শেষকৃত্যে কফিন জড়িয়ে কান্নার ছবি ভাইরাল হয়ে গিয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়।
শেষ আপডেট: 7 May 2025 16:51
দ্য ওয়াল ব্যুরো: পহলগামে পাকিস্তানি জঙ্গি হানায় নিহত নৌসেনা কর্মী লেফটেন্যান্ট বিনয় নারওয়ালের স্ত্রী হিমাংশী বুধবার 'অপারেশন সিঁদুর' নিয়ে নীরবতা ভাঙলেন। পাক মাটিতে ঢুকে প্রতিরক্ষা বাহিনীর অভিযানে ৯টি জঙ্গি ঘাঁটি মাটিতে মিশিয়ে দিয়েছে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সরকার। পহলগামে গত ২২ এপ্রিল নিহত স্বামীর দেহের পাশে বসে থাকা হিমাংশী ও শেষকৃত্যে কফিন জড়িয়ে কান্নার ছবি ভাইরাল হয়ে গিয়েছিল সোশ্যাল মিডিয়ায়। এদিনও সেদিনের মতোই অপারেশনের কথা শুনে হিমাংশীর দুই গাল বেয়ে ঝরঝর করে নেমে এল চোখের জল।
সরকারের কাছে কাতর আবেদন জানালেন, শহিদের পত্নী জঙ্গিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া যেন এরপর থেমে না যায়। হিমাংশীর ভাষায়, আমার স্বামী দেশের প্রতিরক্ষার জন্য কাজ করত। ও যখন সেনায় যোগ দেয়, তখন চাইত দেশে যেন শান্তি বজায় থাকে। কোথাও কোনও নিরীহ মানুষের যেন মৃত্যু না হয়। এই দেশে যেন ঘৃণা না থাকে, সন্ত্রাসবাদ না থাকে। এই অভিযানে (অপারেশন সিঁদুর) ওর আত্মা ছিল। সন্ত্রাসবাদ ও ঘৃণাকে কখনই সহ্য করা উচিত নয় সরকারের, বলেন হিমাংশী।
নৌসেনার স্ত্রী আরও বলেছেন, এই অভিযানের জন্য আমি সরকারকে ধন্যবাদ জানাই। সরকারের কাছে অনুরোধ, এই অভিযান যেন এখানেই থেমে না থাকে। সন্ত্রাসবাদকে সমূলে নিকেশ করার এটাই শুরু হোক। যাতে আমার সঙ্গে যা হয়েছে, তা যেন অন্য কারও সঙ্গে না হতে পারে। সার্জিক্যাল স্ট্রাইকের নামকরণ অপারেশন সিঁদুর প্রসঙ্গে হিমাংশীর মত, আমি এই নামের সঙ্গে নিজেকে দেখতে পাচ্ছি। আমি একটা প্রাণ হারিয়েছি। সম্ভবত এখনও কেউ বুঝতে পারছেন না, আমার জীবনে কী ঘটে গিয়েছে কিংবা আমার সঙ্গে কী ঘটেছে। এই নামটা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।
হিমাংশী ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছেন, জঙ্গিরা অনেক মা, মহিলা তাঁদের জীবনের অস্তিত্ব হারিয়েছেন। তাঁদের জীবনের সবচেয়ে মূল্যবান অংশ খুইয়েছেন। তাই আমি চাই, এরকম ঘটনা যাতে আর না ঘটে। কারও সঙ্গে না ঘটে, এরকম মুহূর্ত কারও জীবনে না আসে। ভারতের অভিযান নিয়ে এদিন সাংবাদিকদের সামনে আনুষ্ঠানিক ব্যাখ্যা দেন কর্নেল সোফিয়া কুরেশি ও উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিং। এ ব্যাপারে হিমাংশী বলেন, একজন মহিলাই একজন মহিলার যন্ত্রণা বুঝতে পারেন। কোনও বাবা তাঁর ছেলে হারিয়েছেন, কোনও ভাই তাঁর ভাইকে হারিয়েছেন, তাঁরা সকলেই যন্ত্রণা ভোগ করছেন। কিন্তু, একজন মহিলাই অন্য মহিলার হয়ে বদলা নিতে পারেন। এটা দেখে ভাল লেগেছে যে, কোনও মহিলা অফিসারকে সুযোগ দেওয়া হয়েছে। আমি মনে করি প্রতিরক্ষা বিভাগেও পুরুষ-মহিলার ভাগীদারি সমান হওয়া উচিত। একইসঙ্গে তাঁর স্বামীর জন্য সর্বোচ্চ সামরিক সম্মানের দাবি জানিয়েছেন হিমাংশী।