প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভিঝিঞ্জাম গভীর সমুদ্র বন্দরের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করছেন। রয়েছেন গৌতম আদানি ও কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন।
শেষ আপডেট: 2 May 2025 13:16
দ্য ওয়াল ব্যুরো: এক মঞ্চে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, ইন্ডিয়া জোটের 'চক্ষুশূল' গৌতম আদানি ও কেরলের সিপিএম মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন। শুক্রবার এই বিরল দৃশ্যের সাক্ষী থাকল গোটা দেশ। বাড়তি পাওনা হচ্ছে, মোদী বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় তিরুবনন্তপুরম বিমানবন্দরে নামছেন শুনে, তাঁকে নিজের লোকসভা কেন্দ্রে স্বাগত জানাতে দিল্লি থেকে হন্তদন্ত হয়ে প্রায় শেষ মুহূর্তে সেখানে পৌঁছলেন কংগ্রেস সাংসদ শশী তারুর। এদিনের অনুষ্ঠান মঞ্চে হাজির ছিলেন মোদী-বিজয়নের পাশেই।
সরকারি অনুষ্ঠান হোক কিংবা রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা, সব মিলিয়ে সৌজন্যের এক নজির করলেন হাড়েমজ্জায় কমিউনিস্ট বিজয়ন এবং কংগ্রেসের ডিএনএ নিয়ে জন্মানো শশী তারুর। এদিন প্রধানমন্ত্রী মোদী কেরলের তিরুবনন্তপুরমের কাছে গৌতম আদানির ভিঝিঞ্জাম গভীর সমুদ্র বন্দরের উদ্বোধন করলেন। যৌথভাবে এই গভীর সমুদ্র বন্দরটি তৈরি করেছে আদানি পোর্টস এবং বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল লিমিটেড। এই প্রকল্পটি ভারতের প্রথম গভীর সমুদ্র বন্দর, যেখান থেকে শুধু কন্টেনার ট্রান্সশিপমেন্টের কাজ হবে।
জলপথ বাণিজ্যে ৮,৮৬৭ কোটি টাকার ভিঝিঞ্জাম বন্দর একটি নয়া পালক। যা আন্তর্জাতিক সমুদ্রপথ পণ্য সরবরাহে নয়া দিগন্ত খুলে দেবে। গত জুলাই মাসে এই বন্দরের কাজ শুরু হয়ে গিয়েছে। এ পর্যন্ত ২৫০টি কন্টেনারবাহী জাহাজ এখান থেকে চলাচল করেছে। গভীর সমুদ্র বন্দরটি আন্তর্জাতিক শিপিং লাইনের খুব কাছে। এখানে সমুদ্রের স্বাভাবিক গভীরতা হল ২০ মিটার। ব্লুমবার্গের রিপোর্ট অনুযায়ী, বড় বড় জাহাজ এতদিন ভারতের বন্দরে ভিড়তে না পেরে কলম্বো, দুবাই ও সিঙ্গাপুরকে বেছে নিত।
উদ্বোধনী ভাষণে মোদী কারও নাম না করে বলেন, আজকের এই প্রকল্প দেখে অনেকের ঘুম উড়ে যাবে। কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন এবং শশী তারুরকে উদ্দেশ করে বলেন, আপনারাও তো ইন্ডিয়া জোটের এক শরিক। আজ আপনারাও এখানে উপস্থিত। যা দেখে অনেকের ঘুম উড়ে যাবে।
অন্যদিকে, বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রীকে বিমানবন্দরে আসেন কংগ্রেস এমপি শশী তারুর। তিরুবনন্তপুরম বিমানবন্দরে স্বাগত জানাতে এসেছিলেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নও। মোদীর সঙ্গে নিজের ছবি পোস্ট করে শশী তারুর লিখেছেন, দিল্লি বিমানবন্দরের অব্যবস্থায় দেরি হয়ে যাওয়া সত্ত্বেও আমি কোনওভাবে ঠিক সময়ে পৌঁছে যেতে পেরেছি। আমার কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানাতে উপস্থিত থাকতে পেরেছি।
শশী তারুরের এরকম মোদী-প্রীতির কথা প্রকাশ্যে আসা মাত্রই কংগ্রেস এমপিকে নিয়ে চর্চা শুরু হয়ে গিয়েছে। শশী তারুর বেশ কিছুদিন ধরেই মোদী ও কেন্দ্রীয় সরকার এবং কেরলের বাম সরকারেরও প্রশংসা করে মন্তব্য করে চলেছেন। শেষবার পহলগাম নিয়েও শশী তারুরের মন্তব্যকে ঘিরে ব্যাপক আলোড়ন পড়ে দলের ভিতরে। কেউ কেউ তাঁকে বিজেপির মুখপাত্র বলেও ঠেস মারেন। তারপর শশী তারুর, কর্নাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়াকে সতর্ক করে দেয় দল। অথচ এবার ফের মোদীর সঙ্গে করমর্দনের ছবি দিয়ে কংগ্রেস হাইকমান্ডকে কী বার্তা দিতে চাইলেন তা নিয়ে গভীর চর্চা চলছে।