Date : 15th Jul, 2025 | Call 1800 452 567 | info@thewall.in
একটি গ্রাম পঞ্চায়েতেই ৪ হাজারের বেশি ভুয়ো জন্ম-মৃত্যু সার্টিফিকেট! হাইকোর্টে জানাল রাজ্যক্রিকেট বল খুঁজতে গিয়ে বাড়ি থেকে উদ্ধার ৭ বছর পুরনো মানব কঙ্কাল! হায়দরাবাদে রহস্যEng vs Ind: দাম পেল না জাদেজার অবিস্মরণীয় লড়াই, ২২ রানে হেরে গেল ভারতজাল রিফান্ড! একাধিক রাজ্যে অভিযান আয়কর বিভাগের, ধরা পড়ল হাজার কোটির কর ফাঁকিহিন্দমোটরের জমিতে বন্দে ভারত ট্রেন ও মেট্রোর কোচ তৈরির কারখানা, জমি লিজে দিচ্ছে রাজ্য সরকারমহাকাশে ১৮ দিন কাটিয়ে ফিরছেন শুভাংশু, ২২ ঘন্টার দীর্ঘ পথ চেয়ে অধীর আগ্রহে অপেক্ষায় দেশবাসীবলিউডে আউটসাইডার ইনসাইডারি গেমটার বিষয়ে আমি প্যান্ডেমিকের পর থেকে শুনছি'মাকু' লোকজন মিশে গেছে! চাকরিহারাদের 'খোলা চিঠি' দিয়ে বিশেষ বার্তা শুভেন্দুর'বাবাকে সবচেয়ে বেশি ভালবাসতেন, অপমান থেকে বাঁচতে সেই খুন করল?' প্রশ্ন তুলছেন রাধিকার বান্ধবীকোর্টের নির্দেশে মুম্বইয়ে মসজিদ মিনার মাইকহীন, আজান শোনাচ্ছে অনলাইন অ্যাপ, বাড়ির স্পিকার
Paris Olympics 2024

অলিম্পিক্সে ভারতের ২টি পদক জয়, ১২৫ বছর ধরে কলকাতার যুবককে নিয়ে টানামানি কোন দুই দেশের?

কলকাতার এক যুবকের সেই পদকজয়ের কৃতিত্ব নিয়ে এখন ভারতের সঙ্গে ওই দেশের মৌখিক কুস্তি চলছে।

অলিম্পিক্সে ভারতের ২টি পদক জয়, ১২৫ বছর ধরে কলকাতার যুবককে নিয়ে টানামানি কোন দুই দেশের?

নরম্যান প্রিটচার্ড।

শেষ আপডেট: 2 August 2024 10:57

দ্য ওয়াল ব্যুরো: ১২৫ বছর আগে ভারতের প্রথম দুটি অলিম্পিক্স পদক জয় নিয়ে দড়ি টানাটানির লড়াই শুরু হয়েছে। ভারতের সঙ্গে আরও একটি দেশ ওই পদক গলায় ঝোলানোর দাবি তুলেছে। তারা কারা, কেনই বা ভারতের মুকুট তারা মাথায় তোলার চেষ্টা চালাচ্ছে? কলকাতার এক যুবকের সেই পদকজয়ের কৃতিত্ব নিয়ে এখন ভারতের সঙ্গে ওই দেশের মৌখিক কুস্তি চলছে। যার পিছনে বেশ কিছু কারণ ও যুক্তি লুকিয়ে রয়েছে।

ঘটনা জানতে হলে সময়সরণি বেয়ে পিছিয়ে যেতে হবে বহুকাল আগে। ১৯০৬ সালের এক শীতের রাতের লন্ডনে। শহরের বড় বড় মাতব্বররা একটি মহা নৈশভোজে মিলিত হয়েছেন। হুড়দাড় করে চলা সেই ভোজসভায় একটি বছর বিশের শেষ কোঠার তরতাজা যুবকও ছিলেন। তিনি ১৯০৩ সালে দেখা ভারতের দিল্লি দরবারের রাজকীয় চালচলনের গপ্প ফাঁদছিলেন ব্রিটিশ গণমান্যদের কাছে।

কলকাতার সেই যুবকের বাচনভঙ্গি দেখে পছন্দ হয় স্যার চার্লস ওয়েন্ডহামের। ওয়েন্ডহাম হলেন সেকালের বিশিষ্ট অভিনেতা ও থিয়েটার মালিক। তিনি এগিয়ে এসে ওই যুবককে অভিনয়ের প্রস্তাব দিলেন। কেননা, এতক্ষণ ওই যুবকের কণ্ঠস্বর ও বলার হাবভাব দেখে তাঁর মধ্যে অভিনয়ের প্রতিভা খুঁজে পেয়েছিলেন স্যার চার্লস।

নরম্যান প্রিটচার্ড নামে ওই যুবক সেই প্রস্তাবে রাজিও হয়ে যান। চার্লসের হাত ধরে শুরু করে দেন অভিনয়। ১৯২০ সালের মধ্যে তাঁর ঝুলিতে এসে পড়ে বেশ কিছু নির্বাক চলচ্চিত্রের নায়কের তকমা। কিন্তু, কলকাতার এই যুবকের হলিউড জয়ই তাঁর মুকুটের একমাত্র পালক নয়। তিনি যে সময়ের দিল্লির গপ্প হাঁকাচ্ছিলেন, তারও তিন বছর আগে ১৯০০ সালের প্যারিস অলিম্পিক্সে দুটি রুপোর মেডেল ঝুলেছিল নরম্যানেরই গলায়। শুধু ভারত নয়, তিনি অলিম্পিক্সে পদকজয়ী প্রথম এশীয়।

