দীপা মেহতার 'ফায়ার' ছবির চিত্রনাট্য যেন বাস্তবের জমিতে পা রাখল।
শেষ আপডেট: 25 January 2025 05:46
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মাতাল স্বামী নিয়ে দুর্বিষহ হয়ে উঠেছিল জীবন। দিনরাত মদ গিলে স্ত্রীদের উপর চলত হেনস্তা-অত্যাচার। আর তাতেই দাম্পত্য জীবনের হতাশা থেকে দুই স্ত্রী স্বামীর ঘর ছেড়ে মন্দিরে গিয়ে নিজেরাই বিয়ে করে ফেললেন। ১৯৯৬ সালে প্রখ্যাত নারীবাদী মহিলা পরিচালক দীপা মেহতার 'ফায়ার' ছবির চিত্রনাট্য যেন বাস্তবের জমিতে পা রাখল। শহুরে অত্যাধুনিক শিক্ষিত ঘরানার নয়, একেবারে উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরের দেহাতি দুই মহিলার এই বিপ্লবে তাক লেগে গিয়েছে নারী প্রগতিবাদীদেরও।
সাংসারিক জীবনে হতাশ ও বীতশ্রদ্ধ দুই নারী বাঁচার নতুন রসদ সংগ্রহ করে নিয়েছেন নিজেরাই। বিয়ের পর থেকেই কবিতা ও গুঞ্জা নিজেদের মাতাল স্বামী নিয়ে কষ্টে দিন কাটাচ্ছিলেন। ইনস্টাগ্রামে তাঁদের দুজনের পরিচয় হয়। এবং তারপর থেকেই তাঁরা পরস্পরের মধ্যে জীবনের মিল খুঁজে পান। দুঃখের ভাগীদার হন। দুজনেই সংসার রোজ হেনস্তার শিকার হন, সংসার চালাতে নানান কষ্টের কথা নিজেদের মধ্যে ভাগাভাগি করে নেন। আর তা থেকেই দুজন দুজনের মধ্যে মনে মিল খুঁজে পান। আর মানসিকভাবে কাছাকাছি আসতে শুরু করেন। অবশেষে তাঁরা ঠিক করেন, এই সমাজ-সংসার ছেড়ে নিজেরা নিজেদের মতো স্বাধীনভাবে বাঁচবেন। হতাশা-দুঃখ কাটিয়ে নতুন করে জীবন শুরু করবেন।
এরপরেই তাঁরা ঘর ছাড়েন। এবং বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় দেওরিয়া এলাকার ছোটি কাশীতে শিব মন্দিরে গিয়ে বিয়ে করেন। গুঞ্জা ছিলেন এই বিয়ের বর হয়ে মালাবদল করেন কবিতার সঙ্গে। সারা জীবন একসঙ্গে থাকার শপথ নিয়ে প্রথামতো সাতবার মন্দির প্রদক্ষিণও করেন তাঁরা। সংবাদমাধ্যমের সামনে 'নবদম্পতি' বলেন, স্বামীর মদ্যপান ও রোজ অপমানে বীতশ্রদ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। তাই আমরা শান্তি ও ভালোবাসার একটি নতুন পৃথিবী গড়ে তুলতে চাই। গোরক্ষপুরেই আমরা থাকব বর-বউ হিসেবে এবং কাজ করে সংসার চালাব।
কবিতা-গুঞ্জা এখন গোরক্ষপুরে একটি ভাড়ার ঘর খুঁজছেন। মন্দিরের পুরোহিত উমাশঙ্কর পান্ডে জানান, মহিলারা নিজেরাই মালা এবং সিঁদুর নিয়ে এসেছিলেন। মন্দিরে ঢুকে সিঁদুর পরে নিজের মতো বেরিয়ে যান। এক মহিলা বলেন, তাঁর স্বামী রোজ মদ খেয়ে ফিরে তাঁকে মারধর করত। তাঁদের চার সন্তান রয়েছে। তিনি রোজই ভাবতেন বাপের বাড়ি চলে যাবেন অত্যাচারের হাত থেকে বাঁচতে। অন্য জন বলেন, তাঁর স্বামীও মদ্যপ ছিল, এবং তাঁকে সন্দেহ করত।