শেষ আপডেট: 9th December 2023 09:25
দ্য ওয়াল ব্যুরো: শুক্রবার প্রশ্ন ঘুষ কাণ্ডে অভিযুক্ত তৃণমূল সাংসদ মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে লোকসভায় এথিক্স কমিটির রিপোর্ট পেশ হয়। তার পর সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে বিতর্কও হয় সংসদের নিম্ন কক্ষে। কিন্তু সেই বিতর্কে মহুয়া মৈত্রকে কোনওভাবেই আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিলেন না স্পিকার ওম বিড়লা।
এ ব্যাপারে আঠারো বছরের পুরনো ঘটনার দ়ৃষ্টান্ত দেখাতে চেয়েছেন স্পিকার। ২০০৫ সালে প্রশ্ন ঘুষ কাণ্ডের অভিযোগে দশ জন সাংসদকে বরখাস্ত করা হয়েছিল। সেই সময় তৎকালীন স্পিকার সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় অভিযুক্ত সাংসদদের বিতর্কে অংশ নেওয়ার সুযোগ দেননি। সেই নজির দেখিয়ে স্পিকার এদিন বলেন, লোকসভায় প্রাক্তন অধ্যক্ষরা যে দৃষ্টান্ত রেখে গিয়েছেন, তা মেনে চলাই আমার কর্তব্য। সুতরাং তৃণমূলের তরফে কোনও সাংসদ বিতর্কে অংশ নিতেই পারেন। কিন্তু অভিযুক্ত সাংসদকে সুযোগ দেওয়া যাবে না।
এ ব্যাপারে পাল্টা যুক্তি দিয়ে লোকসভায় কংগ্রেস নেতা অধীর চৌধুরী এদিন বলেন, এর আগে প্রশ্ন ঘুষ কাণ্ডে যখন দশ জন সাংসদকে বহিষ্কার করা হয়েছিল, তার প্রেক্ষাপট ছিল ভিন্ন। কোবরা পোস্টের স্টিং অপারেশনে ওই সাংসদদের প্রশ্ন করার বিনিময়ে ঘুষ নিতে দেখা গিয়েছিল। ক্যামেরায় সেই ফুটেজ বন্দি ছিল। মহুয়া মৈত্রর বিরুদ্ধে তেমন কোনও অকাট্য প্রমাণ এখনও মেলেনি। তাঁর বিরুদ্ধে ফৌজদারি তদন্তেরও কিনারা হয়নি।
কিন্তু স্পিকার জানিয়ে দেন, তিনি প্রথা ভাঙতে পারবেন না। তার পরেও লোকসভায় ত়ৃণমূল নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় আবেদন করেন যাতে অন্তত পাঁচ মিনিট মহুয়াকে আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দেওয়া হয়। কিন্তু তা শুনতে চাননি স্পিকার। এই সময়ে মহুয়া সুদীপ ও কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়কে বলেন, তৃণমূল সভা বয়কট করুক। কিন্তু কল্যাণ তাঁকে বলেন, না, দলের অবস্থান লোকসভায় জানাতে হবে।
বিতর্কে অংশ নিয়ে কল্যাণ বলেন, লোকসভায় যেহেতু মহুয়া ভাগ্য নির্ধারিত হচ্ছে, তাই লোকসভার ভূমিকা এখানে আধা বিচারবিভাগীয় প্রতিষ্ঠানের মতই। এবং এই ধরনের বিচারের শর্তই হল অভিযুক্তকে বলতে দেওয়া।
কিন্তু সেই যুক্তিও টেকেনি। মাত্র ঘণ্টা খানেক সময়ের মধ্যে আলোচনা শেষ করে ভোটাভুটিতে চলে যান স্পিকার। তার পর ধ্বনি ভোটের ভিত্তিতে মহুয়াকে লোকসভা থেকে বহিষ্কার করার প্রস্তাবে সিলমোহর দেওয়া হয়।