এই নরম্যান প্রিটচার্ডের নাম শুনেছেন কেউ? মাথা চুলকোবেন অনেকে। ইন্টারনেটেও খুব বেশি তথ্য মিলবে না। ১৮৭৫ সালে জন্ম। খাঁটি সাহেব, অথচ জন্মেছিলেন কলকাতা লাগোয়া আলিপুরে। তখন মহারানির ব্রিটিশ সাম্রাজ্যে কলকাতা এশিয়ার অন্যতম শ্রেষ্ঠ শহর ও বাণিজ্যকেন্দ্র। নর্ম্যানের বেড়ে ওঠা এখানেই। পড়তেন সেন্ট জেভিয়ার্স স্কুল ও কলেজে। ফুটবল খেলতেন। অ্যাথলেটিক্সেও আগ্রহ ছিল। ততদিনে আধুনিক অলিম্পিকের পথ চলা শুরু হয়েছে সবে। একেবারে প্রাচীন গ্রিক ঘরানার সঙ্গে তাল মিলিয়ে একটি শহরে খেলা হবে বিভিন্ন ইভেন্ট। ১৮৯৬ সালে প্রথম আধুনিক অলিম্পিক হল এথেন্সে। দ্বিতীয় অলিম্পিককে প্যারিসে নিয়ে এলেন আধুনিক অলিম্পিকের অন্যতম রূপকার, পিয়ের কুবার্তিঁ। ১৯০০ সাল। সেই অলিম্পিক্সেই ব্রিটিশ ভারতের হয়ে নেমেছিলেন নরম্যান। ২০০ মিটার ও ২০০ মিটার হার্ডলসে রুপো জিতেছিলেন।

এই নরম্যান প্রিটচার্ড ভারতীয় না ব্রিটিশ তা নিয়েই শুরু হয়েছে দ্বন্দ্বযুদ্ধ। কারণ ব্রিটেনের মানুষজন তাঁকে ভারতীয় মানতে অরাজি। একে বংশ কৌলীন্যে নীলরক্ত তো বটেই, তার উপর ভারত তখন ব্রিটিশ উপনিবেশ হওয়ায় স্বাধীন রাষ্ট্রই নয়। তাই ভারতীয়দের প্রিটচার্ডকে নিয়ে নিজের পিঠ নিজে চাপড়ানোর কোনও অর্থই নেই। ফলে ১২৫ বছর আগে ভারত অলিম্পিক্সে দুটি পদক জিতেছিল, এই দাবিও ধোপে টেকে না বলে দাবি ব্রিটিশদের।

যদিও আন্তর্জাতিক অলিম্পিক কমিটি নরম্যান প্রিটচার্ডকে ভারতীয় এবং একটি বিখ্যাত ব্রিটিশ ক্রীড়া পত্রিকা 'দ্য ইন্ডিয়ান চ্যাম্পিয়ন' বলে উল্লেখ করে। নরম্যান কলকাতার বার্ড অ্যান্ড কোম্পানিতে কাজ করতেন। ১৯০২-১৯০৫ সাল পর্যন্ত সেখানেই চাকরি করতেন তিনি। আর একটি সূত্রে জানা যায়, পাকাপাকিভাবে বাবার সঙ্গে ইংল্যান্ড চলে যাওয়ার আগে তিনি অসমে চট, চা এবং নীলচাষ করতেন। তাঁদের পারিবারিক ৫ হাজার একর জমি ছিল সেখানে। রাগবি ও ফুটবল প্রিয় নরম্যান আইএফএ গড়ে তোলা ও সেখানে প্রশাসক হিসেবেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় ছিলেন।

ব্রিটিশ আমলের বেঙ্গল প্রেসিডেন্সি অ্যাথলেটিক মিটে তিনি পরপর সাতবার ১০০ ইয়ার্ড দৌড়ে জিতেছিলেন। ১৮৯৯ সালের ১৮ ফেব্রুয়ারি কলকাতার ঘাসের মাঠে তিনি ১০০ ইয়ার্ড দৌড়ে সময় নিয়েছিলেন ৯.৮ সেকেন্ড। ২০২৪ সালের আগস্টে উসেইন বোল্ট ১০০ মিটার দৌড়ে বিশ্বরেকর্ড করেন ৯.৫৮ সেকেন্ডে।

অ্যাথলেটিক্স, খেলাধুলো ছেড়ে ইংল্যান্ডে গিয়ে তিনি নাটকের দল ভিড়ে যান। সেখানে কয়েক বছরের মধ্যে খ্যাতির শিখরে পৌঁছে অতলান্ত পেরিয়ে হাজির হন হলিউডে। ১৯১৪ সাল থেকে সেখানে প্রায় ২৫টি নির্বাক চলচ্চিত্রে কাজ করেন। পাট, চা-চাষি নরম্যান হলিউডে গিয়ে নাম নেন নরম্যান ট্রেভর।


ভিডিও স্টোরি