Advertisement
Advertisement
শেষ আপডেট: 15 February 2024 13:05
দ্য ওয়াল ব্যুরো: সুপ্রিম কোর্ট বৃহস্পতিবার আরও এক ঐতিহসিক রায়ে ‘ইলেক্টোরাল বন্ড’-কে অসাংবিধানিক, বেআইনি বলে ঘোষণা করেছে। শীর্ষ আদালত বলেছে, রাজনৈতিক দলের অর্থ সংগ্রহের এই ব্যবস্থা ২০০৫ সালের তথ্য জানার অধিকার আইনের পরিপন্থী। জনসাধারণের জানার অধিকার আছে কারা রাজনৈতিক দলগুলিতে চাঁদা দিচ্ছে।
ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে, শীর্ষ আদালতের রায়ে বড় ধাক্কা খেল বিজেপি ও নরেন্দ্র মোদীর সরকার। ২০১৮ সালে মোদী সরকার ইলেক্টোরাল বন্ড ব্যবস্থা চালু করে। আদালতে এই সংক্রান্ত মামলায় সরকার পক্ষ নানাভাবে নয়া ব্যবস্থাকে বৈধ বলে দাবি করে।
বৃহস্পতিবার প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন পাঁচ সদস্যের সাংবিধানিক বেঞ্চ ইলেক্টোরাল বন্ড নিয়ে রায় দেয়। বেঞ্চের বাকি সদস্যরা হলেন, বিচারপতি সঞ্জীব খান্না, বিচারপতি বিআর গাভাই, বিচারপতি জেবি পাদরিওয়ালা এবং মনোজ মিশ্র। গত বছর ২ নভেম্বর শীর্ষ আদালতে এই মামলার শুনানি শেষ হয়েছিল।
বৃহস্পতিবারের রায়ে আদালত বলেছে, ইলেক্টোরাল বন্ড সংবিধানের মৌলিক অধিকারে উল্লেখিত জানার অধিকারকে হরণ করেছে। দেশের নাগরিকদের কাছে রাজনৈতির দলের আয়-ব্যয় নিয়ে কোনও অসচ্ছতা থাকা উচিৎ নয়।
প্রসঙ্গত, ২০১৭ সালের বাজেটে তৎকালীন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি এই স্কিম চালু করার কথা বলেন। পরের বছর স্কিমটি চালু হয়। ততে বলা হয় বছরে দু’বার স্টেট ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া ইলেক্টোরাল বন্ড বিক্রি করতে পারবে। নাগরিকেরা বন্ড কিনে তা কোনও রাজনৈতিক দলকে দান করতে পারেন। এই বন্ডে কোনও সুদ দেওয়া হয় না। কিন্তু কে কোন দলকে বন্ড মারফত অর্থ সাহায্য করল তা জানার উপায় থাকে না
বন্ড চালুর আগে নির্বাচন কমিশনের নিয়ম ছিল কোনও রাজনৈতিক দলকে কুড়ি হাজার টাকার বেশি অর্থ দান করলে তা চেকে দিতে হবে।
এই নিয়ম ফাঁকি দিতে অনেকেই কুড়ি হাজার টাকা দু-কিস্তিতে নগদে জমা করত। তাতে রাজনৈতিক দলগুলিও তাদের আয় গোপন করতে পারত। দাতাও কালো টাকা সাদা করে নেওয়ার সুযোগ পেতেন।
নির্বাচন কমিশন এই অনিয়ম আটকাতে এখন টাকার অঙ্ক কমিয়ে দুশো করে দিয়েছে। অর্থাৎ রাজনৈতিক দলকে দুশো টাকা বা তার বেশি অর্থ দিতে হলে চেকে অথবা অনলাইন ব্যবস্থায় দিতে হবে।
তারপরও মোদী সরকার দাবি করে, রাজনৈতিক দলকে চাঁদা দেওয়ার ক্ষেত্রে নগদ লেনদেন আটকাতে তারা বন্ড চালু করতে চায়। বাস্তবে দেখা যায়, বন্ড চালুর পর বিজেপির রোজগার বিপুল হয়েছে।
অন্যদিকে, কংগ্রেস-সহ বিরোধী দলগুলি অর্থ সংকটের মুখে পড়েছে। একটি হিসাবে দেখা যায়, ২০১৮-২০২৩—এই পাঁচ বছরে বন্ড মারফত লেনদেন হওয়া মোট অর্থের ৫৪ শতাংশই বিজেপি পেয়েছে। বাকি ৪৬ শতাংশ পেয়েছে অবশিষ্ট শতাধিক দল।
Advertisement
Advertisement