শেষ আপডেট: 21st October 2024 09:25
দ্য ওয়াল ব্যুরো: পপুলার ফ্রন্ট অফ ইন্ডিয়ার সক্রিয়তা নিয়ে কেন্দ্রের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে সম্প্রতি বিস্তারিত রিপোর্ট জমা দিয়েছে এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। এই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা তাদের হত চার বছরের তদন্তে প্রাপ্ত তথ্য সম্বলিত একটি বিশদ রিপোর্ট সরকারের জন্য তৈরি করছে। সরকারি সূত্রের খবর, ওই রিপোর্ট নিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সব কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা এজেন্সির সঙ্গে দু-একদিনের মধ্যে বৈঠক করবেন। ইডির রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পর অর্থ ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অফিসারেরা মনে করছেন, পিএফআইয়ের বিরুদ্ধে অভিযান আরও জোরদার করা দরকার।
আর এক কেন্দ্রীয় এজেন্সি জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা এনআইএ চার বছর আগে এই সংগঠনকে ইসলামিক জঙ্গি সংগঠন বলে ঘোষণা করে বেআইনি কার্যকলাপ প্রতিরোধ আইন—ইউএপিএ-র সংশ্লিস্ট ধারায় মামলা করেছিল। তারপর থেকে টানা তদন্ত শেষে ইডি জানিয়েছে, পশ্চিমবঙ্গ-সহ ১২ রাজ্যে পিএফআই অতিসক্রিয়। এই রাজ্যগুলিতে তাদের অফিস, পদাধিকারীরা ছাড়াও কয়েক হাজার সদস্য আছে।
পশ্চিমবঙ্গ বাদে বাকি রাজ্যগুলি হল, দিল্লি, কেরল, মহারাষ্ট্র, রাজস্থান, কর্নাটক, তেলেঙ্গানা, তামিলনাড়ু, বিহার, জম্মু-কাশ্নীর, মণিপুর ও অসম। এরমধ্যে কেরলে এই সংগঠন সবচেয়ে সক্রিয় বলে জানিয়েছে ইডি ও এনআইএ। কেরলের কোঝিকোড়ে পিএইআইয়ের অস্ত্র প্রশিক্ষণ শিবিরের সন্ধান মিলেছে।
ইডি জানিয়েছে, দেশে এবং দেশের বাইরে থেকে পিএফআই বিপুল অর্থ সংগ্রহ করেছে। সিঙ্গাপুর ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলি থেকে তাদের কাছে প্রতি মাসে হুন্ডি ব্যবস্থার মাধ্যমে বিদেশি অর্থ সাহায্য আছে। সিঙ্গাপুর ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলিতে তাদের প্রায় তেরো হাজার সদস্য আছে বলেও নানা তথ্য থেকে জানতে পেরেছে ইডি।
পিএফআইয়ের বিরুদ্ধে কেরল-সহ দক্ষিণের রাজ্যগুলি বহু বছর ধরেই সক্রিয়। ২০২০- থেকে ভারত সরকারের গোয়েন্দারা এই সংগঠনের কার্যকলাপের উপর নজর রাখতে শুরু করে। ২০২২-এ পাটনার গান্ধী ময়দানে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর জনসভায় তাঁকে হত্যার চেষ্টা করে পিএফআইয়ের জঙ্গিরা। বিহার পুলিশের তৎপরতায় সেই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয়।
পাটনার অদূরে বিহার শরিফের যে বাড়িতে বসে হত্যার ছক কষা হচ্ছিল সরাসরি সেখানে অভিযান চালায় বিহার পুলিশ। এরপর জাতীয় তদন্তকারী সংস্থা ইউএপিএ ধারার মামলা দায়ের করে লাগাতার অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে নিষিদ্ধ এই সংগঠনের বিরুদ্ধে। তাদের শীর্ষ নেতারা প্রায় সকলেই জেলে বন্দি। সংশ্লিষ্ট মামলায় ধৃতরা পিএফআই-কে একটি ইসলামিক আধ্যাত্মিক সংগঠন বলে দাবি করেছে। অন্যদিকে, গোয়েন্দাদের দাবি, ওই সংগঠনের মূল উদ্দেশ্য ভারতকে ইসলামিক রাষ্ট্র ঘোষণা।
ইডির রিপোর্ট বলছে, শীর্ষ নেতারা গ্রেফতার হলেও সংগঠন বেশ সক্রিয়। যে ১২ রাজ্যে পিএফআই শাখা খুলে সংগঠন চালাচ্ছে তার মধ্যে পশ্চিমঙ্গও আছে। ইডি জানিয়েছে, নাম গোপন করে চলছে সংগঠনের অফিস। বেআইনি অর্থ লেনদেনের একাধিক মামলার তদন্তে তারা জানতে পারে, বহু টাকা অজানা ভুয়ো অ্যাকাউন্টে জমা হয়েছে। তদন্তে দেখা গিয়েছে অ্যাকাউন্টের অর্থ পিএফআইয়ের জন্য খরচ করা হচ্ছে।