শেষ আপডেট: 13th March 2025 16:17
দ্য ওয়াল ব্যুরো: গোমাতাদের (Cows) প্রতি প্রথম থেকেই একটু বেশি সংবেদনশীল বিজেপি (BJP)। ডবল ইঞ্জিন রাজ্যগুলিতে স্বাভাবিকভাবেই গোপালন নিয়ে গেরুয়া শিবিরের তরফে একাধিক ঘোষণা করা হয়েছে। সেই তালিকায় প্রথম সারিতেই রয়েছে মধ্যপ্রদেশের (Madhya Pradesh) নাম।
বুধবারই রাজ্য বাজেটে অর্থমন্ত্রী জগদীশ দেবদা ঘোষণা করেছেন, গোশালায় গরুদের দেখভালের জন্য দৈনিক অনুদান ( Daily Allowance) ২০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৪০ টাকা করা হয়েছে। স্বাভাবিকভাবেই এক লাফে টাকা দ্বিগুণ হলেও এর পিছনের অঙ্ক যে ঠিক কী তা একটু খুঁটিয়ে না দেখলে বোঝা মুশকিল। গরু ও গোপালনের জন্য মোহন যাদব সরকারের আসল রহস্য সামনে আনলেন সে রাজ্যের গোশালার কর্মী গৌরী।
গৌরী জানিয়েছেন, এ বিষয়ে তাঁর ঝুলিতে বড়সড় কিছু খবর রেয়েছে। যারা মূলত এই কাজের সঙ্গে যুক্ত অর্থাৎ গোপালন করেই যাঁদের পেট চলে তাঁদের ভাতা একলাফে দ্বিগুণ হলেও এমন পদক্ষেপকে একেবারেই সোজা চোখে দেখছেন না তিনি। জানিয়েছেন, রাজ্য সরকার শেষমেশ গরুদের দৈনিক খরচ দ্বিগুণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন একথা সত্যি। আমাদের প্রতিদিন যেখানে প্রতিটি গরু দেখভালের জন্য ২০ টাকা করে দেওয়া হত এখন তা ৪০ টাকা হয়ে গেছে।
কিন্তু অঙ্ক বাড়লেও কবে সেই টাকা তাঁদের হাতে এসে পৌঁছবে তা নিয়ে চিন্তা বেড়েই চলেছে গোশালার কর্মীদের। গৌরীর অভিযোগ, টাকার অঙ্ক বাড়লেও বর্তমানে গরুর খাবারের দামই ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা। এরপরই তাঁর অভিযোগ, মাসের পর মাস কাজ করলেও টাকা আসে না। ২-৩ মাস পর পর টাকা হাতে আসে। গত ডিসেম্বরের টাকা মার্চ মাসেই এসেছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
গৌরীর অভিযোগ, এখানে গরুকে ভোটের প্রচারে প্রধান অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করা হলেও তাঁদের দিকে একেবারেই লক্ষ্য নেই সরকারের। গত বিধানসভা ভোটের আগে, বিজেপি এবং কংগ্রেস দু'দলই বড় বড় প্রতিশ্রুতি দিলেও ভোট মিটতেই তা মরীচিকা হয়ে গিয়েছে বলে অভিযোগ। কংগ্রেস কৃষকদের কাছ থেকে গোবর কেনার এবং বিজেপি কৃষিকাজ ও স্বাস্থ্য পরিষেবা আরও উন্নত করার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা আর বাস্তবায়িত হয়নি।
এরপরই তিনি মনে করিয়ে দেন, মধ্যপ্রদেশ জুড়ে প্রায় ২২০০ গোশালায় ৩ লাখ ৪৫ হাজারের বেশি গরু বসবাস করে। সরকার গরু সংরক্ষণ ও পশু সুরক্ষা প্রকল্পের অধীনে ৫০৫ কোটি টাকা বরাদ্দ করে একেবারে স্বয়ংসম্পূর্ণ গোশালা প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করলেও আসলে কী বিষয়টা সত্যিই তাই? প্রশ্ন তুলেছেন মহিলা কর্মী।
তিনি সাফ জানান, কংগ্রেস আমাদের দৈনিক ভাতা ৪০ টাকা করার প্রতিশ্রুতি দিলেও তা রাখতে পারেনি। অবশেষে সেই স্বপ্ন সত্যি হলেও সময়মতো টাকা মিলবে কী না এখন সেটাই সবচেয়ে বড় প্রশ্ন। গৌরী জানান, প্রতিদিন ৪০ টাকাও আমাদের খাবারের জন্য যথেষ্ট নয়। যেখানে আমরা একটা গোশালায় ১৪০ জন থাকি। সেখানে প্রতিদিন তাঁদের ২০ টাকাও দেয় না বলে অভিযোগ। সেখানে প্রতিদিন ৪০ টাকায় গরুকে কীভাবে খাবার দেওয়া সম্ভব তা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছেন তিনি।
শুধু খাবার নয় পানীয় ও শরীর খারাপ হলে গরুদের চিকিৎসা ওই পয়সার মধ্যেই করাতে হবে। গৌরীর আরও অভিযোগ, বেশিরভাগ সময় গোশালার দায়িত্বে থাকা কেয়ারটেকাররা ভরণপোষণের জন্য নিজেদের পেনশনের টাকা খরচ করেন বলে অভিযোগ। একটি গরু পালন করতে প্রতি মাসে ১০ হাজার টাকার খাবার লাগে। কিন্তু হাতে টাকা আসতেই যদি ৬-৭ মাস দেরি হয় তাহলে কেমন অবস্থা ভাবুন।
মহিলা কর্মী আরও জানিয়েছেন, রাজ্যে ৬১৮টি বেসরকারি গোশালা রয়েছে, যেখানে প্রায় ১.৫ লক্ষ গরু বসবাস করে এবং ১,৮০০টি সরকারি গোশালা রয়েছে যেখানে ২.৮ লক্ষ গরুকে লালনপালন করা হয়।