রিকশ চালিয়ে, কঠিন পরিশ্রম করে তাঁকে মানুষ করা বাবারও স্বপ্ন ভেঙে খানখান করে দিয়ে গেল বিমান দুর্ঘটনা।
পায়েল খটিক ও তাঁর পরিবার।
শেষ আপডেট: 13 June 2025 05:40
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মাত্র ৯ ঘণ্টার অপেক্ষা বাকি ছিল। তারপরেই বিদ্যার পীঠস্থান বলে পৃথিবী বিখ্যাত বিলাতের মাটিতে পা রাখলেই স্বপ্নের রাজকুমারের দেশে পৌঁছে যেতে পারতেন পায়েল। পুরো নাম পায়েল খটিক। কিন্তু, তার আগেই হুড়মুড় করে ভেঙে পড়ল তাঁর সেই স্বপ্নপূরণের পঙ্খীরাজ ঘোড়া। সাত সমুদ্দুর তেরো নদীর পারে পড়তে যাওয়া অপূর্ণই থেকে গেল পায়েলের। সেই সঙ্গে রিকশ চালিয়ে, কঠিন পরিশ্রম করে তাঁকে মানুষ করা বাবারও স্বপ্ন ভেঙে খানখান করে দিয়ে গেল বিমান দুর্ঘটনা।
বৃহস্পতিবার আমদাবাদ থেকে লন্ডনগামী এয়ার ইন্ডিয়ার এআই-১৭১ উড়ান ভেঙে পড়ে মৃত যাত্রীদের মধ্যে নাম রয়েছে পায়েল খটিকেরও। সোশ্যাল মিডিয়ায় বিমান সংস্থার পক্ষ থেকে সরকারিভাবে ২৪২ জনের মৃত্যু নিশ্চিত করা হয়েছে। সেই তালিকায় নাম রয়েছে ছাত্রী পায়েল খটিকেরও। খটিক পরিবারের আসল বাড়ি রাজস্থানে। তবে কাজের সূত্রে তাঁরা গুজরাতের হিম্মতনগরে থাকেন।
একটি ছোট কোম্পানিতে কাজ করতেন পায়েল। তারাই পড়াশোনার জন্য তাঁকে লন্ডন পাঠাচ্ছিল। আশ্চর্য হলেও সত্যি গ্রামের এবং নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারের মেয়ে পায়েল এই প্রথমবার কয়েক মিনিটের জন্য বিমানে চড়েছিলেন। এটাই ছিল তাঁর প্রথম ও শেষ বিমান যাত্রা। পায়েলের বাবার নাম সুরেশভাই খটিক। তিনি মালবাহী রিকশ চালিয়ে মেয়েকে লেখাপড়া শিখিয়েছিলেন এবং তাঁকে চাকরি পেতে পাশে দাঁড়িয়েছিলেন।
বাবার স্বপ্ন ছিল, নিজে যতই কঠিন পরিশ্রম করুন না কেন, মেয়ে যেন তার স্বপ্নের উড়ানে ভর করে আকাশে উড়তে পারে। কিন্তু, সেই আশা আচমকাই মুখ থুবড়ে এসে পড়ে কঠিন বাস্তবের মাটিতে। স্থানীয়রা জানান, পায়েল স্কুল জীবন থেকে ক্লাসে প্রথম স্থান অধিকার করে এসেছেন। তাঁর স্বপ্ন ছিল একদিন পরিবারের সব দায়িত্ব সামাল দেওয়া। বাবাকে কাজের থেকে ছুটি দেওয়া। কিন্তু তার আগেই তিনি সকলের কাছ থেকে ছুটি নিয়ে চলে গেলেন অজানা দেশে। স্বপ্নের আগুন ছাই হয়ে রয়ে গেল নিজের দেশেরই মাটিতে।