শেষ আপডেট: 29th February 2024 19:01
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ঘটনাটি ২০০২ এর মার্চ-এপ্রিলের। উত্তর কলকাতার দমদম স্টেশন এলাকা জোড়া খুনের ঘটনাকে কেন্দ্র করে কেঁপে ওঠে। নির্জন মাঠ থেকে দুই তরুণের দেহ উদ্ধার করে পুলিশ। বাতাসে ভাসছিল খুনিদের নাম। কিন্তু পরিবার সাহস করে থানা-পুলিশ করেনি। অনেক পরে নাম জড়ায় এলাকার দোর্দণ্ডপ্রতাপ সিপিএম নেতা দুলাল বন্দ্যোপাধ্যায় ও তাঁর সাঙ্গপাঙ্গদের। অভিযোগ গড়ায় রাজ্য সিপিএমের সদর দফতর আলিমুদ্দিন স্ট্রিটে। কিন্তু পুলিশের মতো পার্টিরও নেতারাও তখন মুখে কুলুপ আটেন।
আচকাই এক সকালে পুলিশ ঘোষণা করে তারা গ্রেফতার করেছে ওই সিপিএম নেতাকে। সেই ঘোষণার পর পরই রাজ্য সিপিএমের সদর দফতর দুলালকে বহিষ্কারের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয়। প্রশ্ন ওঠে, দুলালের বিরুদ্ধে বছরের পর বছর অভিযোগের বন্যা বয়ে গেলেও পার্টি কেন ব্যবস্থা নেয়নি।
শাহজাহান শেখের সঙ্গে দুলালের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগের পুরোপুরি না হলেও অনেকটাই মিল আছে। দুলাল ও তাঁর অনুগামীদের বিরুদ্ধে এলাকায় তোলাবাজি, সিন্ডিকেট চালানো, ভোট লুঠের অভিযোগ ছিল। যে অভিযোগ উঠেছে সন্দেশখালির বাঘ বলে পরিচিত শাহজাহানের বিরুদ্ধেও। কিন্তু বর্তমান শাসক দলের বিরুদ্ধেও ওই নেতার ব্যাপারে চোখ কান বন্ধ করে রাখার অভিযোগ উঠেছে।
অথচ, বৃহস্পতিবার দেখা গেল দীর্ঘদিন গা ঢাকা দিয়ে সন্দেশখালির সেই ডন গ্রেফতার হতেই আজকের শাসক দল তৃণমূল তাঁকে দল থেকে ছয় বছরের জন্য বহিষ্কার করল।
শুধু শাহজাহান নয়, ওই তৃণমূল নেতার তিন অনুগামী শিবু হাজরা, উত্তম সর্দার, অজিত মাইতিদের বিরুদ্ধেও
জোড়াফুল শিবিরের নেতারা ব্যবস্থা নিয়েছেন পুলিশ তাদের গ্রেফতার করার পর। নেতার মতো শাহজাহানের তিন অনুগামীকেও ছয় বছরের জন্য পার্টি থেকে তাড়িয়ে দিয়েছে তৃণমূল।
জোড়া খুনের মামলায় নিম্ন আদালতে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত দুলাল ব্যানার্জি সুপ্রিম কোর্ট থেকে রেহাই পেয়ে বিগত কয়েক বছর যাবত মুক্ত। তবে সিপিএম তাঁকে আর দলে ফেরায়নি।
কলকাতা পুলিশ সম্প্রতি একটি খুনের মামলায় ভাঙরের তৃণমূল নেতা তথা প্রাক্তন বিধায়ক আরাবুল ইসলামকে গ্রেফতার করেছে। সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম অভিযোগের সুরে বলেছেন, আরাবুলকে আগেও পুলিশ গ্রেফতার করেছিল। তখন তৃণমূল এই নেতাকে বহিষ্কার করে। কিছুদিন পরই আবার তাঁকে দলে ফিরিয়ে নিয়েছিল। সেলিম ইঙ্গিত করতে চেয়েছেন, তৃণমূল যাদের সাসপেন্ড করছে, পরিস্থিতির বদল হলে আবার তাদের দলে ফিরিয়ে নেওয়া হবে।
কিন্তু দুলাল থেকে শাহজাহান, সেই ট্র্যাডিশন সমানে চলেছে, পুলিশ গ্রেফতার না করলে প্রভাবশালীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয় না পার্টি।