শেষ আপডেট: 12th November 2024 18:41
দ্য ওয়াল ব্যুরো: দেশের ৫০তম প্রধান বিচারপতি হিসেবে অবসর নিয়েছেন সিজেআই ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। ২০২২ সালের নভেম্বর মাস থেকে ২০২৪ সালের নভেম্বর, দু'বছর গুরুদায়িত্ব পালন করে গেলেন তিনি। তাঁর জায়গায় এবার প্রধান বিচারপতি হলেন সঞ্জীব খান্না। বিদায়ী ভাষণে বেশ আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন শীর্ষ আদালতের বিদায়ী প্রধান বিচারপতি। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন তাঁর পরিবারের সদস্যরাও।
ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের বাবা ছিলেন যশবন্ত বিষ্ণু চন্দ্রচূড়। দেশের ১৬তম প্রধান বিচারপতি ছিলেন তিনি। ১৯৭৮ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি থেকে ১৯৮৫ সালের ১১ জুলাই পর্যন্ত তিনি তাঁর দায়িত্ব পালন করে গিয়েছেন। তবে সদ্য বিদায়ী চন্দ্রচূড়ের বাবা প্রধান বিচারপতি থাকলেও, নিজের জীবনে কম ঝড়-ঝাপটা পোহাতে হয়নি সিজেআই চন্দ্রচূড়কে। তাঁর প্রথম স্ত্রী রশ্মি ক্যান্সারে আক্রান্ত হন। তারপরে ২০০৭ সালে মারা যান তিনি।
২০০৮ সালে আবার বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন তিনি। ৪৯ বছর বয়সে কল্পনা দাসকে বিয়ে করেন ডিওয়াই চন্দ্রচূড়। কল্পনাও আইনের পেশার সঙ্গে যুক্ত। সম্প্রতি সেই সাক্ষাৎকারে চন্দ্রচূড় বলেন, 'কল্পনা এবং আমি পরস্পরের ভাল বন্ধু। যখন ভেঙে পড়ি, তখন ওই আমাকে শক্তি জুগিয়ে যায়। কল্পনা যেভাবে সমাজ নিয়ে ভাবে, আমাকেও সেভাবেই ভাবতে শিখিয়েছে।'
তিনি আরও বলেন, 'কল্পনা এবং আমি সময় পেলেই বেরিয়ে পড়ি, প্রত্যন্ত এলাকায় পৌঁছে যাই কখনও কখনও। কল্পনার এমন অনেক কথা আছে, যা আমার প্রথমে পছন্দ হয় না। কিন্তু তারপরেই আমি বুঝতে পারি যে, ও ঠিক। হয়তো আমারই বুঝতে কোথাও সমস্যা হচ্ছিল। তাছাড়া আমরা দু'জনে খুব বেশি লোকের সঙ্গে মিশি না। ছুটির দিনগুলোতে বাড়িতেই কাটাতে পছন্দ করি।'
অনেকেই হয়তো জানেন না, দেশের সদ্যপ্রাক্তন প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের দত্তক নেওয়া দুই মেয়েই বিশেষভাবে সক্ষম। দাঁড়াতে পারেন না নিজেদের পায়ে। তাঁদের আর পাঁচটা সাধারণ বাবা-মায়ের মতোই বড় করেছেন বিচারপতি ও তাঁর স্ত্রী। এর পিছনে রয়েছে একটা অসম লড়াই।
সম্প্রতি নিজের মেয়েদের নিয়ে কথা বলেন বিচারপতি। সেই সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, 'দুই মেয়ে জীবনে আসার পর অনেক কিছু পাল্টে গিয়েছে। খবরের কাগজে যা পড়েন, চারপাশ থেকে যা কানে আসে, তার বাইরেও যে জীবন আছে, দুই মেয়ের থেকেই শিখেছি।' ছেলেদের সম্পর্কে বলতে গিয়ে তিনি জানান, দিল্লিতে সুপ্রিম কোর্টে প্র্যাকটিস করার কথা অনেক বার বলেছেন তিনি। কিন্তু তাঁরা রাজি হননি। বিশেষ করে বাবা প্রধান বিচারপতি থাকাকালীন, সুপ্রিম কোর্টে প্র্যাকটিস করতে আপত্তি তাঁদের।
সাক্ষাৎকারে, মায়ের কথা স্মরণ করে প্রধান বিচারপতি বলেন, 'আমি ছোট থেকেই অসুস্থ ছিলাম, আমার প্রায়ই অসুখ বিসুখ করত। যখন আমি অসুস্থ থাকতাম আমার মা রাতের পর রাত জেগেছেন। সে সময় মায়ের বলা বেশ কিছু কথা এখনও মনে রয়েছে। মা বলতেন ওষুধ গঙ্গার মত এবং ডাক্তার নারায়ণ। বড় হওয়ার সময় তিনি আমাকে বলেছিলেন, 'আমি তোমার নাম ধনঞ্জয় রেখেছি, কিন্তু মনে রাখবে 'ধন' শব্দের মানে কিন্তু সম্পদ নয়, আমি চাই তুমি আরও জ্ঞান অর্জন করো।'