শেষ আপডেট: 16th September 2024 11:52
দ্য ওয়াল ব্যুরো: আর জি কর কাণ্ডে দেশের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়কে খোলা চিঠি। দেশ ও বিদেশের নাগরিক সমাজ, বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ মিলিয়ে প্রায় ৫৫টি গোষ্ঠী-সংগঠন এবং হাজারের বেশি সুশীল সমাজের প্রতিনিধি চন্দ্রচূড়কে এক লিখিত আবেদন জানিয়েছেন। তাঁরা শুধু এই ঘটনার ন্যায়বিচারই নয়, যৌন হিংসা এবং পুলিশি দমনের বিরুদ্ধে কার্যকরী নির্দেশ বা রায়দানের দাবি জানিয়েছেন।
সাউথ এশিয়ান সলিডারিটি কালেক্টিভ, ডব্লুএওয়াইভিই ফাউন্ডেশন, লইয়ার্স কালেক্টিভ, সিপিএম এবং আদিবাসী উওমেন্স নেটওয়ার্কের মতো ৫৫টি সংগঠন এবং হাজারের বেশি সুশীল সমাজের প্রতিনিধি গত রবিবার (১৫ সেপ্টেম্বর, ২০২৪) প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়কে লিখিত আর্জিপত্র দিয়েছেন। এই খোলা চিঠিতে নটি দাবি জানানো হয়েছে প্রধান বিচারপতির কাছে। যার মধ্যে আর জি কর কাণ্ডে অপরাধী শনাক্তকরণ, গ্রেফতার এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি রয়েছে। সুপ্রিম কোর্ট গঠিত জাতীয় টাস্কফোর্সের কাঠামো পরিবর্তনের দাবি জানিয়ে বলা হয়েছে, এই কমিটিতে ডাক্তার, ছাত্র, সমাজকর্মী এবং আইনজীবী নিয়োগ করা হোক। আঞ্চলিক ভিত্তিতে এই কমিটি ধর্ষণ এবং শিক্ষানবীশ ডাক্তার খুনের ঘটনায় প্রাতিষ্ঠানিক গাফিলতি, স্বাস্থ্যক্ষেত্রে দুর্নীতি চক্র ফাঁস করতে অনেক বেশি কার্যকর হবে।
চিঠিতে আরও দাবি জানানো হয়েছে, জাতীয় টাস্কফোর্সকে প্রতিবাদী ডাক্তার, পড়ুয়া, মহিলা, নারীবাদী সংগঠন এবং এই ইস্যুতে যারা আন্দোলন করছে তাদের সঙ্গেও আলোচনা করতে হবে। সুপ্রিম কোর্ট যেন একটি বিশেষ ফাস্ট ট্র্যাক আদালত গঠনের নির্দেশ দেয় সে বিষয়েও আর্জি জানানো হয়েছে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতিকে। শীর্ষ আদালতের প্রধান বিচারপতি চন্দ্রচূড়ের কাছে তাঁদের আর্জি, দুর্নীতিগ্রস্ত ও দোষী পুলিশ কর্তা, স্থানীয় রাজনৈতিক দলের কর্মী এবং যারাই শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদী ও নাগরিক জমায়েতের উপর শারীরিক নির্যাতন চালিয়েছে তাদের শাস্তির নির্দেশ দিতে।
চিঠির শুরুতেই বলা হয়েছে, আমরা নিম্ন স্বাক্ষরকারীরা নারীবাদী সংগঠন, ছাত্র, গণসংগঠন এবং সাধারণ নাগরিক হিসেবে হতাশা প্রকাশ করছি এই কারণে যে সুপ্রিম কোর্ট স্বতঃপ্রণোদিতভাবে আর জি কর কাণ্ডে মামলা গ্রহণ করলেও তা এখনও পর্যন্ত ন যযৌ ন তস্থৌ অবস্থায় দাঁড়িয়ে রয়েছে। প্রতিবাদী মানুষের অভিযোগ, ক্ষোভ এবং আবেগকে স্পর্শ করতে ব্যর্থ হয়েছে।
এক মাস কেটে গেলেও সিবিআই এখনও নৃশংস এই ধর্ষণ ও খুনের তদন্তে কোনও আলো দেখাতে পারেনি। সুপ্রিম কোর্টের গত দিনের শুনানির সমালোচনা করেও বলা হয়েছে, আগের দিন শীর্ষ আদালতের লক্ষ্য ছিলেন প্রতিবাদী জুনিয়র ডাক্তাররা। রাজ্যের স্বাস্থ্যব্যবস্থার অবনতির জন্য যেন তাঁরাই দায়ী, তা বোঝাতে চেয়েছিল আদালত। কিন্ত বাস্তব ঘটনা হচ্ছে, আপামর নাগরিক সমাজ, সমস্ত স্বাস্থ্যকর্মী এবং আন্দোলনরত ডাক্তাররা দাবি জানাচ্ছেন, সুলভ চিকিৎসা, দুর্নীতিমুক্ত পরিবেশ এবং হুমকিমুক্ত কাজের পরিবেশ। আমরা চাই, ধীরগতি তদন্ত, উদ্দেশ্যমূলকভাবে অভিযুক্তদের রক্ষার চেষ্টা এবং নাগরিক প্রতিবাদের উপর হামলা বন্ধে প্রধান বিচারপতি কঠোর নির্দেশ দেবেন।