাপমাত্রা বাড়বে দুরন্ত গতিতে। মৌসম ভবন জানিয়েছে, এ বছর লা নিনার ফিরে আসার সম্ভাবনাও আছে। এল নিনোর ঠিক বিপরীত হল লা নিনা, গভীর সমুদ্র থেকে উঠে আসা ঠান্ডা জলস্রোত। লা নিনা এলে ভারতের বর্ষার মরশুম ওলটপালট হয়ে যাবে। অতিবৃষ্টিতে ভাসবে দেশের বেশ কয়েকটি রাজ্য।