শেষ আপডেট: 8th January 2025 19:31
দ্য ওয়াল ব্যুরো: ভোরের শান্ত কলকাতায় আচমকাই ধাক্কা। ভূমিকম্পের কম্পনে কেঁপে উঠল শহর। শুধু কলকাতা নয়, উত্তরবঙ্গ থেকেও কম্পন অনুভূত হয়েছে। ভূমিকম্পের কেন্দ্রস্থল নেপাল, যেখানে রিখটার স্কেলে কম্পনের তীব্রতা ছিল ৭.১। এই ভয়ঙ্কর ধাক্কায় নেপালে আতঙ্কের ছায়া নেমে এসেছে। তিব্বতে মৃত্যু হয়েছে ৯৫ জনেরও বেশি। প্রথম কম্পনের পর ৪ ঘণ্টায় একের পর এক ৮টি আফটারশক অনুভূত হয়েছে। ভারতের বিহার, মধুবনী, এমনকি প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ, চিন, ভুটানেও কম্পনের আঁচ পড়েছে। ভোরের এই ভূমিকম্প কার্যত পাঁচটি দেশকে নাড়িয়ে দিয়েছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, যদি এমন একটি শক্তিশালী ভূমিকম্প কলকাতায় কেন্দ্র করে হত, তবে পরিস্থিতি কতটা ভয়ঙ্কর হতে পারত তা কল্পনা করাও কঠিন। শহরের ঘনবসতি এবং বহু পুরনো ভবনের কারণে ক্ষতির মাত্রা হতে পারত ভয়াবহ। কলকাতার পাশাপাশি দক্ষিণবঙ্গ এবং উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলাতেও টের পাওয়া গেল ভূমিকম্প।
কম্পনের উৎস ছিল নেপাল। সেখানেই সকাল সাড়ে ছ’টায় তীব্র ভূমিকম্পে কেঁপে ওঠে চারপাশ। এক মুহূর্তেই ভয়ের স্রোত বইয়ে দেয় এই ভূমিকম্প। উত্তরের পাহাড়ি জনপদ থেকে শুরু করে দক্ষিণবঙ্গের সমতল— কম্পনের ঝাঁকুনি সবখানে ছড়িয়ে পড়ে। কিন্তু কেন বাড়ছে ভূমিকম্প? এই নিয়ে দ্য ওয়ালের তরফ থেকে যোগাযোগ করা হল ভূতত্ত্ববিদ জ্ঞানরঞ্জন কয়ালের সঙ্গে।
কেন এত ঘন ঘন ভূমিকম্প হচ্ছে? কী ঘটনা ঘটছে পৃথিবীর অন্দরে?
জ্ঞানরঞ্জন কয়াল বলছেন, বছর দুয়েক ধরে নেপালে পরপর যে সব ভূমিকম্প হয়েছে, তাতে গোটা হিমালয়ের ভূস্তর আরও অস্থির হয়ে গেছে। এর ফলে মাঝারি মাত্রার ভূমিকম্পের পরেও শক্তিশালী ভূমিকম্পোত্তর কম্পন (আফটার শক) অনুভূত হচ্ছে।
বারবার আফটার শকের কারণ কী?
উপগ্রহ চিত্রে পৃথিবীর যে রূপ এখন আমরা দেখতে পাই তার সঙ্গে কোটি কোটি বছর আগের পৃথিবীর মিল নেই। একটু একটু করে রূপ বদলাচ্ছে। বিজ্ঞানীরা মনে করেন, এই বদলের অন্যতম কারণ হচ্ছে এই টেকটনিক প্লেট ও তার নীচে পৃথিবীর গভীরে থাকা ম্যান্টল স্তরের চলাফেরা। গলিত ম্যান্টলের প্রবাহের ফলে তার উপরের টেকটনিক প্লেটগুলোর একে অপরের সঙ্গে ধাক্কা লাগে। কখনও মৃদু ধাক্কা আবার কখনও জোরদার ঠোকাঠুকি হয়ে প্লেটগুলো একে অপরের থেকে দূরে সরে যায়। কখনও বা একটি প্লেট অন্যটার ঘাড়ে উঠে যায়। এই ধাক্কাধাক্কির ফলেই ভূত্বকের পরিবর্তন হয়। আর এই পরিবর্তনের সঙ্গী হয় ভূমিকম্প, অগ্ন্যুৎপাত বা কখনও সুনামি।