আমেরিকার এই নয়া শুল্কনীতি ভারতের উপর চালু হলে দেশীয় রফতানি বাণিজ্য মার খেতে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা।
শেষ আপডেট: 7th March 2025 12:19
দ্য ওয়াল ব্যুরো: মার্কিন কংগ্রেসের ভাষণের পরেও ফের একবার ভারতের চড়া হারে শুল্কনীতি নিয়ে অসন্তোষের কথা শোনা গেল প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের মুখে। আগামী ২ এপ্রিল থেকে কানাডা, মেক্সিকো ও চিন সহ বেশ কিছু দেশের উপর অতিরিক্ত আমদানি শুল্ক চাপাতে চলেছে আমেরিকা। তার মধ্যে ভারতও রয়েছে। বুধবারের কংগ্রেস ভাষণের পর বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্টের কার্যালয় ওভাল অফিস থেকে ট্রাম্প সরকারি নির্দেশে সই করার সময় ভারতকে অত্যন্ত চড়া হারে শুল্ক চাপানো দেশ বলে ব্যাখ্যা করেন। ফের একবার যেসব আমেরিকায় রফতানি শুল্ক অতিরিক্ত হারে নেয়, তাদের উপর পাল্টা শুল্ক চাপবেই বলে জানিয়ে দেন।
আমেরিকার এই নয়া শুল্কনীতি ভারতের উপর চালু হলে দেশীয় রফতানি বাণিজ্য মার খেতে পারে বলে বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা। সে সম্পর্কে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন জানান, আমেরিকা যে শুল্কবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তাতে দেশের উপর সরাসরি প্রভাব পড়বে। কিন্তু, দেশের বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল বর্তমানে এই বিষয়টি নিয়ে ট্রাম্প প্রশাসনের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছেন বলে আশ্বস্ত করেন নির্মলা। বিশাখাপত্তনমে একটি বাজেট-পরবর্তী অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী বলেন, রফতানি বাণিজ্যের ভবিষ্যৎ সুরক্ষায় ভারত আমেরিকার সঙ্গে আলাপ-আলোচনা চালাচ্ছে।
নির্মলা আরও বলেন, চলতি আলোচনার পরেই ভারত তার সিদ্ধান্ত নেবে। বাণিজ্যমন্ত্রী ইতিমধ্যেই আমেরিকা গিয়েছেন ট্রাম্প প্রশাসনকে বোঝাতে। একটা সমাধানসূত্র বের করতে চাই আমরা। মার্কিন প্রশাসন ছাড়াও যুক্তরাষ্ট্রের বণিক মহলের সঙ্গেও কথা বলবেন গোয়েল, জানান সীতারামন। এখন আমরা অপেক্ষায় আছি যে, কীভাবে বাণিজ্যমন্ত্রী বিষয়টির নিষ্পত্তি করতে পারেন। আমরা চাই দেশের স্বার্থ সুরক্ষিত রেখে আপস-আলোচনা চালাতে।
ওভাল অফিসে ট্রাম্প বলেন, ২ এপ্রিল থেকে বিরাট কিছু অপেক্ষা করছে। ভারত সত্যিই এক বিশাল শুল্কনীতির দেশ আমাদের কাছে। এই অবস্থায় বাণিজ্যমন্ত্রী পীযূষ গোয়েল ওয়াশিংটনের দরজায় দরজায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন শুল্ক সমঝোতার কারণে। সেখানে তিনি মার্কিন বাণিজ্য মন্ত্রী হাওয়ার্ড লুতনিকের সঙ্গে সরাসরি কথা বলবেন। উল্লেখ্য, অন্যান্য দেশের তুলনায় ভারতবন্ধু ট্রাম্প যে এদেশের শুল্কনীতি নিয়ে যথেষ্ট অসন্তুষ্ট তা বোঝা যাচ্ছে পরপর দুদিন নয়াদিল্লির নামোচ্চারণ করায়।
তবে কানাডা ও মেক্সিকোর সঙ্গে আলোচনাসাপেক্ষে আমেরিকা এই দুই দেশের উপর ২৫ শতাংশ অতিরিক্ত হারে শুল্ক চাপানোর সিদ্ধান্ত সাময়িক পিছিয়ে দিয়েছেন। যদিও জানিয়ে দেন, বিরাট কিছু অপেক্ষা করছে ২ এপ্রিল থেকে। তার মধ্যে ভারতও রয়েছে। অনেকের ধারণা, আন্তর্জাতিক শেয়ার বাজারে টালমাটাল পরিস্থিতির কারণে ট্রাম্প এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। কিন্তু সেকথাও বৃহস্পতিবার উড়িয়ে দেন প্রেসিডেন্ট।
মার্কিন প্রেসিডেন্টের শুল্কবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত মাসখানেক পিছিয়ে যাওয়ায় কানাডা সরকারও মার্কিন পণ্যে ২৫ শতাংশ শুল্কবৃদ্ধির সিদ্ধান্ত আপাতত স্থগিত রেখেছে। কানাডার দুই শীর্ষস্থানীয় মন্ত্রী জানান, আমেরিকার উপর শুল্কবৃদ্ধির প্রথম ঢেউ যেমন চলছিল তেমন চলবে। তবে দ্বিতীয় ঢেউ এখনকার মতো স্থগিত রাখা হচ্ছে।