শেষ আপডেট: 14th September 2024 18:13
দ্য ওয়াল ব্যুরো: পাঁচ কোটি টাকা চেয়েছিল বিখ্যাত গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোই। না দেওয়ায় সাউথ দিল্লির জিম মালিককে মেরে ফেলার অভিযোগ উঠল বিষ্ণোই গ্যাংয়ের বিরুদ্ধে।
বৃহস্পতিবার রাতে দিল্লির গ্রেটার কৈলাশ এলাকায় গুলি করে খুন করা হয় নাদির শাহ নামে ওই যুবককে। ঘটনায় এপর্যন্ত চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শুরু হয়েছে তদন্ত।
জানা গিয়েছে, আফগান বংশোদ্ভূত নাদিরের সঙ্গে যোগ ছিল সাউথ দিল্লির দুই গ্যাংস্টারের। সেই সূত্রেই খুনের ছক কষে বিষ্ণোই গ্যাং।
ঘটনার একটি ফুটেজ সামনে এসেছে, যাতে দেখা গিয়েছে গ্রেটার কৈলাশের ব্যস্ত রাস্তায় একটি পার্কিং লটে নাদির দাঁড়িয়ে কথা বলছেন তাঁর জিমের দু'জনের সঙ্গে। কথা বলতে বলতেই একজন সামনে এসে এলোপাথাড়ি গুলি করতে শুরু করে।
বাঁচানোর চেষ্টা করতে গিয়েছিল জিমের দু'জন। কিন্তু ততক্ষণে ছয়-সাতটা গুলি পরপর লেগে গিয়েছে। হাসপাতালে নিয়ে গেলে নাদিরকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। যে গুলি চালায় সে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে গেলেও চারজনকে ধরে ফেলে পুলিশ।
তদন্তের পর পুলিশ জানতে পারে, কুণাল ছাবরা নামে একজনের সঙ্গে ব্যবসা চালাতেন নাদির। এই কুণালের সাউথ দিল্লিতে অবৈধ কল সেন্টারের ব্যবসা রয়েছে। কিছুদিন আগে কুণালের কাছ থেকেই পাঁচ কোটি টাকা তোলা চায় বিষ্ণোই গ্যাং। কিন্তু নাদির সেই টাকা কুণালকে দিতে নিষেধ করেন। নিরাপত্তা নিয়ে প্রশ্ন উঠলে নাদির জানিয়ে দেন, তাঁর বন্ধুরা বেশ ক্ষমতাশালী তাই তিনি বাঁচিয়ে নেবেন।
সূত্রের খবর, এই পাঁচ কোটি টাকা কমানোর জন্য নাকি লরেন্স বিষ্ণোইয়ের সঙ্গে দর কষাকষিও করেন নাদির। কিন্তু টাকা কম হয়নি। এদিকে লরেন্স বিষ্ণোইকে গ্রেফতার করে পুলিশ। জেল হেফাজতে তাকে অত্যাচারের অভিযোগ ওঠে। যার দায় বিষ্ণোই চাপায় এই জিম মালিকের উপর। পুলিশকে নাকি সে জানিয়ে দেয়, আর পাঁচ কোটি নয়, এবার ১০ কোটি দিতে হবে নাদির-ছাবরাদের।
কীভাবে খুনের জাল পাতা হল?
মৃত নাদির শাহর সঙ্গে সাউথ দিল্লির গ্যাংস্টার রবি আগরওয়াল ও রোহিত চৌধুরির বন্ধুত্ব ছিল। এই দুজনের সঙ্গে নর্থ দিল্লির গ্যাংস্টার হাসিম বাবার শত্রুতা ছিল। সূত্রের খবর, বিষ্ণোই গ্যাংয়ের সদস্য রোহিত গোদারা এই শত্রুতাকেই কাজে লাগায় ও খুন করে। সে খুনের দায়ও স্বীকার করেছে।
পুলিশ জানতে পেরেছে, হাসিম বাবা নামের ওই নর্থ দিল্লির গ্যাংস্টার উত্তরপ্রদেশের আজেমগড়ের গ্যাংস্টার রণদীপকে এই খুনের সুপারি দেয়। রণদীপ নিজে আমেরিকায় থাকায় এই খুনের দায়িত্ব দেয় অন্য কয়েকজনকে। তাদের উত্তরপ্রদেশ থেকে দিল্লিতেও নিয়ে আসা হয়।
কাজে লাগানো হয় হামিসের তিহার জেলের সঙ্গী সমীর বাবাকে। এই সমীরকে আবার মৃত নাদির শাহ এক সময় হুমকি দিয়েছিল।
খুনের ব্লু প্রিন্ট এভাবেই ছকে নেওয়ার পর নাদির শাহকে অবশেষে খুন করা হয়। গুলি চালায় হাসিম ও রণদীপের ভাড়া করা গুন্ডারা। চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
অন্যদিকে জানা গিয়েছে, নাদির শাহ ও কুণাল ছাবরার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ রয়েছে বিভিন্ন কেসে।
প্রসঙ্গত, চলতি বছর এপ্রিল মাসে সলমন খানের গ্যালাক্সি অ্যাপার্টমেন্টে গুলিবর্ষণের ঘটনা ঘটে। নাম জড়ায় গ্যাংস্টার লরেন্স বিষ্ণোইয়ের। সলমনকে খুন করতে ২০ লাখ টাকা দেওয়া হয়েছিল তার গ্যাং থেকে। বিখ্যাত পাঞ্জাবি গায়ক সিধু মুসেওয়ালা খুনেও নাম জড়ায় এই লরেন্স বিষ্ণোইয়েরই।