শেষ আপডেট: 8th March 2025 21:16
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মধ্যপ্রদেশের বুরহানপুরে আসিরগড় দুর্গের কাছে সোনা খোঁজার হিড়িক পড়েছে। টর্চ লাইট, চালুন ও ধাতু সনাক্তকারী যন্ত্র নিয়ে বহু মানুষ সেখানে উপস্থিত হয়েছেন। অভিনেতা ভিকি কৌশল অভিনীত ‘ছাভা’ ছবিতে বুরহানপুরকে সোনার খনি বলা হয়েছিল, যা এই সোনা খোঁজার হিড়িকের পিছনে অন্যতম কারণ বলে মনে করা হচ্ছে।
গুজব ছড়ায়, যখন জাতীয় সড়ক নির্মাণের জন্য ব্যবহার করা একটি জেসিবি মেশিন একটি দরগার কাছে খননকাজ চালায় এবং সেই মাটি স্থানীয় বাসিন্দা হারুন শেখের মাঠে ফেলা হয়। এরপর সেখানে কাজ করতে গিয়ে শ্রমিকরা প্রাচীন ধাতব মুদ্রা খুঁজে পান। কেউ কেউ দাবি করেছেন, মুঘল আমলের স্বর্ণ ও রৌপ্যমুদ্রাও পাওয়া গেছে। এরপরই আশেপাশের গ্রামগুলি থেকে বহু মানুষ সোনা খোঁজার আশায় সেখানে ছুটে আসতে শুরু করেন।
এই ঘটনাকে আরও উসকে দিয়েছে ‘ছাভা’ ছবিতে বুরহানপুরের উল্লেখ, যেখানে মুঘল সাম্রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ সামরিক অভিযানের স্থান হিসেবে এই শহরের কথা বলা হয়েছে এবং এটিকে ‘সোনার খনি’ হিসেবে দেখানো হয়েছে। স্থানীয় বাসিন্দাদের দাবি, সত্যিই সেখানে কয়েন পাওয়া যাচ্ছে, কিন্তু প্রশাসন এখনও কোনও ব্যবস্থা নেয়নি।
মোহাম্মদ ওয়াসিম নামে এক স্থানীয় বাসিন্দা বলেন, “লোকজন কয়েন পাচ্ছে, আর প্রতিদিন ভিড় বাড়ছে। অন্য গ্রাম থেকেও অনেকে আসছেন। প্রশাসনকে জানানো হলেও কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।” ইতিহাসবিদদের মতে, বুরহানপুর একসময় সমৃদ্ধ মুঘল শহর ছিল এবং এখানে সোনা ও রুপোর মুদ্রা তৈরির টাঁকি ছিল। সেই সময়ে যুদ্ধ বা অশান্তির সময় মানুষ প্রায়ই তাদের ধনসম্পদ মাটির নিচে লুকিয়ে রাখত। তাই এখানে প্রাচীন মুদ্রা পাওয়ার সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যায় না।
তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করেছেন যে, এত বেশি পরিমানে মাটি খুড়লে ঐতিহাসিক নিদর্শন নষ্ট হয়ে যেতে পারে। জেলার প্রত্নতাত্ত্বিক সদস্য শালিকরাম চৌধুরি বলেন, “আসিরগড়ে এর আগেও প্রাচীন মুদ্রা পাওয়া গিয়েছে। তাই প্রশাসনকে বিষয়টি গুরুত্ব দিয়ে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে অনুসন্ধান চালানো উচিত এবং পাওয়া সম্পদ সংরক্ষণ করা উচিত।”
এদিকে বিরোধী দল কংগ্রেস প্রশাসন ও পুলিশকে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছে, যাতে কোনও অরাজকতা সৃষ্টি না হয়। ইতিমধ্যে স্থানীয় পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে এবং অনুমতি ছাড়া খননকাজে নিষেধাজ্ঞা জারির ইঙ্গিত দিয়েছে। বুরহানপুরের পুলিশ সুপার দেবেন্দ্র পাতিদার জানিয়েছেন, অনুমতি ছাড়া খননকাজে কঠোর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হবে এবং প্রয়োজনে আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।