জ্বর ও স্ত্রীর অনুরোধে ১২ জুনের লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার টিকিট বাতিল করেন গুজরাতের ডক্টর উমঙ্গ প্যাটেল। ওই বিমান ভেঙেই ভয়াবহ দুর্ঘটনা, মৃত্যু হয় ২৪১ জন যাত্রীর।
ডক্টর উমঙ্গ প্যাটেল।
শেষ আপডেট: 16 June 2025 05:43
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সামান্য শরীর খারাপ, ছোট্ট অনুরোধ, সময়তো একটি সিদ্ধান্ত—এটাই বদলে দিল গুজরাতের এক চিকিৎসকের জীবন। বদলে দিল নয়, বলা ভাল, বাঁচিয়ে দিল। স্ত্রী ও পরিবারের অনুরোধে ১২ জুন লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানের টিকিট বাতিল করেছিলেন গুজরাতের চিকিৎসক, উমঙ্গ প্যাটেল। সেই একই ফ্লাইট, যেটি দুর্ঘটনাগ্রস্ত হয়ে ভেঙে পড়ে ডাক্তারি হোস্টেলের ওপর। প্রাণ হারান ২৪১ জন যাত্রী ও আরও অন্তত ১০ জন।
৪০ বছর বয়সি ডা. উমঙ্গ প্যাটেল ইংল্যান্ডের নর্থ্যাম্পটনের বাসিন্দা। গত ২৪ মে স্ত্রী, সন্তান, ও পরিবারের অন্য সদস্যদের নিয়ে গুজরাতের মহীসাগর জেলার কৈডাম গ্রামে এসেছিলেন, নিজের বাড়িতে। ফিরে যাওয়ার কথা ছিল ১২ জুনে, একা। কিন্তু সব বদলে যায় ৯ জুনে।
ডক্টর প্যাটেল বলেন, 'শ্বশুরবাড়ি থেকে ঘুরে এসে হঠাৎ জ্বর আসে আমার। খুব দুর্বল লাগছিল। বৌ অনুরোধ করে বলল, এই অবস্থায় লন্ডন যেও না। আমিও একটু দোনোমোনো করলেও, শেষমেশ বৌয়ের কথা শুনে ১২ জুনের টিকিট বাতিল করে দিলাম, ১৫ জুনের জন্য নতুন টিকিট কাটলাম। তারপরই শুনি সেই বিমানটি ভেঙে পড়েছে।'
ঘটনাটি জানাজানি হতেই গ্রামের বহু মানুষ ছুটে আসেন তাঁদের দেখতে। মানসিক শক্তি জোগানোর চেষ্টা করেন প্যাটেল পরিবারকে।
ডক্টর উমঙ্গ জানান, গত পাঁচ বছর ধরে তিনি নর্থ্যাম্পটনে বাস করছেন। জুনের ২ তারিখে প্রথমে ফিরে যাওয়ার কথা ছিল, কিন্তু সেই সময় তাঁর বাবা স্ট্রোকে আক্রান্ত হওয়ায় সেই ফ্লাইট বাতিল করতে হয়, ১২ তারিখের টিকিট কাটা হয়। এর পরে ৯ জুন তিনি যখন স্ত্রীকে তাঁর শ্বশুরবাড়ি পৌঁছে দিতে যান, তখনই তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন। এর ফলে স্ত্রী ও বাবা-মা, সকলেই অনুরোধ করেন, তিনি যেন এই অবস্থায় ১২ তারিখের ফ্লাইটে না ফেরেন।
তিনি আরও জানান, ২৪ মে তাঁরা যে এয়ার ইন্ডিয়া ফ্লাইটে লন্ডন থেকে আহমেদাবাদে আসেন, সেই ফ্লাইটে যদিও কোনও বড় ত্রুটি ছিল না, তবে মিডিয়া প্লেয়ারের কিছু সুইচ ভাঙা ছিল এবং এয়ার কন্ডিশনিং সিস্টেম কাজ করছিল না।
সে যাই হোক, ১২ তারিখের টিকিট বাতিল করার সিদ্ধান্তটির দিকে আজ যখন তিনি ফিরে তাকান, শিউরে উঠে ভাবেন, ভাগ্যিস! তাঁর কথায়, 'ঈশ্বর আমাকে বাঁচিয়ে দিয়েছেন। যাঁরা ওই বিমানে ছিলেন, তাঁদের আত্মার শান্তি কামনা করি।'